'...মানুষ আর হাত মেলাবে না'

টাটেন্ডা টাইবুর পরিবার। ছবি: টাইবুর টুইটার পেজ
টাটেন্ডা টাইবুর পরিবার। ছবি: টাইবুর টুইটার পেজ

‘করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রথম জানার পর স্ত্রী লাভনেসকে বলেছিলাম “কেন জানি মনে হচ্ছে এটা মারাত্মক হতে যাচ্ছে। তবে আমি ভয় পাচ্ছি না।” স্ত্রী বলল “প্রিয়, এসবে সাধারণত কেউ সংক্রমিত হয় না। তাহলে এটা নিয়ে ভাবছ কেন?” বললাম “ঠিক বলতে পারব না। সৃষ্টিকর্তা জানেন।” বাচ্চাদের স্কুল বন্ধ হওয়ার পর বিষয়টি আর স্বাভাবিক থাকেনি। এরপর চীন থেকে খবর এল, অন্যান্য দেশেও সংক্রমণ শুরু হলো। দিন দিন অবস্থা শুধুই খারাপ হচ্ছে।’

কথাগুলো টাটেন্ডা টাইবুর। লিখেছেন ভারতীয় সংবাদমাধ্যম 'হিন্দুস্থান টাইমস'-এ। সেই টাইবু, ২০০৪ সালে সর্বকনিষ্ঠ টেস্ট অধিনায়ক হওয়ার রেকর্ড গড়েছিলেন যিনি। তিনি সেই টাইবু, বাংলাদেশের মাটিতে যাঁর রয়েছে এন্তার স্মৃতি। জিম্বাবুয়ের সাবেক এ অধিনায়ক বর্তমানে পরিবার নিয়ে বাস করছেন ইংল্যান্ডের লিভারপুলে। সেখান থেকেই এই করোনা-কাল ও নিজের জীবন নিয়ে কলম ধরলেন সাবেক এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান।

টাইবু লিখেছেন, ‘আমার এলাকায় অনেকে ভীষণ দুশ্চিন্তাগ্রস্ত। মানুষ দূরত্ব বজায় রাখছে; কথা বললে শুধু ফোনে কিংবা বাড়ির বেড়ার ওপাশ থেকে। আমার মনে হয় এটা দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলবে পরেও। মানুষ একে-অপরের সঙ্গে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখবে। কারণ মানুষ মাত্রই অভ্যাসের দাস। এই অবস্থা দীর্ঘদিন চললে মানুষ হয়তো আর হাত মেলাবে না। আশা করি তেমন কিছু যেন না ঘটে।’

বাড়ির বাগানের মাঠে ছেলের সঙ্গে অনুশীলনে টাইবু। ছবি: টাইবুর টুইটার পেজ
বাড়ির বাগানের মাঠে ছেলের সঙ্গে অনুশীলনে টাইবু। ছবি: টাইবুর টুইটার পেজ

নিজের পরিবার নিয়ে টাইবু লিখেছেন, ‘বড় ছেলেকে সব সময় কোচিং করিয়ে এসেছি। ক্রিকেট নিয়ে ওর আগ্রহটা একটু বেশি। কিন্তু এখন ছোটটাও আগ্রহী। বাড়ির বাগানের মাঠে ওদের সঙ্গে তিন থেকে পাঁচ ঘণ্টা করে অনুশীলন করি। ছোট থাকতে জিম্বাবুয়েতে যেসব খেলা খেলেছি সেগুলোর সঙ্গেও পরিচয় করিয়ে দিচ্ছি। আমাদের সময়ে টিভির দৌরাত্ম্য এতটা ছিল না। নিজেদেরই বিভিন্ন খেলা বের করতে হতো। এই অভিজ্ঞতা থেকেই সেদিন বাচ্চাদের লাফানোর সরঞ্জাম (ট্র্যাম্পোলিন) কেটে নেট অনুশীলনের জাল বানিয়েছি। ছেলেরা বুঝতে পারছে আমি কীভাবে বড় হয়েছি—শুধু কথায় নয় কাজও ছিল।’

দুই ছেলেকে ক্রিকেট শেখাতে এখন সময় কাটে টাইবুর। ছবি: টাইবুর টুইটার পেজ
দুই ছেলেকে ক্রিকেট শেখাতে এখন সময় কাটে টাইবুর। ছবি: টাইবুর টুইটার পেজ

টাইবু সবার উদ্দেশে লিখেছেন, ‘সবাইকে বলছি ঘরের এই সময়টা কাজে লাগান। স্ত্রীর সঙ্গে এগিয়ে চলার ধারাটা বজায় রাখুন। বিরক্ত লাগার কোনো সুযোগ নেই। পেশাদার জীবনে যাঁরা ব্যস্ত থাকেন তাদের এই সময়টা পরিবারের সঙ্গে উপভোগ করা উচিত।’