আলজেরিয়ার পাশে দাঁড়ালেন জিদান

চিকিৎসা সরঞ্জাম দান করলেন জিদান। ছবি: টুইটার
চিকিৎসা সরঞ্জাম দান করলেন জিদান। ছবি: টুইটার
>

করোনাভাইরাসের প্রকোপ থেকে মানুষকে বাঁচানোর জন্য যে যেভাবে পারছেন, এগিয়ে আসছে। পিছিয়ে রইলেন না রিয়াল মাদ্রিদের ফরাসি কোচ ও সাবেক কিংবদন্তি খেলোয়াড় জিনেদিন জিদানও

জন্মেছেন ফ্রান্সে, খেলেছেনও ফরাসিদের হয়ে। কিন্তু আলজেরিয়ার প্রতি জিনেদিন জিদানের একটা আলাদা টান সব সময় কাজ করে। তাঁর বাবা-মা'ই যে আলজেরিয়ার!

বাবা ইসমায়েল ও মা মালিকা ছিলেন আলজেরিয়ার কাবিল বংশোদ্ভূত। দেশটির উত্তরাংশের আগেমুনে নামক গ্রাম থেকে ১৯৫৩ সালেই ফ্রান্সের প্যারিসে চলে আসেন এই দম্পতি, আলজেরিয়া যুদ্ধের ঠিক আগে আগে। জিদানের জন্ম মার্শেইয়ে। কিন্তু তা সত্ত্বেও, বাবা-মায়ের দেশের প্রতি একটা টান তাঁর ছিলই। এমনকি চাইলে আলজেরিয়ার হয়েও খেলতে পারতেন। সেটা করেননি যদিও।

এবার সেই আলজেরিয়ার পাশেই দাঁড়ালেন জিদান। করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য আলজেরিয়ার বেয়াইয়া নামক অঞ্চলের এক হাসপাতালকে জিনেদিন জিদানের দাতব্য সংস্থা প্রয়োজনীয় কিট, ভেন্টিলেটর, মনিটর ও অন্যান্য চিকিৎসাসামগ্রী দান করেছে। এই অঞ্চল থেকেই উঠে এসেছিল জিদানের পরিবার।

করোনাভাইরাসের কারণে অন্যান্য অনেক দেশের মতো আলজেরিয়ার অবস্থাও বেশ খারাপ। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত দেশটিতে প্রায় এক হাজার ৭০০ জন মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন এই প্রাণঘাতী ভাইরাসে, মারা গেছেন দুই শতাধিক মানুষ।

কিছুদিন আগে করোনায় আক্রান্ত মানুষদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন আরও দুই কিংবদন্তি কোচ—ম্যানচেস্টার সিটির পেপ গার্দিওলা ও টটেনহাম হটস্পারের হোসে মরিনহো। নিজের দেশ স্পেনে করোনাভাইরাসের প্রকোপ যেন বৃদ্ধি না পায়, সে জন্য একাই প্রায় সাড়ে নয় কোটি টাকা দান করেছেন ম্যানচেস্টার সিটির কোচ পেপ গার্দিওলা। অর্থাৎ এক মিলিয়ন ইউরো। বার্সেলোনার অধিবাসী এই কোচ বেশ কয়েক দিন ধরে নিজের আইনজীবীদের সঙ্গে আলোচনা করছিলেন, কীভাবে এই টাকার সদ্ব্যবহার করা যায় সেটা নিয়ে। পরে সিদ্ধান্ত হয়েছে, করোনা-প্রতিরোধে বার্সেলোনার মেডিকেল কলেজ ও অ্যানহেল সোলার দানিয়েল ফাউন্ডেশন কর্তৃক চলতে থাকা ক্যাম্পেইনে এই টাকা দান করা হবে।

স্পেনের যেসব অঞ্চলে করোনা বেশি আঘাত হেনেছে, তার মধ্যে গার্দিওলার কাতালান রাজ্য অন্যতম। মাস্ক, মেডিকেল গাউন সহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি কেনার কাজে ব্যয় করা হবে গার্দিওলার অর্থ। ওদিকে এখন উত্তর লন্ডনের ক্লাব টটেনহাম হটস্পারের দায়িত্বে থাকা কোচ হোসে মরিনহো করোনাভাইরাস সংকটে ওই এলাকায় ঘরে আটকে থাকা প্রবীণ বাসিন্দাদের সহায়তায় স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করেছেন।

টটেনহামের অনুশীলন মাঠের কাছে ‘এজ ইউকে’ ও ‘লাভ ইয়োর ডোরস্টেপ’ নামে দুটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এলাকার প্রবীণ বাসিন্দাদের সহায়তার জন্য কাজ করছে। তাদের হয়ে খাবার পার্সেল ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় রসদ প্রস্তুতের কাজে সহায়তা করেছেন ইন্টার ও পোর্তোর হয়ে দুবার চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতা এই কোচ।

রিয়াল মাদ্রিদের সাবেক এই কোচকে ধন্যবাদ জানিয়ে নিজেদের টুইটার পেজে একটি ভিডিও পোস্ট করে ‘লাভ ইয়োর ডোরস্টেপ’ সংগঠনটি। স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে এগিয়ে আসার কারণ জানান মরিনহো, ‘আমি এখানে এসেছি এজ ইউকে অ্যানফিল্ড ও লাভ ইয়োর ডোরস্টেপ অ্যানফিল্ডকে সাহায্য করতে। অবশ্যই আপনিও খাদ্য, অর্থ দিয়ে অথবা স্বেচ্ছাসেবী হয়ে সহায়তা করতে পাড়েন।’