দুঃস্বপ্নের সে ম্যাচের সঙ্গে করোনার সম্পর্ক খুঁজছে লিভারপুল

লিভারপুলকে সেদিন হতাশা উপহার দিয়েছিল অ্যাটলেটিকো। ছবি: উয়েফাডটকম
লিভারপুলকে সেদিন হতাশা উপহার দিয়েছিল অ্যাটলেটিকো। ছবি: উয়েফাডটকম
>চ্যাম্পিয়নস লিগের শেষ ষোলোর দ্বিতীয় লেগের ম্যাচটিতে লিভারপুলের মাঠে এসেছিলেন অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের দর্শকেরা। সেই ম্যাচ থেকে করোনা লিভারপুল শহরে ছড়িয়েছে কি না, তা তদন্তের দাবি উঠেছে

ম্যাচটা নিয়ে বিতর্ক তখনই হয়েছিল। লিভারপুলের সাবেক অনেক খেলোয়াড়ও প্রশ্ন তুলেছিলেন মাদ্রিদ থেকে আসা দর্শকদের লিভারপুলে ঢুকতে দেওয়া নিয়ে। প্রশ্ন তুলেছিলেন লিভারপুল সমর্থকেরাও। কিন্তু তখন ম্যাচটা দর্শকপূর্ণ স্টেডিয়ামেই আয়োজনে নিষেধ করেনি প্রশাসন। অ্যানফিল্ডে ৫৬ হাজার দর্শকের মধ্যে ছিলেন৩ হাজার অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের সমর্থক। যে মাদ্রিদ ততদিনে করোনাভাইরাসে জর্জরিত।

এরপর তো করোনাভাইরাস লিভারপুলসহ পুরো ইংল্যান্ডকেই গ্রাস করেছে। এতদিন পর এসে এখন আবার ১১ মার্চ অ্যানফিল্ডে হওয়া চ্যাম্পিয়নস লিগের সেই ম্যাচ আলোচনায়। লিভারপুলের মাঠে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে শেষ ষোলোর দ্বিতীয় লেগের সেই ম্যাচের কারণেই করোনা লিভারপুল শহরে ছড়িয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে তদন্তের ডাক দিয়েছেন লিভারপুলের মেট্রো মেয়র স্টিভ রদারহাম।

লিভারপুল ক্লাবের জন্য দুঃস্বপ্নই হয়ে আছে ম্যাচটা। অ্যাটলেটিকোর মাঠে প্রথম লেগে ১-০ গোলে হেরে আসা লিভারপুল নিজেদের মাঠে দারুণ খেলেও অতিরিক্ত সময়ের শেষ ১৫ মিনিটে দুই গোল খেয়ে হেরে যায় ৩-২ ব্যবধানে। দুই লেগ মিলিয়ে ৪-২ গোলের হারটা এবার শেষ ষোলোতেই লিখে দেয় গত মৌসুমের ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নদের বিদায়।

ওই ম্যাচের আগেই স্পেনে ততদিনে সব ফুটবল ম্যাচ হচ্ছিল দর্শকশূন্য স্টেডিয়ামে। অথচ বিশ্লেষকদের পরামর্শ না মেনেই অ্যানফিল্ডের ম্যাচটাতে মাদ্রিদের দর্শকদের আসতে দেওয়া হয়েছিল। সে ম্যাচের পর লিভারপুলে করোনার প্রকোপ অনেক বেড়েছে।

সেটি আসলেই ওই ম্যাচে দর্শক ঢুকতে দেওয়ার কারণে হয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে বলছে লিভারপুলের মেট্রো মেয়র রদারহাম। চীনা টিভি চিজিটিনে রদারহাম বলেছেন, 'যে খেলাটা হওয়াই উচিত ছিল না, এমন একটা খেলায় দর্শক হিসেবে যাওয়ার সঙ্গে যদি মানুষের করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার সরাসরি সম্পর্ক থাকে, তাহলে সেটা খুবই বাজে ব্যাপার হবে।'

ওই ম্যাচে আসা অ্যাটলেটিকো দর্শকদের মাধ্যমেই করোনা ব্যাপক হারে ছড়িয়েছে কি না, তা তদন্তের ডাক দিয়েছেন রদারহাম, 'আক্রান্ত এত মানুষের মধ্যে অনেকেই অ্যাটলেটিকো ভক্তদের মাধ্যমে আক্রান্ত হয়েছেন কি না, সেটির তদন্ত হওয়া উচিত। ওই সময়ে অনেক শহরেই করোনাভাইরাস ঘাঁটি গেড়ে বসেছিল, মাদ্রিদ ছিল সেগুলোর একটি।'

দর্শকদের আসতে দেওয়া ভুল ছিল বলেও মনে হচ্ছে রদারহামের, 'দেশেই (স্পেনে) তখন তাঁদের এক জায়গায় জড়ো হতে দেওয়া হতো না। কিন্তু সেখান থেকে তিন হাজার দর্শক আমাদের দেশে এসেছেন। হয়তো তাঁদের মাধ্যমেই করোনাভাইরাস ছড়িয়েছে। তাই এটা আসলেই খতিয়ে দেখার দরকার আছে। আরও আগেই সব লকডাউন না করার দায় সরকারের ওপরও পড়ে।'

যুক্তরাজ্য সরকার এর আগে দাবি করেছিল, স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্ট মানুষের পরামর্শ মেনেই তাঁরা ম্যাচটিতে দর্শক ঢোকার অনুমতি দিয়েছিলেন। একই সপ্তাহে আরেকটি খেলায়ও জনসমাগমের অনুমতি দিয়েছিল যুক্তরাজ্য সরকার-চেলটেনহাম ঘোড়দৌড় উৎসব।

এর আগে ২০ ফেব্রুয়ারি ইতালিতে আতালান্তার সঙ্গে স্পেনের ক্লাব ভ্যালেন্সিয়ার ম্যাচ থেকে করোনা ছড়িয়েছে বলে সংশয় জানিয়েছেন ইতালির এক গবেষক। আতালান্তা যে শহরে, সেই বেরগোমি ইতালিতে করোনায় সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত শহরগুলোর একটি।