ইংলিশ তরুণদের নিয়ে আর আশার বেলুন ফোলানো নয়

সাঞ্চোতে মজেছে ইংলিশ সমর্থকেরা। ছবি: জাডন সাঞ্চো টুইটার
সাঞ্চোতে মজেছে ইংলিশ সমর্থকেরা। ছবি: জাডন সাঞ্চো টুইটার

ইংলিশ কোনো প্রতিভার দেখা মিললেই শুরু হয়ে যায় উচ্চবাচ্য, বাগাড়ম্বর। এবার সোনালি প্রজন্ম এসে গেছে ইংল্যান্ডের। এবারই বিশ্বকাপ ফুটবল, ইউরো এসে ধরা দেবে ইংল্যান্ডের কাছে। সে আশার বেলুন চুপসে যেতেও অবশ্য খুব বেশি সময় লাগে না তাঁদের। অতীত থেকেই তাই শিক্ষা নিচ্ছেন গ্যারি নেভিল। তাই হয়তো গত এক দশকের সেরা প্রতিভাকে পেয়েও খুব একটা আশা দেখাচ্ছেন না এখনো।

মাত্র ১৭ বছর বয়সে ইংল্যান্ড ছেড়ে জার্মানিতে গিয়েছিলেন জাডন সাঞ্চো। ম্যানচেস্টার সিটির একাডেমিতে পড়ে থাকার চেয়ে অন্য লিগে পেশাদার ফুটবলের শীর্ষ পর্যায়ে খেলাটাই গুরুত্ব পেয়েছিল তাঁর কাছে। ফলাফল, মাত্র তিন বছরের মাথায় সাঞ্চোকে নিয়ে টানাটানি পড়ে গিয়েছে। মাত্র ৮ মিলিয়ন ইউরোতে যাকে কিনে এনেছে ডর্টমুন্ড, সেই সাঞ্চোকে এখন ১০০ মিলিয়ন ইউরোতেও নিতে বসে আছে অনেক দল। তবে ঐতিহ্য ও ক্লাবের আর্থিক শক্তি বিবেচনায় সবচেয়ে এগিয়ে আছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। এরই মাঝে তাঁকে নিয়ে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে ইউনাইটেড সমর্থকেরা। ক্লাবের দুর্দশা কাটিয়ে ওঠার উপায় হিসেবে ভেবে নিচ্ছে বিশ পেরোনো এই উইঙ্গারকে। কিন্তু নেভিল এখনই সে দলে যোগ দিচ্ছেন না।

স্কাই স্পোর্টসকে অতীত থেকে শিক্ষা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন সাবেক ইউনাইটেড তারকা, 'সত্যি বলি, জাডন সাঞ্চোকে নিয়ে এখন যা হচ্ছে… আমরা বাড়াবাড়ি করছি। আমার ধারণা আমাদের বেশ কিছু দারুণ তরুণ প্রতিভা আছে। কিন্তু আমাদের এটাও মাথায় রাখতে হবে অন্য খেলোয়াড়ও পৃথিবীতে আছে। ব্রাজিলিয়ান খেলোয়াড়, আর্জেন্টাইন খেলোয়াড়। জার্মানির আছে, বেলজিয়ামের আছে-বিশ্বে আমরাই একমাত্র দেশ নই।'

বরাবরই ইংলিশ প্রতিভা নিয়ে মাতামাতি করার অভ্যাস দেশটির। এর আগে মাইকেল ওয়েন, ডেভিড বেকহাম, ওয়েইন রুনি বা হ্যারি কেনকে নিয়ে মাতামাতি হয়েছে। পরে তেমন কিছু না করতে পারলেও শুরুতে মাতামাতি কম ছিল না থিও ওয়ালকট, ডেভিড বেন্টলি, টম ক্লেভারলি, ফ্র্যান্সিস জেফার্স - এদের নিয়েও। কিন্তু ৫৪ বছর ধরে কোনো ট্রফিই জেতেনি তারা।

২০০৬ বিশ্বকাপেও প্রচুর মাতামাতি হয়েছিল ইংল্যান্ড দল নিয়ে। সে কথাটা আবার মনে করিয়ে দিলেন নেভিল, 'এটা সব সময় হয়েছে। ইংলিশ খেলোয়াড় বা কোচদের নিয়ে। আমরা সব সময় বলি, “সোনালি প্রজন্ম এসেছে”। আপনি যখন সোনালি প্রজন্ম বলেন এবং সেখানে বেকস (বেকহাম), স্টিভি (জেরার্ড)' ফ্র্যাঙ্ক (ল্যাম্পার্ড) ও (ওয়েইন) রুনি আছে। কিন্তু তখন ব্রাজিলেরও ছিল রিভালদো, রোনালদিনহো এবং রোনালদো। ওদের আপনি কী বলবেন… প্লাটিনাম?'

২০১৭ সালের অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপজয়ী ইংল্যান্ড দলের প্রজন্মকে নিয়ে আশাবাদী সবাই। সাঞ্চো ছাড়াও এ দলে ছিলেন ফিল ফডেন, কালাম হাডসন-ওডোই ও রায়ান ব্রুস্টারের মতো প্রতিভাবান খেলোয়াড়। এ ছাড়া ইংল্যান্ড জাতীয় দলের তরুণ জেসন মাউন্ট, জ্যাক গ্রেলিশ, আলেক্সাজান্ডার আরনল্ড কিংবা রাহিম স্টারলিংদের ঘিরে আশার বেলুন আবারও চড়ছে।

নেভিল আগেভাগেই সবাইকে সাবধান করে দিলেন, 'আপনারা বলতে পছন্দ করেন আমাদের সোনালি প্রজন্ম এসেছে কিন্তু ভিলে যান অন্য দেশেরও বিশ্বমানের তারকা আছে, এক মুহূর্তের জন্য ভাবুন, আর্জেন্টিনার আগুয়েরো, হিগুয়েইন, মেসি , ডি মারিয়া আছে। তারা জাডন সাঞ্চোর তুলনায় কত ভালো? জাডন এঁদের ধারে কাছেও নেই। পরিষ্কার বলি, জাডন প্রতিভাবান। কিন্তু তাকে আমরা বিশ্বের সেরা তারকাদের সঙ্গে তুলনা করতে পারি না, যারা নিয়মিত ইউরো বা বিশ্বকাপ জিতছে। প্রতি মৌসুমেই কিছু না কিছু জয় করছে।'