করোনা-জটে বয়সভিত্তিক ক্রিকেট

২০২০ যুব বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ। করোনার কারণে থেমে গেছে ২০২২ যুব বিশ্বকাপের দল গঠন। ফাইল ছবি।
২০২০ যুব বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ। করোনার কারণে থেমে গেছে ২০২২ যুব বিশ্বকাপের দল গঠন। ফাইল ছবি।

করোনার সংক্রমণের কারণে শিক্ষাবর্ষের পাঁচ-ছয় মাস কিংবা তারও বেশি সময় যদি হারিয়ে যায়, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজার হাজার শিক্ষার্থীর এবার সেশনজটে পড়াটাই বোধ হয় নিয়তি। এমন 'জটে' পড়ার আশঙ্কা আছে দেশের বয়সভিত্তিক ক্রিকেটারদেরও।

আকবরদের হাত ধরে ২০২০ অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জেতার পর বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরবর্তী লক্ষ্য, ওয়েস্ট ইন্ডিজে ২০২২ যুব বিশ্বকাপে সাফল্যটা ধরে রাখা। সে জন্য দলটাও ভালো হওয়া চাই। প্রতিবার যুব দল গঠনের কাজটা সাধারণত এপ্রিল-মে মাসের মধ্যেই শেষ হয়ে যায়। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে এবার সেটিও হতে পারছে না।

বিসিবির তিনটি বয়সভিত্তিক দলের কোনোটিই এখন পর্যন্ত গঠন হয়নি। অনূর্ধ্ব-১৯ দল গঠনের প্রক্রিয়া প্রায় শেষ দিকে ছিল। জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে বাছাইও হয়ে গিয়েছিল। ফেব্রুয়ারিতে যুব ক্রিকেট লিগে (ওয়াইসিএল) বড় দৈর্ঘ্যের টুর্নামেন্ট শেষ হয়। বাদ ছিল এক দিনের সংস্করণ। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সংক্ষিপ্ত সময়ের মধ্যে নকআউট ভিত্তিতে লিগটা শেষ করার চিন্তা বিসিবির গেম ডেভেলপমেন্ট বিভাগের।

করোনায় সব থেমে যাওয়ার আগে অনূর্ধ্ব-১৫ দলের বাছাইয়ের প্রায় সব টুর্নামেন্ট শেষ হয়ে গিয়েছিল। বাছাইয়ের শেষ ধাপ হিসেবে বাকি ছিল শুধু চ্যালেঞ্জ সিরিজ। অনূর্ধ্ব-১৭ দল গঠনের কাজ অবশ্য এখনো অনেকটাই বাকি। এই দল গঠনে অনূর্ধ্ব-১৬ বিভাগীয় ও জেলাভিত্তিক বাছাই-ই শেষ হয়নি এখনো। মাঝপথে আটকে আছে স্কুল ক্রিকেটও।

 অনূর্ধ্ব-১৪, ১৬, ১৮ ও স্কুল ক্রিকেট শেষেই সাধারণত জাতীয় অনূর্ধ্ব-১৫, ১৭ ও ১৯ দল গঠন করে বিসিবি। অনুশীলন ক্যাম্প শুরু হয় জুলাইয়ে। বয়সভিত্তিক ক্রিকেটের নতুন মৌসুম জুলাইয়ে শুরু হয়ে শেষ হয় পরের জুনে। তবে এসব প্রক্রিয়া যে এবার সময়মতো শেষ হচ্ছে না, বর্তমান পরিস্থিতিই তা বলে দিচ্ছে।

অবশ্য স্থগিত হয়ে যাওয়া বাছাইপ্রক্রিয়া শেষ করতে বিসিবি বিকল্প উপায় ভেবে রেখেছে বলে জানালেন গেম ডেভেলপমেন্ট বিভাগের ব্যবস্থাপক আবু ইমাম মোহাম্মদ কাওসার, 'বাছাই পর্যায়ে যত বেশি খেলার সুযোগ করে দেওয়া যায়, তত বেশি প্রতিভাবান ক্রিকেটার পাওয়া যায়। এখন পরিস্থিতি বাধ্য করছে কাজটা সংক্ষেপে করতে। পরিস্থিতি ভালো হলে সংক্ষিপ্ত সময়ে দ্রুত বাছাই শেষ করার চিন্তা করছি আমরা। করোনার কারণে এরই মধ্যে বড় ধাক্কা খেয়েছি। তবে খেলোয়াড় তুলে নিয়ে আসার যে প্রক্রিয়া, সেটি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়নি।'

পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে নতুন মৌসুম জুলাইয়ের জায়গায় হয়তো আগস্ট-সেপ্টেম্বর কিংবা তারও পরে শুরু হতে পারে। সে না হয় শুরু হলো। তবে সময়মতো বাছাই শেষ না করা গেলে বয়সের জটে যে পড়তে পারেন অনেক ক্রিকেটারই!

 আগামী অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের জন্য তৈরি হতে নির্বাচিত খেলোয়াড়দের সময় পাওয়ার কথা দেড় বছর। এখন বাছাইয়ের বৈতরণি পেরোতেই যদি পাঁচ-ছয় মাস হারিয়ে যায়, কারও কারও বয়সের সীমা শেষ হয়ে যেতে পারে বিশ্বকাপ খেলার আগেই। গেম ডেভেলপমেন্ট ব্যবস্থাপক সমাধান দেখছেন এই সমস্যারও, 'অনূর্ধ্ব-১৯ দলে যাদের নির্বাচিত করা হবে, সবাই তো আর ২০২২ বিশ্বকাপে খেলবে না। যাদের বয়স পেরিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে কিন্তু প্রতিভাবান, তারা আমাদের প্রক্রিয়ার মধ্যেই থাকবে। তারা এইচপি কিংবা অন্য দলে সুযোগ পাবে।'