প্রশ্নটা অর্থের নয়, জীবন-মৃত্যুর

এখনো বিনাশ হয়নি করোনা মহামারি। তাই তড়িঘড়ি করে লিগ শুরু না করার পরামর্শ ফিফার প্রধান চিকিৎসকের। ফাইল ছবি
এখনো বিনাশ হয়নি করোনা মহামারি। তাই তড়িঘড়ি করে লিগ শুরু না করার পরামর্শ ফিফার প্রধান চিকিৎসকের। ফাইল ছবি

সময় বহতা নদী, ছুটে চলে আপন মনে। করোনাভাইরাসও যেন চলে তার খেয়ালখুশি মতো, কারও তোয়াক্কা না করে। আগের মতো লাফিয়ে লাফিয়ে এর সংক্রমণ না বাড়লেও এখনো পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি করোনা মহামারি। এর মধ্যেই কি ফুটবলে আবার প্রাণ ফেরানো সম্ভব?

এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে একটিই বিষয় সামনে চলে আসছে বারবার—কোনটি আগে, অর্থ নাকি মানুষের জীবন! বিশ্বের বিভিন্ন ক্লাবগুলোকে বড় অঙ্কের আর্থিক ক্ষতি থেকে বাঁচাতে লিগগুলো শেষ করা খুব প্রয়োজন। চলতি মৌসুম শেষ করতে হলে মে থেকে জুনের মধ্যে আবার খেলা শুরু করার কোনো বিকল্প নেই। আর সেটা করতে গেলে খেলোয়াড়, সমর্থক আর তাঁদের পরিবারের সদস্যদের জীবনের ঝুঁকি তো থেকেই যায়।
উয়েফা সভাপতি আলেক্সান্দার সেফেরিন আশাবাদী—শিগগিরই ঝড় থেমে যাবে, পৃথীবি আবার শান্ত হবে! করোনা মহামারির দুর্দিন কাটিয়ে বিশ্ব ফুটবলে ছুটবে হাসির ফোয়ারা। কিন্তু ফ্রান্সের ফুটবল কর্তৃপক্ষ সে রকম কোনো আশা দেখতে পায়নি বলে চলতি মৌসুমের সমাপ্তি ঘোষণা করেছে, লিগ ওয়ানের পয়েন্ট তালিকায় এগিয়ে থাকা নেইমারদের গলায় পরিয়ে দিয়েছে জয়মাল্য। যার মানে লিগ শেষ না হলেও ফ্রেঞ্চ লিগ ওয়ানের এবারের চ্যাম্পিয়ন পিএসজি।
ফ্রান্সের লিগ কর্তৃপক্ষ এমনটা ভাবলেও সেফেরিন আশা ছাড়ছেন না। তাঁর বিশ্বাস, ঝড় থেমে গিয়ে শিগগিরই বিভিন্ন দেশের লিগগুলো আবার শুরু হবে। শেষও হবে সময়মতো বা অন্যান্য বারের চেয়ে কিছুটা দেরিতে। চ্যাম্পিয়নস লিগও আবার শুরু করা নিয়ে আশাবাদী তিনি।
সেফেরিনের আশার পালে হয়তো বাতাস দিচ্ছে জার্মান বুন্দেসলিগা কর্তৃপক্ষের মে মাসেই আবার লিগের খেলা মাঠে ফেরানোর ঘোষণায়। ইংলিশ এফএও চাইছে জুন মাসে লিগ শুরু করতে। জার্মানি আর ইংল্যান্ডের ক্লাবগুলো এরই মধ্যে অনুশীলন শুরু করে দিয়েছে। শিগগিরই অনুশীলনে ফিরতে পারেন লিওনেল মেসিরাও।

বিভিন্ন দেশের ফুটবল ফেডারেশনগুলো আর উয়েফা যখন আবার লিগ শুরু করতে মরিয়া, ফিফার প্রধান চিকিৎসক মাইকেল ডি'হুগ একটি সতর্কবাণীই দিয়ে রেখেছেন—এত তাড়াহুড়ো করা যাবে না! খেলার চেয়ে জীবন বড়—হুগের কথার মর্মার্থ এটাই, ‌'অর্থের যুক্তির কাছে চিকিৎসার যুক্তির জয়ের সময় এটা। প্রশ্নটা আসলে অর্থের নয়। এটা জীবন-মৃত্যুর বিষয়। আর এ বিষয়টা খুবই সহজ।'