করোনায় উৎসর্গ যে সেঞ্চুরি আর হ্যাটট্রিক

>করোনার সময় প্রিয় স্মারক নিলামে তুলে সমাজের বিত্তবানদের সাহায্য এগিয়ে আসার আহবান জানালেন সৌম্য-তাসকিন।

সৌম্য সরকারের টেস্ট ক্যারিয়ার খুব বর্ণীল নয়। টেস্ট দলের নিয়মিত সদস্যও নন তিনি। সৌম্যর টেস্ট ক্যারিয়ারের একমাত্র সেঞ্চুরিটি তবু মনে রাখার মতোই। ২০১৯ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে হ্যামিল্টন টেস্টে মাত্র ৯৪ বলে সেঞ্চুরি করেন তিনি। ভাগ বসান তামিম ইকবালের দ্রুততম টেস্ট সেঞ্চুরির রেকর্ডে।

সেদিন সৌম্য তাঁর নতুন 'এসএস' ব্যাট নিয়ে খেলতে নেমেছিলেন। হ্যামিল্টনের সবুজ উইকেটে নিউজিল্যান্ডের বোলিং আক্রমণে ছিলেন নিল ওয়েগনার, ট্রেন্ট বোল্ট ও টিম সাউদি। দ্বিতীয় ইনিংসে ম্যাচ বাঁচানোর চেষ্টায় অবিশ্বাস্য সেঞ্চুরি করেন সৌম্য। ১৭১ বলে খেলা ১৪৯ রানের ইনিংসটি ছিল দুর্দান্ত সব স্ট্রোকে সাজানো।

প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরির ব্যাটটি স্বাভাবিকভাবেই অনেক প্রিয় ছিল সৌম্যর কাছে। কিন্তু প্রিয় সেই ব্যাটটি এখন তাঁর নয়।গত রোববার রাতে অনুষ্ঠিত এক নিলামে সাড়ে ৪ লাখ টাকায় তাঁর টেস্ট সেঞ্চুিরর স্মারক ব্যাটটি কিনে নেয় আইপিডিসি ফাইনান্স। নিলামে পাওয়া অর্থ দিয়ে করোনা–দুর্গতদের পাশে দাঁড়িয়েছেন সৌম্য। তাঁর আহবান, সমাজের বিত্তবানরাও এই দুঃসময়ে পাশে দাঁড়াক অসহায় মানুষের, 'ইচ্ছে ছিল মানুষকে সাহায্য করার। আমাকে দেখে যদি আরেকজন এগিয়ে আসে, আরও একজন সাহায্য করে, তাহলে মানুষের মুখে হাসি আসবে, দুই-চারদিনের খাবার পাবে। এটাই মূল উদ্দেশ।'

সৌম্যর সঙ্গে নিলামে ক্রিকেট স্মারক বিক্রি করেছেন তাসকিন আহমেদও। তাসকিন নিলামে তোলেন ওয়ানডেতে একমাত্র হ্যাটট্রিকের বলটি। ৪ লাখ টাকায় তাঁর সেই হ্যাটট্রিক স্মারক কিনে নেন পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ক্রিকেট ভক্ত।

২০১৭ সালের শ্রীলঙ্কা সফরে পঞ্চম বাংলাদেশি বোলার হিসেবে তাসকিন পেয়েছিলেন ওয়ানডে হ্যাটট্রিকের স্বাদ। পর পর তুলে নিয়েছিলেন আসেলা গুনারত্নে, সুরাঙ্গা লাকমল ও নুয়ান প্রদীপের উইকেট। এর আগে ঘরোয়া ও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বেশ কয়েকবার হ্যাটট্রিকের সুযোগ পেলেও ভাগ্য সহায় হয়নি। হ্যাটট্রিক বলটি নিয়ে তাসকিন বলছিলেন, 'বলটা আমার বেশ পছন্দের একটা জিনিস ছিল। হ্যাটট্রিক বল বলে কথা! আমার ক্যারিয়ারে হ্যাটট্রিক তো ওই একটাই।'

সৌম্যর মতো তাসকিনও চান করোনার সময় এগিয়ে আসুক সমাজের বিত্তবানরা, 'হ্যাটট্রিক বলের ৪ লাখ টাকায় আরও এক-দেড়শ মানুষের উপকার হয়, তাহলে তো ভালোই। হয়তো আমার পছন্দের একটা জিনিস দিলাম, কিন্তু বাংলাদেশে এমন অনেক মানুষ আছে যাদের কাছে ৪ লাখ টাকা কিছুই না। ৪০ লাখ টাকা দিলেও তাঁর গায়ে লাগবে না। তাঁরা যেন এগিয়ে আসে।'