সেনাবাহিনীতেও তাক লাগিয়ে দিলেন ফুটবল তারকা

সেনা প্রশিক্ষণেও খুব ভালো করেছেন সন হিউং মিন।ছবি: ‍টুইটার
সেনা প্রশিক্ষণেও খুব ভালো করেছেন সন হিউং মিন।ছবি: ‍টুইটার
>করোনাভাইরাসের কারণে খেলাধূলা বন্ধ থাকায় বাধ্যতামূলক সেনা প্রশিক্ষণ নিতে গিয়েছিলেন ইংলিশ ক্লাব টটেনহাম হটস্পারের কোরিয়ান উইঙ্গার সন হিউং মিন। সেখানেও তাক লাগিয়ে দিয়েছেন তিনি

সনের কীর্তি দেখলে বহুলচর্চিত সেই প্রবাদবাক্য কথা মনে পড়তে বাধ্য – 'যে রাঁধে, সে চুলও বাঁধে।'

টটেনহাম হটস্পারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় তিনি। নিজ দেশ দক্ষিণ কোরিয়ার সবচেয়ে বড় তারকাও। গত মৌসুমে স্পারদের চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে তোলার পেছনে তাঁর ভূমিকা ছিল অনেক। এশিয়ার যেসব খেলোয়াড় প্রিমিয়ার লিগে এসে আলো ছড়িয়েছেন, সে তালিকায় সনের নাম থাকবে সেরা দুই-তিন জনের মধ্যে। অর্থাৎ সনের ফুটবলীয় দক্ষতা নিয়ে তেমন প্রশ্ন তোলার কোনো অবকাশ নেই। কিন্তু ফুটবলের বাইরে এবার সন যা করে দেখালেন, তা নিয়ে ধন্য ধন্য রব উঠে গেছে চারিদিকে।

করোনাভাইরাস মহামারিতে মাঠে খেলা নেই। কবে সবকিছু স্বাভাবিক হবে, সেটা বলারও উপায় নেই। এ অবস্থায় সব ফুটবলার ঘরে বসে আছেন। কেউ টিস্যুর রোল নিয়ে কারিকুরি দেখাচ্ছেন টুইটার বা ইনস্টাগ্রামে। সন হিউং-মিন সময় কাটানোর আরও ভালো উপায় খুঁজে নিয়েছিলেন কিছুদিন আগে। করোনার এ সময়টুকু সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়ে পার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন দক্ষিণ কোরিয়ান তারকা।

এ মৌসুমটাও যে খুব ভালো কাটছিল, তা নয়। প্রথমে হাত ভাঙায় মৌসুমই শেষ হয়ে গিয়েছিল তাঁর। শল্য চিকিৎসা নিতে দক্ষিণ কোরিয়ায় গিয়েছিলেন ফেব্রুয়ারিতে। তত দিনে করোনাকাল শুরু হয়ে গিয়েছে। ফলে লন্ডনে ফেরার পর ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে যেতে হয়েছিল তাঁকে। কোয়ারেন্টিন থেকে ফিরে অনুশীলনে যোগ দেওয়ার পর এক সপ্তাহের মধ্যে সেটাও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ফলে তিনি আবারও দেশে ফিরে যান। কিন্তু লন্ডন থেকে যাওয়ায় কোরিয়ায় আরও দুই সপ্তাহের জন্য কোয়ারেন্টিনে থাকতে হয়েছে তাঁকে।

২০ এপ্রিল কোয়ারেন্টিন শেষেই দেশটির সেনাবাহিনীতে বাধ্যতামূলক দায়িত্ব পালন করতে গিয়েছিলেন সন। দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রত্যেক পুরুষকে ২৮ বছর বয়সের মধ্যে বাধ্যতামূলক ২১ মাসের সেনা প্রশিক্ষণ নিতে হয়। শুধু অলিম্পিকে পদকজয়ী এবং এশিয়াডে সোনাজয়ীরা ছাড় পান এই প্রশিক্ষণ থেকে।

২০১৮ সালে এশিয়ান গেমসে দেশকে সোনা এনে দেওয়ায় সে দায়িত্ব আর পালন করতে হয়নি সনকে। কিন্তু চার সপ্তাহের আরেকটি প্রশিক্ষণ পালনের নিয়ম রয়েছে। পেশাদার ফুটবলের ব্যস্ত জীবনে চার সপ্তাহ বের করা কঠিন হয়ে যেত সনের জন্য। আবার দেশের দায়িত্ব পালন না করলেও সমস্যা। করোনাভাইরাসের কারণে এই অপ্রত্যাশিত ছুটি পেয়ে সন তাই দ্বিতীয়বার চিন্তা না করেই যোগ দিয়েছিলেন সেনাবাহিনীতে।

শোনা গেছে, সেখানেও যথেষ্ট কৃতিত্বের সঙ্গে নিজের দায়িত্ব পালন করেছেন সন। নিজের দলের মধ্যে সবচেয়ে ভালো পারফরম্যান্স দেখানোর সুবাদে পুরষ্কৃত করা হয়েছে তাঁকে। দক্ষিণ কোরিয়া নৌবাহিনীর মুখপাত্র জানিয়েছেন, 'প্রশিক্ষণের প্রতিটি ক্ষেত্রে সন দুর্দান্ত পারফর্ম করেছে। নিরাপত্তা বিষয়ক শিক্ষা ও মিলিটারি নৈতিকতা বিষয়েও সে কৃতিত্ব দেখিয়েছে।'

এপ্রিলের শুরুর দিকে জেজু দ্বীপের নৌবাহিনী ক্যাম্পে যোগ দিয়েছিলেন সন। সেখানে সুউচ্চ পর্বতারোহণ, টিয়ারগ্যাস ও রাইফেল বিষয়ক প্রশিক্ষণও নিতে হয়েছে এশিয়ান ফুটবলে বর্তমান সেরা এই তারকাকে।