চুক্তি পর্যালোচনা করবে বিসিবি

রাসেল ডমিঙ্গো।
রাসেল ডমিঙ্গো।

করোনায় খেলা নেই, কাজও নেই। বেশির ভাগ কর্মজীবীর মতো অনির্দিষ্টকালের ছুটি চলছে বাংলাদেশ দলের বিদেশি কোচিং স্টাফদেরও। গত ৯ মার্চ জিম্বাবুয়ে সিরিজের পর যাঁর যাঁর দেশে চলে যাওয়া কোচেরা আটকা পড়েছেন লকডাউনে। সবাই এখন অপেক্ষায়, কবে স্বাভাবিক হবে পরিস্থিতি। কবে মুক্তি পাবেন অবরুদ্ধ জীবন থেকে। কবে ফিরবেন কাজে।

বিদেশি কোচদের কাজে যোগ দেওয়া নির্ভর করছে দুটি বিষয়ের ওপর। প্রথমত, কোচদের নিজের দেশে করোনার সংক্রমণ কতটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে। দ্বিতীয়ত, কর্মস্থল বাংলাদেশের পরিস্থিতি কোন দিকে এগোচ্ছে। সব ‘যদি’, ‘কিন্তু’ মিলিয়ে চলতি বছরে তাঁদের কর্মপঞ্জিকা থেকে হারিয়ে যেতে পারে পাঁচ-ছয় মাস, কিংবা তারও বেশি সময়। বছরের অর্ধেক সময়ই যদি হারিয়ে যায়, তবে বিদেশি কোচদের সঙ্গে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) যে চুক্তি, সেগুলোর ভবিষ্যৎ কী? এ ব্যাপারে বোর্ডের দায়িত্বশীলরা জানিয়েছেন, করোনা পরিস্থিতির ভবিষ্যৎ বিবেচনা করে প্রয়োজনে কোচদের সঙ্গে চুক্তি পর্যালোচনা করে দেখা হবে।

বিসিবির বিদেশি কোচদের কারও চুক্তি দৈনিক কাজের হিসাব, কেউ বেতন পান মাসিক। প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গো, পেস বোলিং কোচ অটিস গিবসন ও ফিজিও জুলিয়ান কালেফাতোর চুক্তি বছর হিসাবে। আবার স্পিন পরামর্শক ডেনিয়েল ভেট্টোরি, ব্যাটিং কোচ নিল ম্যাকেঞ্জি, ফিল্ডিং কোচ রায়ান কুকের চুক্তি নির্দিষ্ট দিনের। চুক্তির ধরন যেটাই হোক, সবাই বাংলাদেশ দলে কাজ করছেন একটা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য।

ডমিঙ্গোর চুক্তি যেমন ২০১৯ সালের আগস্ট থেকে ২০২১ সালের আগস্ট পর্যন্ত। গত বছরের ২০ অক্টোবর থেকে কাজ শুরু ভেট্টোরির চুক্তি ২০২০ সালের ১৫ নভেম্বর (২০২০ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ) পর্যন্ত। এই সময়সীমার মধ্যে কিউই কিংবদন্তি বিসিবির হয়ে কাজ করবেন মোট ১০০ দিন। দিনপ্রতি তাঁর বেতন পড়ে সাড়ে তিন হাজার ডলার, কর কেটে অঙ্কটা আড়াই হাজার ডলারের মতো।

এ বছরের জানুয়ারিতে বাংলাদেশ দলের কোচিং স্টাফে যোগ হওয়া ক্যারিবিয়ান পেস বোলিং কোচ গিবসনের চুক্তি ২০২২ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত। গত বছরের আগস্টে যোগ দেওয়া ফিজিও কালেফাতোর চুক্তি ২০২১ সালের নভেম্বর পর্যন্ত। আর গত মার্চে দলে যোগ দেওয়া ট্রেনার নিকোলাস ট্রেভর লির চুক্তি ২০২৩ সালের এপ্রিল পর্যন্ত। গত বিশ্বকাপের পর ম্যাকেঞ্জি ও কুক চুক্তি নবায়ন করেছেন দুই বছরের জন্য।

করোনায় সব থেমে যাওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই থেমে গেছে কোচিং স্টাফদের কার্যক্রমও। চুক্তির সময়ের মধ্যেই লম্বা যে বিরতিটা পড়ে যাচ্ছে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সেটি কীভাবে পুষিয়ে নেওয়া যায়, তা নিয়ে ভাববে বিসিবি। বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান আকরাম খান প্রথম আলোকে বললেন, ‘এটা আমাদের পর্যালোচনা করতে হবে। বছরের চার-পাঁচ মাস হারিয়ে যাচ্ছে, আপাতত কিছু করার নেই। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে এসব নিয়ে বোর্ডে অবশ্যই আলোচনা হবে।’

বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজাম উদ্দিন চৌধুরীও জানালেন এটাই। তবে করোনাভাইরাসের প্রভাব যেহেতু পুরো বিশ্বের ওপরই পড়ছে, নিজেরা আগ বাড়িয়ে কোনো সিদ্ধান্তে না গিয়ে তিনি আগে তাকাতে চান অন্য বোর্ডগুলোর সিদ্ধান্তের দিকে, ‘যাঁদের সঙ্গে দিনের হিসাবে কাজ, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে যদি কাজে লাগানোর প্রয়োজন হয়, তাঁদের কাজে লাগাব। প্রয়োজন না হলে কাজে লাগাব না। অন্যদের বেলায় কী হবে, সেটা পরিচালনা পর্ষদ সিদ্ধান্ত নেবে। অন্যান্য দেশ যা করবে, আমরাও তাই করব।’