এমবাপ্পের সামনে নেইমাররা সবাই বাচ্চা

পিএসজিতে অনুশীলনে নেইমাররা পেরে ওঠেন না এমবাপ্পের গতির সঙ্গে। ছবি: এএফপি
পিএসজিতে অনুশীলনে নেইমাররা পেরে ওঠেন না এমবাপ্পের গতির সঙ্গে। ছবি: এএফপি

মাঝমাঠ থেকে ৭০ গজি এক ভোঁ দৌড়ে তিন-চারজনকে ছিটকে ফেলে বক্সে ঢুকে পড়লেন তিনি। তাঁকে আটকাতে না পেরে শেষমশ পেছন থেকে ট্যাকল করে বসলেন মার্কোস রোহো। পেনাল্টি! 

২০১৮ বিশ্বকাপের শেষ ষোলোতে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে কিলিয়ান এমবাপ্পের সেই দৌড় কে ভুলতে পারে! যেন এক দৌড়ে বিশ্বমঞ্চে নিজের আগমণধনী শুনিয়েছিলেন সে দিনের অষ্টাদশী ফরাসি স্ট্রাইকার। সে কী গতি তাঁর!

তা তাঁর গতি আসলে কেমন? পিএসজিতে ফরাসি স্ট্রাইকারের সতীর্থ স্প্যানিশ মিডফিল্ডার অ্যান্ডার হেরেরা বলছেন, অনুশীলনে এমবাপ্পেকে দেখে মনে হয়, তিনি উসাইন বোল্ট, আর তাঁর তুলনায় বাকিরা ১২ বছরের বাচ্চা! এমবাপ্পের পাশাপাশি পিএসজির আরেক মহাতারকা নেইমার ক্লাবে কতটা খুশি তা-ও শোনা গেল হেরেরার কণ্ঠে।

'মাঝে মাঝে অনুশীলনে ওকে দেখে মনে হয় ও বাচ্চাদের সঙ্গে অনুশীলন করছে। যেভাবে দৌড়ায় ও, যেভাবে ডিফেন্ডারদের ফাঁক গলে বেরিয়ে যায়, খুব সহজেই যে কাউকে পেছনে ফেলতে পারে ও। দেখে মনে হয় আমরা ১২ বছরের বাচ্চা আর ও উসাইন বোল্ট' – ইএসপিএনে বলছিলেন হেরেরা।

এ তো গেল গতি, এমবাপ্পের ফিনিশিংও তো মুগ্ধতা জাগানিয়া। যেন ঠান্ডা মস্তিষ্কের কোনো শিকারি! হেরেরাও মুগ্ধ, 'গোলকিপারের সামনে যখন চলে যায় ও, হঠাৎ থেমে ঠান্ডা মাথায় গোল করার দারুণ দক্ষতা আছে ওর। গতির সঙ্গে শারীরিক শক্তির দারুণ সমন্বয় করতে জানে ও, গোলের সামনে মাথা ঠান্ডা রাখতে পারে।'

এরই মধ্যে বিশ্বকাপ জেতা হয়ে গেছে। সময়ের সেরাদের সারিতে নাম লেখানোও সারা। মেসি-রোনালদোর উত্তরসূরির মুকুটটাও এমবাপ্পের মাথায়ই দেখেন সবাই। হেরেরাও করলেন ভবিষ্যদ্বাণী, '২০২৫ সালের মধ্যেই ও ব্যালন ডি'অর জিততে পারে।'

বর্ষসেরা ফুটবলারের মুকুটটা জেতার স্বপ্ন নিয়ে তো ২০১৭ সালের আগস্টে দলবদলের বিশ্বরেকর্ড গড়ে পিএসজিতে এসেছিলেন নেইমারও। কিন্তু চোট ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ডের সেই স্বপ্নে বাধা হয়ে এসেছে বারবার। পিএসজি ছেড়ে তাঁর বার্সায় ফেরার গুঞ্জনও বাজার পায়। গুঞ্জন শোনা যায় ক্লাবের বোর্ডের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের অবনতির।

কিন্তু হেরেরা বলছেন, সংবাদমাধ্যম ভুল লেখে। স্প্যানিশ মিডফিল্ডারের কথা, 'সংবাদমাধ্যম ওকে নিয়ে যেভাবে বলে সেটা অনেক সময়ই ইতিবাচক নয়। ওরা যেন সব সময় ওকে মেরে ফেলার উপায় খোঁজে।'

তাহলে নেইমার আসলে কেমন? হেরেরার উচ্চকিত প্রশংসা, 'কিন্তু এমন একজনকে দেখি যে প্রতিদিনই খুশি, দলকে আরও শক্তিশালী করতে চায়। ওর বাড়িতে ডিনারের আয়োজন করে যাতে আমরা দল হিসেবে এক হয়ে থাকি। আমাদের যত বেশি সম্ভব শিরোপা জেতাতে চায়। ও-ই আমাকে বলেছে ও এই ক্লাবে অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি খুশি। অথচ পত্রিকায় যখন পড়ি, মনে হয় অন্য কোনো খেলোয়াড়কে নিয়ে পড়ছি!'