আরিফার করোনা যুদ্ধ থেমে যাবে?

করোনার সময়ে অনন্য সাহসিকতা দেখাচ্ছেন আরিফা। সংগৃহীত ছবি
করোনার সময়ে অনন্য সাহসিকতা দেখাচ্ছেন আরিফা। সংগৃহীত ছবি

স্বপ্ন ছিল ক্রিকেটার হবেন। অসুস্থতার কারণে সে স্বপ্ন বেশি দূর এগোয়নি। ২০১২ সালে ঢাকায় মেয়েদের লিগে খেলা শুরু, ২০১৭ সালেই শেষ। আরিফা জাহানের জীবন তাতে থেমে যায়নি। করোনার ক্রান্তিকালে নতুন চ্যালেঞ্জ নিলেন অসহায় গর্ভবতী নারীদের জীবনে আশার আলো হওয়ার। কিন্তু দুর্ভাগ্য আরিফার, সেখানেও এখন নেমে আসছে অন্ধকার!

রংপুর শহরের নুরপুরে বাসা আরিফার। খেলা ছেড়ে দেওয়ার পর স্থানীয় মেয়েদের ক্রিকেট শেখাতে গড়ে তোলেন ওমেন্স ড্রিমার ক্রিকেট একাডেমি। বিনা মূল্যে মেয়েদের ক্রিকেট শেখান সেখানে। আর নিজের পেশা বলতে রংপুর ও ঢাকার ক্লাব ক্রিকেটে টুকটাক কোচিং করানো। করোনাভাইরাসের কারণে সেসবও যখন বন্ধ, নিজের জমানো টাকা আর বড় বোন আয়েশা সিদ্দিকার সাহায্যে নিলেন নতুন চ্যালেঞ্জ। মাসখানেক আগে ফেসবুক পোস্টে নিজের মুঠোফোন নম্বর (০১৮৬৭৫৭৮২৩০) দিয়ে আরিফা ঘোষণা দেন, 'রংপুরে একটি কলেই পৌঁছে যাবে বিনা মূল্যে গর্ভবতী মায়ের ঘরে খাবার।'

প্রথম আলোসহ জাতীয় ও স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলোতে তখন এ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে আরিফার মহৎ উদ্যোগের খবর ছড়িয়ে পড়ে সবখানে। কেউ কেউ তাঁর পাশে এসে দাঁড়ান। সাহায্যের আশায় গর্ভবতী নারীদের ফোন পেতে থাকেন প্রতিদিনই। কারও স্বামী রিকশাচালক, কারও স্বামী দিনমজুর, কারওবা স্বামীই নেই আর! আরিফা অটোরিকশায় চড়ে চাল, ডাল, চিনি, তেল, দুধ, ডিম আর কলার প্যাকেট পৌঁছে দিতে থাকেন যাঁর যাঁর ঠিকানায়। শুরুতে প্রতিটি প্যাকেটে থাকত ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকার খাদ্যসামগ্রী। পরে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় প্যাকেটপ্রতি বাজেট কমে আসে ৫৫০ টাকায়।


কিন্তু অর্থসংকটে আরিফা এখন সেটিও পারছেন না, 'খুব ভালো লাগছিল অসহায় গর্ভবতী নারীদের সাহায্য করে। কিন্তু নিজের জমানো টাকা আর বোনের দেওয়া সাহায্য প্রায় শেষ। এখনো প্রচুর ফোন আসছে। কিন্তু টাকার অভাবে আমি কিছু করতে পারছি না। দুই দিন ধরে ঘরে বসে আছি।'

আরিফার স্বপ্ন কি তাহলে মার খেয়ে যাবে আবার!