টেস্ট খেলতে মোস্তাফিজকে এই কাজটা পারতেই হবে

জাতীয় দলের পেসার মোস্তাফিজুর রহমান। ছবি: প্রথম আলো
জাতীয় দলের পেসার মোস্তাফিজুর রহমান। ছবি: প্রথম আলো
টেস্ট খেলতে হলে মোস্তাফিজুর রহমানকে কী করতে হবে জানিয়েছেন বোলিং কোচ ওটিস গিবসন।

সাদা বলে কোনো কথা নেই। 'অটোমেটিক চয়েজ' বলতে যা বোঝায় ঠিক তাই। কিন্তু লাল বলে যত সমস্যা। সুইং নেই। ভালো লেংথে টানা বল করে যাওয়ার ধৈর্য্যেও আছে ঘাটতি। মোস্তাফিজুর রহমানের তাই টেস্ট খেলা হচ্ছে না।

আপাতত, কথাটা জুড়ে দেওয়া ভালো। কারণ নিয়মিত টেস্ট দলে সুযোগ হয় না বাঁহাতি এ পেসারের। হেড কোচ রাসেল ডমিঙ্গো দায়িত্ব নিয়েই মোস্তাফিজকে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, টেস্ট খেলতে হলে সুইং ও নিয়ন্ত্রণ রপ্ত করতে হবে।


এরপর থেকে নতুন বোলিং কোচ ওটিস গিবসনের সঙ্গে মোস্তাফিজের যত ব্যস্ততা। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ঘরের মাঠে সর্বশেষ টেস্টের সময় ম্যাচের ফাঁকে ফাঁকে দুজন মিলে কাজ করতেন বলের সিম ও কবজির অবস্থান নিয়ে। শুধু কাটার, লেংথ থেকে বেরিয়ে যাওয়া বল ও বাউন্সার দিয়ে টেস্ট ব্যাটসম্যান আউট করা কঠিন। বাঁহাতি পেসার হয়ে ডানহাতি ব্যাটসম্যানদের ভেতরে বল নিতে না পারলে টেস্ট বোলার যে মোস্তাফিজের তেমন বিশেষত্ব থাকে না।

গিবসনের বিশ্বাস, সুইং, ধৈর্য ও নিয়ন্ত্রণ যোগ করতে পারলে তিন সংস্করণের বোলার হতে পারবেন মোস্তাফিজ। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, 'ধারাবাহিকভাবে সে যদি ডানহাতিদের ভেতরে বল আনতে পারে, তাহলে টেস্ট দলে সুযোগ পাবে। আর টেস্ট ক্রিকেট হচ্ছে ধৈর্যের খেলা। বলের পর বল, ওভারের পর ওভার, ডট বলের পর ডট বল করে যেতে হবে। সাদা বলের জন্য সব আছে ওর কাছে। কিন্তু টেস্ট ব্যাটসম্যান আউট করতে ধৈর্যশীল হবে হবে। নিয়ন্ত্রণ আরও নিখুঁত করতে হবে।'

কোচ হিসেবে গিবসনের অভিজ্ঞতার হাঁড়ি বেশ সমৃদ্ধ। দীর্ঘদিন ইংল্যান্ডের বোলিং কোচের দায়িত্ব পালন করার পর দক্ষিণ আফ্রিকার প্রধান কোচ হন। ২০১৯ বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার চাকরি হারিয়ে বাংলাদেশে আসেন গিবসন। গত বিপিএলে রংপুর রেঞ্জার্সের কোচ ছিলেন। এরপরই প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গোর ডাকে বাংলাদেশের বোলিং কোচের দায়িত্ব নেন।

পেসারদের মরুভূমি হলেও বাংলাদেশে সোনা ফলাতে চান ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাবেক এ অলরাউন্ডার । তবে সেটা ঘরোয়া ক্রিকেটের সংস্কৃতি বদল হলেই সম্ভব, 'বাংলাদেশি পেসারদের অধারাবাহিকতার কারণ ওই ঘরোয়া ক্রিকেটই। দিনে ২০ ওভার বোলিং তো করতে হবে। না হলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এসে ওদের কাছে লম্বা সময় বোলিং আশা করা ঠিক না, বিশেষ করে দেশের বাইরে।'

বাংলাদেশের বোলিং কোচ ওটিস গিবসন। ছবি: প্রথম আলো
বাংলাদেশের বোলিং কোচ ওটিস গিবসন। ছবি: প্রথম আলো

২০১৫ সালে ইংল্যান্ড দলের সঙ্গে বাংলাদেশ সফর করেছিলেন গিবসন। চট্টগ্রামে ইংল্যান্ডের কাছে অল্পের জন্য হারলেও ঢাকায় ইংল্যান্ডকে হারিয়ে টেস্ট সিরিজ ড্র করে বাংলাদেশ। ঘরের মাঠে বাংলাদেশের স্পিন শক্তি কেমন সেই সিরিজে হাড়ে হাড়ে টের পায় ইংল্যান্ড। ২০১৭ সালে বাংলাদেশের দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে দক্ষিণ আফ্রিফার প্রধান কোচ ছিলেন গিবসন। তখন আবার দেশের বাইরে বাংলাদেশের বোলিংয়ের দুরবস্থা টের পান এই ক্যারিবিয়ান কোচ।

এখন বাংলাদেশের দায়িত্ব নিয়ে দৃশ্যপট বদলাতে চান তিনি। সেজন্য দরকার হলে ঘরের মাঠে টেস্ট উইকেটের চরিত্র বদলানোর ইঙ্গিত দিয়েছেন গিবসন, 'ঘরের মাঠে দলটা সবসময়ই ভয়ংকর। এখন আমরা দলকে দেশের বাইরেও প্রতিদ্বন্দ্বীতা করার মতো অবস্থায় নিতে চেষ্টা করছি। জিম্বাবুয়ের সঙ্গে টেস্টে উইকেটে সবুজ ঘাস রেখে দেওয়া হলো। ফাস্ট বোলাররা তাতে উৎসাহ পেয়ে দারুণ বোলিং করেছে। সামনেও এমন কিছু করতে পারি। আমাদের কাজ ওদের সব কন্ডিশনের জন্য তৈরি করা।'

*ওটিস গিবসনের বিস্তারিত সাক্ষাৎকার পড়ুন আগামীকালের ছাপা সংস্করণে।