যে যুদ্ধ জিততে তামিমের লেগেছে অনেক বছর

মাঠের বাইরেও কঠিন লড়াই লড়তে হয়েছে তামিম ইকবালকে। ছবি: প্রথম আলো
মাঠের বাইরেও কঠিন লড়াই লড়তে হয়েছে তামিম ইকবালকে। ছবি: প্রথম আলো
>ভালো পারফরম্যান্সের পর তৃপ্তিতে গা ভাসিয়ে নাকি ক্যারিয়ারের অনেকটা সময় নষ্ট করেছেন তামিম ইকবাল। নিজের অভিজ্ঞতা থেকে লিটন-সৌম্যদের তেমন কিছু থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিলেন বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক

২২ গজে লড়াইটা সবাই দেখে। সাফল্য-ব্যর্থতার বিচার হয় ওই ২২ গজের পারফরম্যান্সেই। কিন্তু একজন ক্রিকেটারকে অনেক বড় একটা লড়াই লড়তে হয় মাঠের বাইরে। যেটি তাদের লড়তে হয় লোকচক্ষুর আড়ালেই। মাঠের সাফল্যের সঙ্গে আসে তৃপ্তি। ব্যর্থতার সঙ্গে গ্লানি। এই দুই আবেগের সঙ্গে মানিয়ে চলা কঠিনই। অভিজ্ঞ ও তরুণ ক্রিকেটার—প্রত্যেকেরই এ অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হয়। বাংলাদেশ ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সফল ক্রিকেটার তামিম ইকবালও ব্যতিক্রম নন। তিনিও লড়েছেন এ লড়াই। 

গতকাল রাতে তামিম তাঁর ফেসবুক লাইভের মাধ্যমে মনের সঙ্গে নিজের লম্বা লড়াইয়ের গল্প বলছিলেন। তামিমের অনুষ্ঠানে উপস্থিত অতিথি তরুণ ব্যাটসম্যান লিটন দাস তামিমকে কোন ম্যাচে সেঞ্চুরি করার পরের তৃপ্তি ও পরের ম্যাচে এর প্রভাব নিয়ে প্রশ্ন করেন।

তামিম কোন রাখঢাক না রেখেই বলেছেন, 'এই জিনিসটা পার করতে আমার মনে হয় প্রথম ৭-৮ বছর লেগেছে। প্রথম ৭-৮ বছরে মনে হতো, আমি তো একশ মেরে ফেলেছি। পরের ম্যাচে কী হবে না হবে অতো পরিকল্পনাও করতাম না। গিয়ে নিজের মতো ব্যাটিং করার চেষ্টা করতাম। আর তখনই ভুলটা করতাম। যখন আমার খারাপ সময় আসা শুরু করল, তখন রানের মূল্য বুঝতে শুরু করেছি। এরপর থেকে নিশ্চিত করার চেষ্টা করেছি, যদি ভালো রান করি, পর দিন সব ভুলে আবার শুন্য থেকে শুরু করতে।'

লিটন তামিমকে ফিরতি প্রশ্ন করে, 'ভাই, যদি দুই-তিন ম্যাচ খারাপ হয়, তখন কী চিন্তা করেন?' নিজের অভিজ্ঞতা থেকে তামিম উত্তর দেন, 'সবচেয়ে বড় হচ্ছে নিজের ওপর বিশ্বাস রাখা। আমি এতো দিনে একটা জিনিস শিখেছি, যখন তুই দুই-তিন ম্যাচ খারাপ খেলবি, তখন স্বাভাবিকভাবেই মানুষ তোকে নিয়ে আলোচনা শুরু করবে। তখন যদি তুই চিন্তা করিস যে, আমি পরের ম্যাচে দেখিয়ে দেব। তখন তুই নিজের ওপরই চাপ সৃষ্টি করলি। এটা হচ্ছে সবচেয়ে ভয়ংকর। মানুষ কী বলছে, মিডিয়া কী বলছে সেগুলো না মূল্যহীন। তোর মনে কী চলছে সেটা আসল।'

কথা শেষ হতে না হতেই উদাহরণ হিসেবে তামিমের লাইভে উপস্থিত মুমিনুল হকের নাম নেন তামিম। তামিম বলছিলেন, আবেগ এক পাশে রেখে নিজের কাজে মনোযোগ দেওয়ায় পটু নাকি টেস্ট অধিনায়ক মুমিনুল। সাফল্য কিংবা ব্যর্থতা— কিছু তেমন স্পর্শ করে না মুমিনুলকে। প্রক্রিয়াটাই নাকি তাঁর কাছে আসল।