ভারতের কাছ থেকে দুটি বিশ্বকাপ কেড়ে নেবে আইসিসি?

আইসিসির সঙ্গে ঝামেলা না মিটলে দেশের মাটিতে বিশ্বকাপ খেলা না-ও হতে পারে কোহলিদের। ছবি: এএফপি।
আইসিসির সঙ্গে ঝামেলা না মিটলে দেশের মাটিতে বিশ্বকাপ খেলা না-ও হতে পারে কোহলিদের। ছবি: এএফপি।

করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যেই বিশ্ব ক্রিকেটে বইতে শুরু করেছে নির্বাচনী হাওয়া। আর নির্বাচনী এই হাওয়া বাজে একটা রূপও নিয়েছে এরই মধ্যে। বচসা শুরু হয়ে গেছে ক্রিকেট বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী বোর্ড বিসিসিআই ও ক্রিকেট নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসির মধ্যে। ভারতে হতে যাওয়া ২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ও ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে হয়েছে কড়া ভাষায় ই-মেইল চালাচালি।

আইসিসির জেনারেল কাউন্সেল ও কোম্পানি সেক্রেটারি জোনাথন হল খুব আক্রমণাত্মাক ভাষায় ই-মেইল করে বিসিসিআইয়ের সেক্রেটারির কাছে জানতে চেয়েছেন, এ দুটি বিশ্বকাপের আয়ের ওপর কর মওকুফের বিষয়ে তারা এখন পর্যন্ত কী উদ্যোগ নিয়েছেন। চুক্তি অনুযায়ী, ভারত সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে ২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শুরুর দেড় বছর আগে আইসিসিকে যথাযথ সমাধান খুঁজে দেবে ভারত। তা না হলে দুটি ইভেন্টই ভারতের কাছ থেকে কেড়ে নিতে পারবে বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
জোনাথন হল তাঁর ই-মেইলে সেই হুমকিই দিয়েছেন, ‌‌'আইসিসি স্পষ্ট করছে যে শর্ত না মানলে চুক্তি অনুযায়ী আইবিসি (আইসিসির ব্যবসায় শাখা) যে কোনো সময় বিসিসিআইয়ের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করতে পারবে।' যার মানে দাঁড়ায়, আইবিসি ভারতের কাছ থেকে ২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ও ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপ কেড়ে নিতে পারবে।
আইসিসিকে প্রাপ্য অর্থ বুঝিয়ে দেওয়ার সময় এপ্রিলে শেষ হয়ে গেছে। জোনাথন হল মেইলে এটাও উল্লেখ করেছেন, আইবিসি ভারতকে আর সময় দিতেও চায় না। ভারত অবশ্য ই-মেইলের জবাবে লিখেছে, ৩০ জুন অথবা ভারতে লকডাউন শেষ হওয়ার পরে এক মাস – যেটি আগে শেষ হবে, ততদিন পর্যন্ত সময় বাড়াতে।
বিসিসিআইয়ের একটি সূত্র টাইমস অব ইন্ডিয়াকে জানিয়েছে, বিষয়টিতে ভারত সরকারের হস্তক্ষেপ চায় তারা। আর জোনাথনের ই-মেইলের জবাব বিসিসিআইও কড়াভাবেই দিয়েছে। এক ই-মেইলে বিসিসিআই তো সরাসরি প্রশ্নই করেছে, ‌'এটা (সময়মতো কর মওকুফের ব্যবস্থা) না করলে কী হবে? ভারতের কাছ থেকে বিশ্বকাপ কেড়ে নেওয়া হবে? ১৮ মাসের সময়সীমা এপ্রিলে শেষ হয়েছে। কিন্তু মহামারির কারণে এই সময়টা দুমাস না বাড়াতে পারার কোনো কারণ আমরা দেখি না।' প্রশ্ন আরও আছে বিসিসিআইয়ের, 'আইবিসি তো আইসিসির সদস্য বোর্ডগুলোর কয়েকজন পরিচালকের সমন্বয়ে তৈরি। তাহলে সেই পরিচালকদের মধ্যে কারা সময় দিতে রাজি নন? তাঁরা কি কোনো কাগজে সই করেছেন?'
বিষয়টি নিয়ে ভারতের দৈনিক টাইমস অব ইন্ডিয়া আইবিসির কয়েকজন পরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তিনজন এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে চাননি। তবে কয়েকজন জানিয়েছেন, তাঁরা এ বিষয়ে কোনো কাগজে সই করেননি। তাঁদের ধারণা, বিসিসিআইকে চাপ দেওয়ার পুরো বিষয়টিই রাজনৈতিক!
তবে অর্থ নিয়ে বচসা এর আগেও ভারতের সঙ্গে হয়েছে। ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ থেকে আইসিসির প্রায় ১৬০ কোটি রুপি প্রাপ্য ছিল। সেটা নিয়ে আইনি ঝামেলা চলছে।