কোহলি-স্মিথদের কাছাকাছি চলে এসেছেন বাবর, বলছেন মিসবাহ

নিয়মিতই তুলনা হয় বাবর আজম ও বিরাট কোহলির। ছবি: এএফপি
নিয়মিতই তুলনা হয় বাবর আজম ও বিরাট কোহলির। ছবি: এএফপি

ক্রিকেটকে না হয় করোনাভাইরাস থামিয়ে রেখেছে দুই মাস ধরে। কিন্তু বিরাট কোহলি, বাবর আজম, স্টিভ স্মিথদের মতো তারকা ক্রিকেটারদের শিরোনামে আসা? সেটা থামানোর সাধ্যি করোনারও নেই!

ব্যাটিংয়ের ধরন দেখে অনেকে বিরাট কোহলির সঙ্গে বাবর আজমের তুলনা করেন নিয়মিতই। কদিন ধরে সেটি অনেক বেশিই যেন হচ্ছে। এবার তাতে সুর মেলালেন স্বয়ং পাকিস্তান কোচ মিসবাহ-উল-হকও। তাঁর চোখে, কোহলি-স্মিথদের মানের কাছাকাছিই চলে এসেছেন বাবর আজম।

ক্রিকেট বিষয়ক ইউটিউব চ্যানেল ক্রিকেটবাজে এক সাক্ষাৎকারে মিসবাহর কথা, 'তুলনা করাটা আমার কখনোই পছন্দ নয়। তবে এই মুহূর্তে বিরাট কোহলি, স্টিভ স্মিথ বা জো রুটদের মানের খুব কাছেই চলে এসেছে বাবর।'

কোহলি, স্মিথ, রুটের সঙ্গে কেন উইলিয়ামসন, ডেভিড ওয়ার্নার, রোহিত শর্মা – সময়ের সেরা ব্যাটসম্যানদের তালিকায় এই নামগুলোই তো ঘুরেফিরে আসে। তাতে বাবরের নামও সম্ভবত যোগ হতে যাচ্ছে দ্রুতই। অন্তত মিসবাহর কথায় তেমনই ইঙ্গিত। পাকিস্তানের কোচ ও প্রধান নির্বাচকের যৌথ দায়িত্ব পালন করায় বাবরকে তো কাছ থেকেই দেখছেন নিয়মিত, সেখান থেকে মিসবাহর উপলব্ধি, কোহলিদের ছাড়িয়ে যেতে কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছেন বাবর। 'ও পরিশ্রমের নীতিতে বিশ্বাস করে। সেটি এমন – যদি আপনি কোহলির চেয়ে ভালো হতে চান, সে ক্ষেত্রে স্কিল, ফিটনেস আর ম্যাচ পরিস্থিতি বোঝার দক্ষতা নিয়ে কোহলির চেয়ে বেশি পরিশ্রম করতে হবে'–বলছিলেন মিসবাহ।

এরই মধ্যে টি-টোয়েন্টিতে ব্যাটসম্যানদের র‍্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষে উঠে এসেছেন বর্তমানে সাদা বলের ক্রিকেটে পাকিস্তানের অধিনায়ক বাবর। ওয়ানডেতে কোহলি ও রোহিতের পর আছেন তিন নম্বরে, আর টেস্টে আছেন পাঁচে। তাঁর ওপরের চারজনের মধ্যে শীর্ষে স্মিথ, এরপর কোহলি, মার্নাস লাবুশেন ও কেন উইলিয়ামসন।

অধিনায়কত্বও বাবরকে আরও ধীরস্থির হতে সাহায্য করেছে বলে মনে হচ্ছে মিসবাহর। গত অক্টোবরে প্রথমে টি-টোয়েন্টি অধিনায়কত্ব দেওয়া হয় বাবরকে, কদিন আগে দেওয়া হয় ওয়ানডে অধিনায়কত্ব। মিসবাহর বিশ্লেষণ, 'ওকে টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক বানানো একটা পরীক্ষা ছিল। দেখতে চেয়েছি ও চ্যালেঞ্জে কী করে। তাতে আমরা সবাই একমত হয়েছি যে ও খুব ভালো করেছে। সবচেয়ে বড় দিক হচ্ছে, ও বিশ্বের ওই অল্প কয়েকজন খেলোয়াড়ের একজন যে কিনা সামনে থেকে নেতৃত্ব দেয়। বাবরের মতো পারফরমার হলে দলের অন্যদের প্রেরণা দেওয়া, কাজ আদায় করে নেওয়া সহজ হয়ে যায়।'

এ তো গেল বোর্ডের দিক থেকে ছুঁড়ে দেওয়া চ্যালেঞ্জ। মিসবাহর কথা, বাবর নিজেকেও চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেন, 'ও শুধু দলে জায়গা পেয়েই খুশি থাকে না। খেলে শুধু টাকা পেয়েই খুশি থাকে না। ও পাকিস্তানের সেরা পারফরমার হতে চায়। কোহলি-স্মিথদের মতো সেরা ব্যাটসম্যানদের বিপরীতে নিজেকে মূল্যায়ন করতে চায়।' বাবর নিজে অবশ্য 'তাঁর ব্যাটিংয়ের ধরন এক রকম, আমার আরেক' বলে কোহলির সঙ্গে এসব তুলনা-টুলনা এড়িয়ে গেছেন।

তবে ব্যাট হাতে ধারাবাহিকভাবে আলো ছড়িয়ে যাচ্ছেন ঠিকই। গত অক্টোবরে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে সিরিজসর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ছিলেন বাবর। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষেই দুই টেস্টের সিরিজে ৫২.৫০ গড়ে করেছেন ২১০ রান, যার মধ্যে একটা সেঞ্চুরি ছিল। এরপর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুই টেস্ট সিরিজে তাঁর রান ও গড় সমান – ২৬২! 

মিসবাহর চোখে, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্টে রান পাওয়াই বদলে দিয়েছে বাবরকে, 'এর আগেও ও টেস্টে রান পাচ্ছিল, তবে সেটা ধারাবাহিক ছিল না। অস্ট্রেলিয়ায় রান পেল, এরপর শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্টে ও বদলে গেছে।'