প্রিমিয়ার লিগ আর লা লিগা অর্থলোভী

আগামী মাসেই শুরু হতে যাচ্ছে লা লিগা ও প্রিমিয়ার লিগ। ফাইল ছবি
আগামী মাসেই শুরু হতে যাচ্ছে লা লিগা ও প্রিমিয়ার লিগ। ফাইল ছবি

জগতটাই এ রকম—যার আছে সে আরও চায়! সেই চাহিদা পূরণ করতে গিয়ে কার কী হলো, সেদিকে খেয়াল রাখার ফুসরত নেই। করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যেও ইউরোপের বিভিন্ন লিগগুলোর আবার ক্রমান্বয়ে চালু হতে যাওয়া নিয়ে ফ্রান্সের কোচ দিদিয়ের দেশম যা বললেন, সেটার মানে এ রকমই দাঁড়ায়।

জার্মানির বুন্দেসলিগা এরই মধ্যে মাঠে ফিরেছে। ফিরতে যাচ্ছে লা লিগা আর ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগও। ফিরি ফিরি করছে ইতালিয়ান সিরি ‌'আ'ও। দেশমের কথা—এই লিগগুলো শুধু অর্থের কথাই ভাবছে, খেলোয়াড়দের ভালোমন্দ নিয়ে একটুও মাথা ঘামাচ্ছে না! বিশেষ করে বিশ্বের অন্যতম ধনী দুটি লিগকে তো বলতে গেলে ধুয়েই দিয়েছেন ফ্রান্সের ১৯৯৮ বিশ্বকাপজয়ী দলের অধিনায়ক।

ফরাসি পত্রিকা লা পার্সিয়ানে দেশম বলেছেন, ‌'প্রিমিয়ার লিগ ও লা লিগা অর্থকেই প্রাধান্য দিচ্ছে।' একই সঙ্গে তিনি ফরাসি লিগ ওয়ানের ২০১৯-২০ মৌসুম বাতিল ঘোষণা করার প্রশংসা করেছেন। লিগের কয়েকটি ক্লাব অবশ্য এই সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারেনি। আবার লিগ চালু করার জন্য তারা দেশের প্রধানমন্ত্রী ও ক্রীড়া মন্ত্রীর কাছে দেন-দরবার করেছে। তাতে কোনো ফল না পাওয়ায় ফ্রান্সের সর্বোচ্চ আদালত কাউন্সিল অব স্টেটে যাওয়ার হুমকি দিয়েছে।

জার্মানিতে দর্শকশূন্য গ্যালারিতে খেলা হচ্ছে ঠিক, কিন্তু মাঠে খেলোয়াড়দের মধ্যে তো শারীরিক সংস্পর্শ হচ্ছেই। কিছু কিছু দৃশ্য দেখে তো হাসিও পাচ্ছে দেশমের, ‌'জার্মানিতে আবার খেলা শুরু হওয়ার পর আমি বুন্দেসলিগা দেখেছি। আমার কাছে এটাকে ফুটবলের মতো মনেই হয়নি। আমি ম্যাচের গতি বা প্রতিদ্বন্দ্বিতা নিয়ে বলছি না, কিন্তু কিছু দৃশ্য আমাকে ধন্ধেতে ফেলে দিয়েছে।'

কী সেই দৃশ্য? দেশম বলে চলেন, ‌'ফুটবলে যেমনটা হয় তার সবকিছুই আছে ম্যাচে। খেলোয়াড়েরাও সে রকম করেই খেলছে। এই যেমন শারীরিক সংস্পর্শ হচ্ছে, ট্যাকল করছে তারা। আর বেঞ্চের দিকে তাকিয়ে দেখি সেখানে খেলোয়াড়েরা মাস্ক পরে দুই মিটার দূরত্ব বজায় রেখে বসে আছে! সত্যি বলছি, এর মানে বুঝতে পারছি না। তারাও তো যে কোনো সময় বদলি হিসেবে মাঠে নামতে পারে। তাহলে কি বেঞ্চে সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি? কী সব গোলমেলে ব্যাপার। এগুলো আমার পছন্দ নয়।'

দেশম এরপরই বললেন আসল কথাটা। চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেন অর্থের লোভেই আবার লিগগুলো চালু করা হচ্ছে, ‌'স্পেন আর ইংল্যান্ডের সিদ্ধান্ত দেখুন, তারা লা লিগা ও প্রিমিয়ার লিগ চালু করছে। কিন্তু মেয়েদের লিগ শুরু করছে না। মেয়েদের লিগে তো অর্থ কম। এটাই সব বলে দেয়।'

শুধু করোনার সংক্রমণ নিয়েই নয়, ফ্রান্সের কোচ খেলোয়াড়দের চোটে পড়ার শঙ্কায়ও শঙ্কিত, ‌‌'তড়িঘড়ি করে লিগ শুরু হয়ে যাওয়াটা আমাকে উদ্বিগ্ন করছে। কেউ কেউ খুব বেশি প্রস্তুতি ছাড়াই লিগ শুরু করে দিয়েছে। গ্রীষ্মের এই উচ্চ তাপমাত্রায় খেলোয়াড়দের প্রতি তিন দিনে একটি করে ম্যাচ খেলতে হচ্ছে। চোটের ঝুঁকি তো এতে বাড়বেই।'