বার্সাকে ১১ কোটির কথা জানিয়ে দিল ইন্টার

লওতারোর জন্য কঠিন লড়াইয়ে নামতে হবে বার্সেলোনাকে। ছবি: টুইটার
লওতারোর জন্য কঠিন লড়াইয়ে নামতে হবে বার্সেলোনাকে। ছবি: টুইটার

নেইমারকেও পেছনে ফেলে দিয়েছেন লওতারো মার্টিনেজ। আগামী দলবদলের মৌসুমে বহু কাঙ্ক্ষিত ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড নয়, আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকারকেই মূল লক্ষ্য বানিয়েছে বার্সেলোনা। লুইস সুয়ারেজের প্রকৃত উত্তরসূরি হিসেবে মার্টিনেজকেই মনে ধরেছে কাতালানদের। তাই নেইমার নয়, ২২ বছর বয়সী মার্টিনেজের পেছনেই সময় ব্যয় করা সঠিক সিদ্ধান্ত মনে হচ্ছে তাদের।

এ লক্ষ্যে বার্সেলোনা অনেকদূর এগিয়ে গেছে বলেই ভাবা হয়েছিল। করোনাকালে দলবদলের বাজার অনেক বদলে যাবে। ফলে খেলোয়াড়ের জন্য দলবদলের মূল্য কমে যাবে। ক্লাবগুলোও তাই খেলোয়াড় অদল বদল করেই কাজ সেরে নেবে বলে ভাবা হচ্ছিল। ধরে নেওয়া হয়েছিল এ সুযোগটাই নেবে বার্সেলোনা। নিজেদের হাতে থাকা আর্তুরো ভিদাল, নেলসন সেমেদো, স্যামুয়েল উমতিতি ও ইভান রাকিতিচদের ওদিকে পাঠিয়ে মেসির স্বদেশিকে নিয়ে আসার পরিকল্পনা ছিল তাদের।

এমনকি ক্লাব রেকর্ড ১৪৫ মিলিয়ন ইউরোতে দলে টানা ফিলিপে কুতিনহোকেও ইন্টার মিলানের কাছে দিয়ে দেওয়ার কথা ভাবছে বার্সেলোনা। কিন্তু ইতালিয়ানরা সরাসরি জানিয়ে দিয়েছে, লওতারোকে পেতে হলে ১১ কোটি ১০ লাখ ইউরো খসাতে হবে কাতালানদের। এর কমে কিছুতেই হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন ক্লাবটির ক্রীড়া পরিচালক পিয়েরে অসিলিও।

দলবদলের জন্য দুই তিনজন খেলোয়াড় ও ৬ কোটি ইউরোর প্রস্তাব দেওয়ার কথা ভেবেছিল বার্সেলোনা। কিন্তু ইন্টার মিলানের সাফ জবাব, লওতারোকে তারা বিক্রি করবে না। নিতে হলে রিলিজ ক্লজের ১১ কোটি ১০ লাখ ইউরো দিয়েই নিতে হবে। কাজটা আরও কঠিন করে তুলবে রিলিজ ক্লজের অন্য শর্তটিও। স্কাই স্পোর্টসকে অসিলিও বলেছেন, 'লওতারো মার্টিনেজ বিক্রির জন্য নয়। বার্সেলোনা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। আমাদের মধ্যে ভালো সম্পর্ক আছে। কিন্তু আমরা বলে দিয়েছি লওতারোকে বেচব না। ওকে নিতে চাইলে বার্সাকে পুরো রিলিজ ক্লজ দিতে হবে।'

বার্সেলোনার জন্য কেন কাজটা কঠিন করে দিচ্ছে লওতারো মার্টিনেজের সঙ্গে চুক্তির সময়কার অন্য শর্তটি। সাধারণত বড় দলবদলের ক্ষেত্রে ক্লাব গুলো ধাপে ধাপে অর্থ দেয়। বিভিন্ন শর্ত জুড়ে দেয়। যেমন কুতিনহো বা ডেমবেলের ক্ষেত্রে বার্সেলোনা কিছু শর্ত দিয়েছিল। আবার অনেক ক্লাব আর্থিক চাপ এড়াতে কিস্তিতে দেয়। যেমন, গ্যারেথ বেলের জন্য দলবদলের রেকর্ড ভাঙলেও সে অর্থ রিয়াল মাদ্রিদ চার কিস্তিতে দিয়েছিল।

কিন্তু মার্টিনেজের ক্ষেত্রে রিলিজ ক্লজ একবারেই দিতে হবে, যেমনটা পিএসজি নেইমারের ক্ষেত্রে করেছিল। করোনার কারণে খেলোয়াড়দের ৭০ ভাগ বেতন কেটে নেওয়া বার্সেলোনার পক্ষে একবারে ১১ কোটি ১০ লাখ ইউরো খরচ করা এখন প্রায় অসম্ভব। সেটা অসিলিও আবারও মনে করিয়ে দিয়েছেন, 'আমাদের ভবিষ্যতের জন্য লওতারো চাই। ওকে৪ বিক্রি করা হবে না। রিলিজ ক্লজই একমাত্র উপায়। বার্সা সেটা জানে, অন্য যেসব ক্লাব আমাদের সঙ্গে কথা বলেছে তারাও জানে। আর লওতারোর রিলিজ ক্লজ এতই জটিল…'

এ মৌসুমে ২২ ম্যাচে ১১ গোল করেছেন লওতারো। গোল করা ছাড়াও অন্য ফরোয়ার্ডদের খেলায় সহযোগিতা করার স্বভাবজাত ক্ষমতা আছে তাঁর। ক্লিনিক্যাল স্ট্রাইকারদের মধ্যে এমনটা পাওয়া কঠিন, এ গুনটাই তাঁকে পেতে আকুল করেছে ইউরোপের বড় ক্লাবগুলোকে।