এত ম্যাচ কোথায় পেলেন জেমি ডে?

বাংলাদেশের ফুটবলাররা বেশি বেশি ম্যাচ খেলেন বলে ধারনা জাতীয় দলের কোচ জেমি ডের। ফাইল ছবি
বাংলাদেশের ফুটবলাররা বেশি বেশি ম্যাচ খেলেন বলে ধারনা জাতীয় দলের কোচ জেমি ডের। ফাইল ছবি
>প্রিমিয়ার লিগ বাতিল হওয়ায় জাতীয় দলের ফুটবলারদের সামনে অফুরন্ত সময়। এতে জাতীয় দলের ভালো হয়েছে বলে মনে করেন কোচ জেমি ডে

'জাতীয় দলের ফুটবলাররা পর্যাপ্ত বিশ্রাম পাচ্ছেন না', জাতীয় দলের কোচ জেমি ডে গত বছর থেকেই বলে আসছেন কথাটা। তাঁর সেই অতৃপ্তি দূর করে দিয়েছে করোনাভাইরাস। ফুটবলারদের সামনে শুধু বিশ্রাম আর বিশ্রাম। তবে ফুটবলাররা হাঁপিয়ে উঠলেও জেমি বলছেন, প্রিমিয়ার লিগ বাতিল হওয়ায় ফুটবলারদের জন্য ভালো হয়েছে। তাঁরা আরও বিশ্রাম পাবেন। তাই লিগ বাতিল হওয়াকে একরকম স্বাগতই জানিয়েছেন জেমি ডে।

তবে লিগ বাতিল হওয়া কোনো ভালো খবর নয় দেশের ফুটবলের জন্য। এতে খেলোয়াড়দের মাঠে খেলায় মরিচা ধরার আশঙ্কা থাকে। জেমি ডে সেটা মানলেও অপ্রত্যাশিত এই লিগ বাতিল হওয়া জাতীয় দলের জন্য ভালো ফল আনবে বলে মনে করেন। তাঁর মতে, 'এতে ফুটবলাররা টানা খেলার ক্লান্তি কাটিয়ে সতেজ হয়ে ফিরতে পারবে।' তবে বাস্তবতা বলছে, এ বছর ফুটবলাররা ৫ মাসে সর্বোচ্চ ১২-১৩টি প্রতিযোগিতামূলক ঘরোয়া ম্যাচ খেলেছেন। বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে গোটা তিনেক। অথচ কোচ এখনো বলেই যাচ্ছেন ফুটবলারদের বিশ্রাম প্রয়োজন!


জেমি ডে ইংল্যান্ডে বসে প্রথম আলোকে একটা তথ্য দিলেন। তিনি বলছেন, অধিনায়ক জামাল গত দুই বছরে ক্লাব, জাতীয় দল ও অনূর্ধ্ব-২৩ দলের হয়ে প্রতিযোগিতামূলক, অনুশীলন ম্যাচ মিলিয়ে নাকি ম্যাচ খেলেছেন ১৬০টির ওপরে। তার মানে বছরে ৮০টি ম্যাচ! হিসাবে বড়সড় গরমিল রয়েছে মনে হয়। বাংলাদেশের ফুটবলাররা বছরে ৩০-৩৫টি ম্যাচই পেতেন না কয়েক বছরে। এখন না হয় একটু বেড়েছে। বছরে লিগ ম্যাচ ২৪টি। সব ম্যাচ সবাই খেলেনও না। ফেডারেশন কাপ ও স্বাধীনতা কাপ মিলিয়ে না হয় আরও ৮-৯টি ম্যাচ। বছরে জাতীয় দল খেলে গড়ে ১০-১২টি ম্যাচ। অনুশীলন ম্যাচ না হয় আরও ৮-১০টি। সব মিলিয়ে গড়ে একজন ফুটবলার প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ খেলেন ৪০-৪৫টি। জামাল হয়তো আরেকটু বেশি। তাই বলে কোচ ৮০টির বেশি ম্যাচ কোথায় পেলেন, বোঝা কঠিন।


জেমি ডে বলেন, 'দুই বছর ধরে টানা ম্যাচ খেলেছে জাতীয় দলের ফুটবলাররা। ফলে তাদের বিশ্রামের খুব প্রয়োজন ছিল। এখন খেলা না থাকায় জাতীয় দলের ফুটবলারদের জন্য ভালো হয়েছে। তারা সতেজ হয়ে ফিরে আসতে পারবে বলে আমি বিশ্বাস করি। খেলোয়াড়দের নিয়মিত ফিটনেস ঠিক রাখার জন্য সূচি দেওয়া হয়েছে। এক থেকে দেড় মাস ক্যাম্প করতে পারলেই ফিটনেস ফিরে আসবে। ফিটনেস নিয়ে দুশ্চিন্তা করছি না।'


কিন্তু কত দিন বিশ্রাম প্রয়োজন? প্রশ্নটি এসেই যায়। দেশের অন্যতম সেরা কোচ মারুফুল হক জেমি ডের সঙ্গে একমত নন। তাঁর কথা, 'জাতীয় দলের বিশ্রাম প্রয়োজন ছিল, কিন্তু তিন মাসের বেশি বিশ্রাম হয়ে গেলে হিতে বিপরীত হতে পারে। প্রায় তিন মাসের বিশ্রাম হয়ে যাবে সামনে। আরও বেশি সময় বিশ্রাম হলে সমস্যা তৈরি করতে সেটা। কন্ডিশনিং ক্যাম্প করে ফিটনেস ফিরে পাওয়া সম্ভব হবে ঠিক; কিন্তু ম্যাচ খেলার অভ্যাস না থাকলে প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ম্যাচের আবহ ফিরে পেতে সময় লাগতে পারে।' তবে জাতীয় দলের খেলোয়াড়দের ভালো-মন্দ কোচই ভালো বুঝতে পারবেন বলে মত মারুফুলের।