উদযাপনের অন্য উপায় খুঁজছেন রাবাদা

এমন উদ্‌যাপন করার আগে এখন একটু ভাবতে চাইবেন রাবাদা। এএফপি ফাইল ছবি
এমন উদ্‌যাপন করার আগে এখন একটু ভাবতে চাইবেন রাবাদা। এএফপি ফাইল ছবি

মাঠে উদ্‌যাপন করার জন্যও যে শাস্তি মিলতে পারে, সেটি ক্রিকেটের এ শতাব্দির ধারণা। উইকেট পাওয়ার পর উদ্‌যাপনে অনাহূত আগ্রাসণের চিহ্ন খুঁজে পেলেই শাস্তি হিসেবে ম্যাচ ফি কাটা হচ্ছে, সঙ্গে বাড়তি 'প্রাপ্তি' ডিমেরিট পয়েন্ট। বেশি ডিমেরিট পয়েন্টের সুবাদে নিষেধাজ্ঞার মতো কঠোর শাস্তিও পেয়েছেন কাগিস রাবাদা। অথচ ফাস্ট বোলারদের বোলিংয়ের অন্যতম সৌন্দর্যই হচ্ছে আগ্রাসণ। ক্রিকেটের প্রতি ভালোবাসা আর আবেগ থেকেই আসে সেটি। বাধ্য হয়ে এখন সে আবেগ অন্য উপায়ে প্রকাশের পথ খুঁজছেন রাবাদা।

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে পোর্ট এলিহাবেথ টেস্টে বহু পরিশ্রমের পর জুটেছিল জো রুটের উইকেট। একজন সত্যিকারের ফাস্ট বোলারের মতোই তাই রুটের মুখের কাছে গিয়ে চিৎকার দিয়েছিলেন। আগে থেকেই তিন ডিমেরিট পয়েন্ট পাওয়া রানাদার কপালে জুটেছিল আরেকটি ডিমেরিট পয়েন্ট। ফলাফল, সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে জোহানেসবার্গে খেলা হয়নি রাবাদার। আইসিসির এমন নিয়ম নিয়ে ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়কেরাই প্রশ্ন তুলেছিলেন। বলেছিলেন একজন ফাস্ট বোলারের আগ্রাসণ কেড়ে নিলে ক্রিকেট তাঁর সৌন্দর্য হারায়। কিন্তু তাতে আইসিসির নিয়ম তো আর বদলে যায়নি।

রাবাদা তাই নিজেকে বদলানোর পথ খুঁজছেন, 'এটা আবেগের ফলে হয়। কিন্তু সবারই নিজের মতামত আছে এবং তাদের সে অধিকারও আছে মত দেওয়ার। আমি কিছু জিনিস খুঁজে পেয়েছি যা বের করা দরকার ছিল এবং আমার কাছের মানুষদের সঙ্গে বসে সেটা ঠিক করার চেষ্টা করব।'

গত মৌসুমে ৬ টেস্টে ৩২.৮৫ গড়ে উইকেট পেয়েছেন। অন্য অনেকের জন্য বেশ ভালো পারফরম্যান্স হলেও ক্যারিয়ারে এই প্রথম মৌসুমে গড় ৩০ পার হলো রাবাদার। তাঁর হতাশাটা তাই নিজেকে নিয়েই, 'গত মৌসুমটা ছিল হতাশার। আমার সংখ্যা দেখে খারাপ মনে হয় না। কিন্তু নিজের কাছেই মনে হচ্ছিল মরচে ধরেছে স্কিলে এবং সব কিছু ঠিক মতো হচ্ছে না।'

 নিষেধাজ্ঞার কারণে গত মৌসুমে একটি ম্যাচ খেলা হয়নি। মাঠের উদ্‌যাপনের কারণে এর আগেও বসে থাকতে হয়েছে টেস্ট ম্যাচে। ২০১৭ সালে এরকম প্রথম ঘটনাটিও ইংল্যান্ডের বিপক্ষেই ছিল। ২০১৮ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দুই ম্যাচ নিষেধাজ্ঞার শাস্তি জুটেছিল তাঁর। সাবেক অধিনায়ক ফাফ ডু প্লেসি তবু রাবাদাকে আগ্রাসণ কমাতে বলেননি কখনো। তবে মাইকেল হোল্ডিংয়ের মতো শুভাকাঙ্ক্ষীরা ক্যারিয়ারের খাতিরেই তাঁকে একটু শান্ত হতে বলছেন।

 রাবাদাও নিজের মধ্যে কিছুটা পরিবর্তন আনার কথা ভাবছেন। তবে তার মানে এই নয় যে মানুষের সব কথা শুনবেন এই ফাস্ট বোলার, 'সবাই কোনো না কোনো উপায়ে আপনার সমালোচনা করবেই। মানুষ কী বলছে সেটা হৃদয়ে গেঁথে ফেললে চলবে না। সমালোচক থাকবেই। আপনি যাই করুন না কেন, সবাই একমত হবে না। যতক্ষণ নিজের প্রতি সৎ থাকবেন, আপনি উন্নতি করবেন। অন্যে কী বলছে তাতে বদলালে চলবে না।'