জামালদের তৈরি হওয়ার বার্তা

জেমি ডে
জেমি ডে
>

ঘরোয়া ফুটবল আগেই বাতিল করেছে বাফুফে। তবে আন্তর্জাতিক ফুটবল দিয়ে অক্টোবরে মাঠে ফিরছেন ফুটবলাররা।

অক্টোবরে এএফসি কাপ শুরুর ঘোষণা গতকালই দিয়েছে এশিয়ান ফুটবল ফেডারেশন বা এএফসি। এদিন এএফসির তরফ থেকে এসেছে আরেকটি সুখবর। ফিফার সঙ্গে আলোচনা করে তারা ২০২২ কাতার বিশ্বকাপ ও এশিয়ান কাপের বাছাইপর্বের স্থগিত ম্যাচগুলোর সময়সূচি ঘোষণা করেছে।

নতুন সূচি অনুযায়ী, বিশ্বকাপ বাছাইয়ে বাংলাদেশের পঞ্চম ম্যাচ ৮ অক্টোবর আফগানিস্তানের বিপক্ষে। পুরোনো সূচিতে ম্যাচটির ভেন্যু ছিল সিলেট। যেহেতু সিলেটে ম্যাচ আয়োজনের প্রস্তুতি নিয়েছিল, তাই সেখানেই হতে পারে ম্যাচটি। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে কদিন পর। ১৩ অক্টোবর দোহায় কাতারের বিপক্ষে ফিরতি ম্যাচ। ১২ ও ১৭ শেষ দুটি ম্যাচ ঘরের মঠে  ভারত ও ওমানের সঙ্গে। এবারের বিশ্বকাপ বাছাইয়ে জামাল ভূঁইয়ারা আগের চার ম্যাচে ভারতের সঙ্গে ড্র করে একটি পয়েন্ট পেয়েছে। বাকি তিনটিতে হার। সামনের চার ম্যাচে লক্ষ্য যতটা সম্ভব ভালো কিছু করা।

সেই লক্ষ্যে মাঠে নামতে নামতে আরও চার মাস। তবু হতাশার মধ্যেও খেলা শুরুর ঘোষণাটা আশাজাগানিয়া। জাতীয় দলের স্ট্রাইকার নাবিব নেওয়াজ যেমন বলেন, ‘কীভাবে কী হবে জানি না। তবে কিছুটা হলেও শান্তি পাচ্ছি।’ নাবিব যোগ করেন, ‘কোচ আমাদের প্রস্তুত হতে বলছেন আজ হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ দিয়ে। সবাইকে ফিট থাকার কথাও বলেছেন। সবার খোঁজ রাখছেন।’ এ পর্যন্ত বলে বগুড়ার বাড়ি থেকে নাবিব তাঁর হতাশাও লুকাননি, ‘আমার কাছে সবকিছু এখনো অনিশ্চিতই লাগছে। আজই (গতকাল) ৩৫ জন করোনায় মারা গেছে। ২৫০০–এর ওপরে আক্রান্ত। তাই এখন আরও ভয়ে আছি। খেলাটা মাথায় আনতে পারছি না।’

কোচ জেমি ডের সঙ্গে গত মাসে বাফুফের চুক্তি শেষ। ১৪ আগস্ট থেকে তাঁর সঙ্গে বাফুফের ২ বছরের নতুন চুক্তি হওয়ার কথা। একইভাবে জেমির স্বদেশি জাতীয় দলের সহকারী কোচ স্টুয়ার্ট ওয়াটকিসের সঙ্গেও ২ বছরের চুক্তি সইয়ের অপেক্ষায় বাফুফে। চুক্তি যেহেতু হচ্ছে, তাই বাংলাদেশ দল নিয়ে জেমি-স্টুয়ার্ট একটা পরিকল্পনা করে রাখছেন।

ইংল্যান্ড থেকে গতকাল প্রথম আলোকে জেমি ডে বলেন, ‘খেলা শুরুর ঘোষণাটা অসাধারণ। খুবই ভালো লাগছে। অন্তত আমরা কিছু আশা দেখছি।’ জাতীয় দলের প্রস্তুতি নিয়ে তাঁর কথা, ‘আমি মনে করি অক্টোবরে প্রথম ম্যাচের আগে ৪-৬ সপ্তাহ অনুশীলন করলেই চলবে। অনুশীলনটা আমি চাই বাংলাদেশের বাইরে করতে, যাতে ফুটবলাররা ভালো অনুশীলন সুবিধা পায়।’ যোগ করেন, ‘বসুন্ধরা কিংসের এএফসি কাপের ম্যাচ আছে অক্টোবর-নভেম্বরে। কাজেই কিংসের ফুটবলারদের পাওয়া যাবে না সম্ভবত। আমি ৩৫ জন খেলোয়াড় নিয়ে শুরু করতে চাই ক্যাম্প। এক সপ্তাহ শেষে সেখান থেকে হয়তো কমিয়ে ২৪ জনে আনব।’

অক্টোবরে মাঠে নামার আগে সম্ভব হলে কয়েকটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলার পক্ষে কোচ। সামনে এসব নিয়ে বাফুফেকে একটা পরিকল্পনা তিনি দেবেন। মার্চ-থেকে অক্টোবর, প্রায় ৭ মাস বিশ্রাম হচ্ছে ফুটবলারদের। বরাবর ছুটি বিলাসী জেমি কি এই বিশ্রামে খুশি? না আরও চান? এই প্রশ্নে কাল ঘুরিয়ে উত্তর দেন, ‘আমি মনে করি এই বিশ্রাম ফুটবলারদের সতেজ করবে।’

করলেই ভালো। ৮ অক্টোবর দেশের মাটিতে আফগানিস্তানকে হারানো বিরাট এক চ্যালেঞ্জই বাংলাদেশের জন্য। তাতে উতরে যেতে বাফুফের পরিকল্পনা কী? সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম বলছেন, ‘জাতীয় দলের অনুশীলনসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আমরা কাজ শুরু করছি। সামনে হয়তোবা অগ্রগতির খবর দিতে পারব।’

তবে ফুটবলারদের মনের ভেতরে একটা ভয়, শঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। করোনা পরিস্থিতির উন্নতিই এখন তাদের বড় চাওয়া।