বিশ্বকাপ 'বিক্রি'র কথা না জানানোয় বিপদে পড়তে পারেন শ্রীলঙ্কার মন্ত্রী

এর পর আরও দুটি বিশ্বকাপ চলে গেছে, তবু ভারতের বিশ্বকাপ জয় নিয়ে আলোচনা চলছেই! ফাইল ছবি
এর পর আরও দুটি বিশ্বকাপ চলে গেছে, তবু ভারতের বিশ্বকাপ জয় নিয়ে আলোচনা চলছেই! ফাইল ছবি

বোমাটা আগে ফাটিয়েছিলেন অর্জুনা রানাতুঙ্গা। শ্রীলঙ্কার সাবেক ক্রীড়ামন্ত্রী মাহিন্দানন্দ আলুথগামাগে একই বোমায় আবার সলতে প্রজ্বলন করেছেন। তাঁর দাবি, ভারতের কাছে ২০১১ বিশ্বকাপ ‘বিক্রি করেছে’ শ্রীলঙ্কা। প্রমাণ ছাড়া এমন কথা বলার ঝুঁকিও যে কম না, আলথাগমাগেকে সে কথাই স্মরণ করিয়ে দিলেন শ্রীলঙ্কার এক জ্যেষ্ঠ আইনজীবী।

২০১১ বিশ্বকাপ ফাইনালে ভারতের কাছে ৬ উইকেটে হারে কুমার সাঙ্গাকারার শ্রীলঙ্কা। সে ম্যাচে ধারাভাষ্য দেন শ্রীলঙ্কার বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক রানাতুঙ্গা। ২০১৭ সালে রানাতুঙ্গা সে ম্যাচের ফল নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। আলুথাগমাগে সরাসরি বিশ্বকাপ ‘বিক্রি করা’র অভিযোগ তোলার পর প্রতিবাদ জানিয়েছেন সাঙ্গাকারা ও মাহেলা জয়াবর্ধনে। সাঙ্গাকারা প্রমাণ চেয়েছেন এমন অভিযোগের।

জ্যেষ্ঠ আইনজীবী নিশান প্রেমাথিরত্নে শ্রীলঙ্কান সংবাদমাধ্যম ‘নিউজওয়্যার’কে কাল বলেন, ‘আইসিসির দুর্নীতিবিরোধী নীতিমালা এবং শ্রীলঙ্কান আইন অনুযায়ী কোনো “অংশগ্রহণকারী” নির্বাচকও হতে পারেন কিংবা “দলের সঙ্গে সংযুক্ত অন্য কেউ।” আন্তর্জাতিক ম্যাচে দুর্নীতি ও অসদাচরণ নিয়ে কিছু জানলে তা আইসিসির দুর্নীতি দমন ইউনিটের কাছে জানাতে বাধ্য।’

আলুথগামাগে ২০১০ থেকে ২০১৫ পর্যন্ত ক্রীড়ামন্ত্রী পদে ছিলেন। তিনি বলেছেন, ‘২০১১ বিশ্বকাপ পাতানো হয়েছিল। আমি যা বলেছি, তা জোর দিয়েই বলছি। এমনকি আমি তখনকার ক্রীড়ামন্ত্রী হয়েও কথাটা বিশ্বাস করি। আমি দেশের স্বার্থে বিস্তারিত কিছু বলতে চাই না। ২০১১ সালে ভারতের বিপক্ষে আমরা জিততেই পারতাম কিন্তু ম্যাচটা পাতানো হয়েছিল। আমি দায়িত্ব নিয়ে এ কথা বলছি, এবং এ নিয়ে বিতর্ক হলেও আমি কথা বলতে প্রস্তুত। মানুষ এ নিয়ে চিন্তিত। আমি খেলোয়াড়দের জড়াচ্ছি না। তবে দলের কিছু অংশ ম্যাচ পাতানোর সঙ্গে জড়িত ছিল।’

খেলোয়াড় ছাড়া ক্রিকেট ম্যাচ পাতানো অসম্ভব। সাঙ্গাকারা তাই এ অভিযোগের প্রমাণ চেয়ে বলেন, ‘এ নিয়ে আগে তদন্ত করা হোক, তাহলেই আর এ নিয়ে অযথা জল্পনা কল্পনা করতে হয় না। এখন সেটাই হবে সবচেয়ে ভালো পদক্ষেপ।’

বর্তমানে নবায়নযোগ্য জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা আলুথগামাগেকে তাঁর ঝুঁকির কথাও স্মরণ করিয়ে দেন প্রেমাথিরত্নে, ‘ম্যাচ পাতানোর খবর কিংবা কোনো দুর্নীতির কথা তদন্তের সময় গোপন রাখা আইসিসি ও শ্রীলঙ্কার আইনে অপরাধ। এ অবস্থায় সবচেয়ে ভালো উপায় হলো আইসিসির দুর্নীতি বিরোধী ইউনিটে (আকসু) ব্যক্তিগত পর্যায়ে অভিযোগ করা।’ ম্যাচ নিয়ে সন্দেহ থাকলে আইসিসির দুর্নীতিবিরোধী কমিশনকে সঠিক সময়ে না জানানোয় অপরাধের ভাগীদার যে মন্ত্রী নিজেও, সেটাই মনে করিয়ে দিচ্ছেন এই আইনজীবী।