নিজেদের পিঠ বাঁচাতে 'নতুন জাভি'কে ছাড়ছে বার্সেলোনা

এরই মাঝে আর্থুরকে জুভেন্টাসের জার্সিতে কেমন দেখাবে তা কল্পনা করে নিচ্ছেন সবাই।
এরই মাঝে আর্থুরকে জুভেন্টাসের জার্সিতে কেমন দেখাবে তা কল্পনা করে নিচ্ছেন সবাই।
>

আর্থুর মেলো ও মিরালেম পিয়ানিচ–দুই মিডফিল্ডার ঘর অদল-বদল করছেন, খবরটা আজকের নয়। ফুটবলীয় দিক দিয়ে এই চুক্তিতে বার্সেলোনার তেমন কোনো সুবিধা না থাকলেও এই চুক্তি সম্পাদন করতে তাঁরা কেন মরিয়া, তারই একটা ব্যাখ্যা দাঁড় করিয়েছেন আগামী নির্বাচনে দলটার সভাপতি পদপ্রার্থী ভিক্টর ফন্ত

অথচ এমনটা হওয়ার কথা ছিল না।

দু-তিন বছর ধরেই বার্সেলোনা টাকা খরচ করে যাঁদের কিনছিল, তাঁদের দেখে অন্তত খোলাচোখে মনে হচ্ছিল ক্লাবের স্বর্ণযুগের খেলোয়াড়েরা ফিরে আসছেন নব-নবরূপে। বল পায়ে ফিলিপ কুতিনহোর সৃষ্টিশীলতা বার্সেলোনা ভক্তদের মনে করিয়ে দিয়েছিল আন্দ্রেস ইনিয়েস্তার অবিস্মরণীয় সেসব মুহূর্তকে। উইং দিয়ে ওসমানে দেম্বেলের বিদ্যুৎ–গতির দৌড় দেখে মনে হতো থিয়েরি অঁরি ফিরে এলেন বুঝি।

নেলসন সেমেদোর মধ্যে দেখা গিয়েছিল দানি আলভেসকে ছাড়িয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি। এই মৌসুমের শুরুতে আয়াক্স থেকে ফ্রেঙ্কি ডি ইয়ংয়ের আগমন ইঙ্গিত দিচ্ছিল বর্ষীয়ান সার্জিও বুসকেটসের ক্যারিয়ার-সমাপ্তির। ওদিকে জাভির অভাব পূরণে দলটা হাত বাড়িয়েছিল গ্রেমিওর তরুণ তারকা আর্থুর মেলো'র দিকে।

কিন্তু দুর্ভাগ্য, ফুটবল যে কাগজে-কলমে খেলা হয় না! ক্ষণে ক্ষণে নিজেদের সীমাবদ্ধতার কথা জানান দিয়েছেন কুতিনহো-সেমেদো-দেম্বেলেরা। একই কথা বলা যায় আর্থুরের ক্ষেত্রেও। তবু একটা আশা ছিল, খেলোয়াড়দের বয়স যেহেতু কম, হয়তো আস্তে আস্তে নিজেদের মেলে ধরতে পারবেন। জাভি-ইনিয়েস্তাও যে একদম ক্যারিয়ারের শুরু থেকে আলো ছড়িয়েছিলেন, তা তো নয়!

কিন্তু বার্সেলোনার বোর্ড অত অপেক্ষা করতে রাজি নয়। অন্তত আর্থুরের ক্ষেত্রে তো নয়ই। না হলে পড়িমরি করে ব্রাজিল তারকাকে জুভেন্টাসের কাছে বেচে দেওয়ার চেষ্টা করবে কেন তারা? গতকাল জানা গেছে, সাত কোটি ইউরোর বিনিময়ে ২৩ বছর বয়সী এই তারকাকে জুভেন্টাসের কাছে ছাড়তে রাজি হয়েছে বার্সেলোনা। তাঁর বিকল্প হিসেবে ওই ক্লাব থেকেই মেসিদের নতুন সতীর্থ হিসেবে আসছেন সাত বছরের বড় মিরালেম পিয়ানিচ। গতকাল নিজ নিজ নতুন ক্লাবের হয়ে স্বাস্থ্যপরীক্ষাও শেষ করেছেন এই দুই তারকা। অর্থাৎ, আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসা সময়ের ব্যাপার মাত্র।

ভিক্টর ফন্ত এই চুক্তির মধ্যে খুঁজে পাচ্ছেন গভীর চালাকির কথা। কে এই ভিক্টর ফন্ত? জোসেপ মারিয়া বার্তোমেউর অধীনে থাকা বার্সেলোনা বোর্ডের বিরুদ্ধে ভবিষ্যতে সভাপতি নির্বাচনে দাঁড়াবেন ফন্ত ও তাঁর দল। ফন্তের মনে হয়েছে, নিজেদের পিঠ বাঁচানোর জন্য ও নিজেদের আর্থিক দুর্নীতির কথা ঢাকার জন্য এই চুক্তি করতে আগ্রহী হয়েছে বার্সেলোনা, ‘এই দলবদলের ঘটনা প্রমাণ করে দলের খেলার ধরণ ও ভবিষ্যৎ নিয়ে বর্তমান বোর্ডের কোনো মাথাব্যথা নেই। বছরের পর বছর ধরে ওরা যেসব দুর্নীতি করে এসেছে, সেসব ঢাকা দিতেই ওরা বেশি আগ্রহী। গত বছর ইয়াসপার চিলেসেন ও নেতোর দলবদলের ক্ষেত্রেও একই চাতুরির আশ্রয় নিয়েছিল তারা। ক্লাবের এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে খেলার ধরণ ও কৌশল নিয়ে ভাবছে না তারা। ভবিষ্যতের সম্ভাবনাময় তারকাদের বাদ দিয়ে এমন খেলোয়াড় নিয়ে আসছে, যাঁদের ক্যারিয়ার এখন শেষের দিকে। এটা আবারও প্রমাণ করে, ক্লাবের কর্তাব্যক্তিদের স্বার্থসিদ্ধিই মূল লক্ষ্য।’