আকমল ভাইয়েরা শিকার হয়েছেন অবিচার আর অবহেলার!

আকমল ভাইদের অনেক অভিযোগ পাকিস্তান ক্রিকেট নিয়ে। ছবি: ফাইল ছবি
আকমল ভাইদের অনেক অভিযোগ পাকিস্তান ক্রিকেট নিয়ে। ছবি: ফাইল ছবি

তাঁর ওপর অবিচারই হয়েছে বলে মনে করেন। কোচদের ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দের বলি হয়েছেন বলেই মনে করেন কামরান আকমল। ঘরোয়া ক্রিকেট, এমনকি পাকিস্তান সুপার লিগে (পিএসএল) দুর্দান্ত পারফর্ম করার পরও ফিরতে পারেননি পাকিস্তানের সবুজ জার্সিতে। এর পেছনের কারণ পাকিস্তান দলের সর্বশেষ দুই কোচ তাঁকে নাকি পছন্দ করতেন না।

পিএসএলের ইতিহাসের অন্যতম শীর্ষ রান সংগ্রাহক তিনি। এই উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান এখনো পর্যন্ত এই ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টে ৫৫ ইনিংসে করেছেন ১ হাজার ৫৩৭ রান। দ্রুততম ফিফটির মালিকও তিনি। উইকেটরক্ষক হিসেবে তাঁর আছে ৪৪ শিকার। এর মধ্যে একটা নির্দিষ্ট মৌসুমেই ১২ শিকার, উইকেটরক্ষক হিসেবে তাঁর যোগ্যতাই তুলে ধরছে।

পেশোয়ার জালমির ৩৮ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার পিএসএলের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরিরও মালিক। ২০১৯ সালে কামরান ছিলেন প্রতিযোগিতার সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। করেছিলেন ৩৫৭ রান। ২০১৮ মৌসুমে তাঁর ব্যাট থেকে ৩৮.৬৩ গড়ে এসেছিল আরও বেশি—৪২৫ রান। করোনাভাইরাসের কারণে অসমাপ্ত সর্বশেষ আসরে আগের দুই মৌসুমের মতো না হলেও ৯ ইনিংসে তিনি ২৫১ করেছিলেন। এর মধ্যে ছিল কোয়েটা গ্ল্যাডিয়েটর্সের বিপক্ষে ৫৫ বলে ১০১ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস।

'ক্রিকেট পাকিস্তান' নামের এক ওয়েবসাইটের 'ইনসাইড আউট' নামের এক ভিডিও অনুষ্ঠানে কামরান আকমল তাঁর ব্যাপারে কোচদের 'অবিচারে'র এই কথা তুলে ধরেছেন, 'আমি পিএসএল আর ঘরোয়া ক্রিকেটে গত পাঁচ বছর ধরেই ভালো করছি। কিন্তু তার পরেও আমি পাকিস্তান দলে সুযোগ পাইনি। সম্প্রতি, পাকিস্তান ক্রিকেট দলের দুই কোচ আমাকে একেবারেই পছন্দ করতেন না। সে কারণেই আমাকে জাতীয় দলের সুযোগ দেওয়া হয়নি।'
বিষয়টাকে 'অবিচার' হিসেবেই দেখছেন ২০১৭ সালে শেষবার পাকিস্তান দলে খেলা এই ক্রিকেটার, 'টেস্ট ও টি-টোয়েন্টিতে আমাকে সুযোগ না দেওয়াটা রীতিমতো অবিচার। আমাকে ব্যাটসম্যান হিসেবেও সুযোগ দেওয়া যেতে পারত। ১৮-২০ গড় নিয়ে ম্যাথু ওয়েড যদি (অস্ট্রেলিয়া) দলে ফিরতে পারে, তাহলে এমন পারফরম্যান্সের পরেও আমি নই কেন! আমার গড় তো ৬০-এর কাছাকাছি।'

ছোট ভাই উমর আকমল পাকিস্তান ক্রিকেটের এক আলোচিত চরিত্র। বিতর্কিতও। নানা ধরনের বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের জন্য বারবারই বিতর্কিত হয়েছেন কামরান আকমলের ছোট ভাই উমর। গত এপ্রিলে উমর তিন বছরের জন্য সব ধরনের ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ হয়েছেন জুয়াড়ির তথ্য সংশ্লিষ্টদের না জানানোর জন্য। কামরান অবশ্য তাঁর ভাইয়ের বিতর্কিত ব্যাপারগুলো মেনে নিলেও জানিয়েছেন অবিচার হয়েছে তাঁর ভাইয়ের প্রতিও। উমরকে নাকি ঠিকভাবে দেখভাল করতে পারেননি পাকিস্তানের টিম ম্যানেজমেন্ট, 'মাঠের বাইরের বিতর্ক পাকিস্তান ক্রিকেটে নতুন কিছু নয়। পাকিস্তানের টিম ম্যানেজমেন্ট আর দলের অধিনায়কের উচিত ছিল উমরকে ঠিকভাবে দেখভাল করা। তাঁর বিতর্কিত ব্যাপারগুলো নিয়ে তাঁকে বোঝানো, তাঁর ওপর নজর রাখা, নিয়ন্ত্রণে রাখা। অতীতে ইনজি ভাই (ইনজামাম-উল-হক), শোয়েব আখতার, শহীদ আফ্রিদিদের বেলাতে যে যত্ন ও মনোযোগ দেখা গেছে; উমরের বেলায় সেটা দেখা যায়নি। একটু যত্ন নিলে উমরের গল্পটা অন্যরকম হলেও হতে পারত।'