'মুরালির মতো বৈচিত্র্য শেন ওয়ার্নের ছিল না'

শেন ওয়ার্ন ও মুরালিধরন - একসঙ্গে দুই কিংবদন্তি। ছবি: ক্রিকইনফো
শেন ওয়ার্ন ও মুরালিধরন - একসঙ্গে দুই কিংবদন্তি। ছবি: ক্রিকইনফো

ব্রায়ান লারা না শচীন টেন্ডুলকার? ওয়াসিম আকরাম না ওয়াকার ইউনিস? ব্রেট লি না শোয়েব আখতার?

ফুটবলে যেমন ‘মেসি না রোনালদো’, ‘পেলে না ম্যারাডোনা’, ক্রিকেটেও এমন অনেক প্রশ্ন যুগে যুগে আলোচনা, তর্কের খোরাক জুগিয়েছে। তেমনই আরেকটি প্রশ্ন - মুত্তিয়া মুরালিধরন না শেন ওয়ার্ন?

নব্বইয়ের দশক আর এই শতাব্দীর প্রথম দশক মাতিয়ে রাখা দুই কিংবদন্তি স্পিনারের মধ্যে তুলনায় মাহেলা জয়াবর্ধনে এগিয়ে রাখছেন স্বদেশিকেই। শ্রীলঙ্কার সাবেক অধিনায়কের মতে, ওয়ার্নের চেয়ে মুরালির বলে বৈচিত্র্য বেশি ছিল।

ওয়ার্ন লেগস্পিনার, মুরালি অফস্পিনার— সেদিক থেকে সরাসরি তুলনা হয়তো চলে না। তবে দুজনই নিজ নিজ শিল্পের সবচেয়ে গুণী শিল্পী। ওয়ার্ন তর্কসাপেক্ষে সর্বকালের সেরা লেগ স্পিনার উপাধি পেলে মুরালি সেটি অফস্পিনের। রেকর্ড বইও দুই কিংবদন্তির শ্রেষ্ঠত্বের গান গাইবে। মুরালি যেখানে ১৩৩ টেস্টে রেকর্ড ৮০০ উইকেট নিয়ে ক্যারিয়ার শেষ করেছেন, ৭০৮ উইকেট নিয়ে ওয়ার্ন আছেন তাঁর পেছনেই। দুজনেই বিশ্বকাপ জিতেছেন।

তা অনেক দিন একসঙ্গে খেলার কারণেই কিনা, দুজনের মধ্যে তুলনা টানার প্রসঙ্গে জয়াবর্ধনে এগিয়ে রাখলেন মুরালিকেই। ইএসপিএন ক্রিকইনফোর ভিডিওকাস্টে সঞ্জয় মাঞ্জরেকারের সঙ্গে আলাপে জয়াবর্ধনের বিশ্লেষণ, ‘মুরালি চ্যাম্পিয়ন বোলার ছিলেন। অন্যদের চেয়ে আলাদাভাবে খেলাটাকে দেখতেন। মুরালির যত বৈচিত্র্য ছিল, ওয়ার্নের অত ছিল না। মুরালি জানতেন তিনি কী করছেন, ব্যাটসম্যানকে ধীরে ধীরে ফাঁদে ফেলে, ক্লান্ত করে আউট করায় বিশ্বাস করতেন। একজন ব্যাটসম্যানকে আউট করতে দশ ওভার অপেক্ষা করতে হলে তা-ই করতেন তিনি।’

সেদিক থেকে ওয়ার্নের বোলিংয়ে পার্থক্যটা কী? জয়াবর্ধনের চোখে, ‘ওয়ার্ন আর মুরালির ব্যক্তিত্বের ধরনই আলাদা। ওয়ার্ন রান চেপে রেখে বোলিংয়ের চেষ্টা করতেন, তবে তিনি ‘তুমি এগিয়ে এসে আমাকে মারার চেষ্টা করো, আমি তোমাকে আউট করব’ কৌশলে বেশি খেলতেন। তিনিও সম্ভবত জানতেন যে মুরালির মতো বৈচিত্র্য তাঁর নেই।‘

তবে একটা জায়গায় দুজনকেই এগিয়ে থাকবেন বলে মনে হচ্ছে জয়াবর্ধনের। এ যুগের বোলারদের উইকেটসংখ্যায় তাঁদের দুজনকে ছুঁতে দেখেন না ‘জয়া’। কারণ? এ যুগে বোলাররা নাকি অপেক্ষাকৃত বেশি ভালো ব্যাটসম্যানের মুখোমুখি হচ্ছেন। সেটি অবশ্য ব্যাটিং ইউনিট হিসেবে বোঝাচ্ছেন তিনি। অর্থাৎ একই দলে ভালো ব্যাটসম্যানের সংখ্যা এখন আগের চেয়ে বেশি। জয়াবর্ধনের ব্যাখ্যা শুনুন, ‘এ যুগের বোলাররা তাঁদের পূর্বসূরিদের মতো উইকেট পায় কি না, সেটা দেখার এখনো বাকি আছে। এখনকার বোলাররা আগের চেয়ে ভালো ব্যাটিং ইউনিটের মুখোমুখি হচ্ছে। তাই এখনকার বোলাররা যদি তাঁদের পূর্বসূরিদের মতো উইকেট না পায়, তার মানে এই নয় যে তাঁরা খারাপ বোলার।’

উদাহরণ হিসেবে উইকেটশিকারিদের তালিকাও নিয়ে এসেছেন জয়াবর্ধনে, ‘যদি এখনকার ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশি উইকেট পাওয়া দশ বোলারের দিকে দেখেন, এঁদের সবাই-ই আমার ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে খেলেছেন। মুরালি ছিলেন, ওয়ার্ন, ম্যাকগ্রা, কুম্বলে, হরভজন, আকরাম, ওয়াকার, সাকলায়েন ছিলেন। এঁদের উইকেটের সংখ্যাই এঁদের হয়ে কথা বলে।’