টেন্ডুলকারকে প্রথম দেখায় যা ভেবেছিলেন ওয়াকার

টেন্ডুলকারকে দেখে ওয়াকার ভাবতেই পারেননি তিনিই একদিন ইতিহাস গড়বেন। ফাইল ছবি
টেন্ডুলকারকে দেখে ওয়াকার ভাবতেই পারেননি তিনিই একদিন ইতিহাস গড়বেন। ফাইল ছবি
>টেন্ডুলকার প্রতিভাবান খেলোয়াড়, সেটা জানতেন ওয়াকার ইউনিস। তবে তিনি যে পরে এভাবে বিশ্ব কাঁপাবেন অতোটা ভাবেননি পাকিস্তানি পেসার।

দিনটা দুজনের কেউই কোনো দিন ভুলবেন না। ১৯৮৯ সালের ১৫ নভেম্বর। করাচির জাতীয় স্টেডিয়ামে পাকিস্তানের বিপক্ষে অভিষেক হয়েছিল কোঁকড়া চুলো শচীন টেন্ডুলকারের। পরের বছরগুলোয় যিনি ব্যাটিংয়ের সংজ্ঞাই বদলে দিয়েছিলেন। একই দিনে পাকিস্তানের জার্সিতে অভিষেক হওয়া ওয়াকার ইউনিসও পরে কিংবদন্তিদের তালিকায় নাম লিখিয়েছেন। ওই সময়ের স্কুল পড়ুয়া টেন্ডুলকারকে প্রথম দেখার স্মৃতিটা আজও ভোলেননি ওয়াকার। 

মাত্র ১৬ বছর বয়সে অভিষেক হয়েছিল টেন্ডুলকারের। ওই সময়ের পাকিস্তান দলের বোলিং আক্রমণে ইমরান খান ছাড়াও ছিলেন ওয়াসিম আকরাম ও ওয়াকার। সেদিনের ‌‘কিশোর’ টেন্ডুলকার অসীম সাহসে সামলেছিলেন ওয়াকারের আগুনে বোলিং। যদিও ওয়াকারের একটা ডেলিভারি টেন্ডুলকারের নাকে আঘাত করে। রক্তাক্ত টেন্ডুলকার তারপরও হাল ছাড়েননি। সেদিনের সেই সাহসী টেন্ডুলকারকে দেখে ওয়াকার ভাবতেই পারেননি তিনিই একদিন ইতিহাস গড়বেন।
সম্প্রতি গ্রেটেস্ট রাইভালরি পডকাস্টে পাকিস্তানের সাবেক পেসার বলেন, ‘পুরো ভারতীয় অনূর্ধ্ব-১৯ দলের সবাই বলতো শচীন প্রতিভাবান খেলোয়াড়। ও তখন স্কুলে পড়ে। স্কুল পর্যায়ে ট্রিপল সেঞ্চুরি করেছে। স্কুলে পড়া কেউ কি ট্রিপল সেঞ্চুরি করতে পারে? স্কুল ক্রিকেটে সেঞ্চুরি করাও তো বিরাট ব্যাপার।’
ওয়াকার অবশ্য টেন্ডুলকার সম্পর্কে ধারণা আগেই পেয়েছিলেন, ‘ভারতের সেই পাকিস্তান সফরে আমরা সবাই জানতাম একটা ছেলে আছে যে খুব প্রতিভাবান। তবে ওকে প্রথম দেখায় আমার মোটেও মনে হয়নি যে পরে সেই হয়ে উঠতে যাচ্ছে মহান শচীন টেন্ডুলকার। মাঠে ও মাঠের বাইরে বছরের পর বছর ধরে ও যা করেছে সেটা অবিশ্বাস্য। ওই সময় আমরা ভাবতেও পারিনি যে ও এত নাম করবে। কিন্তু সে তার কঠোর পরিশ্রমের মূল্য পেয়েছে।’
প্রথম টেস্টে ওয়াকারের বলেই আউট হয়েছিলেন টেন্ডুলকার। খুব বেশি রান করতে পারেননি। তবে মাত্র ১৫ রান করলেও ওয়াকার সেদিন টেন্ডুলকারের মাঝে দেখেছিলেন ভবিষ্যতের ঝলক, ‘করাচিতে ছিল প্রথম টেস্ট। আমি ওকে শুরুতেই আউট করি। আমার মনে হয় সে ১৫ রান করেছিল। কিন্তু ওই রানের মধ্যেই সে বেশ কিছু নজরকাড়া অন ড্রাইভ ও স্ট্রেট ড্রাইভ খেলেছিল। সিরিজে পরে সে বেশি রান করেনি। কিন্তু শিয়ালকোটে যে ফিফটিটা করেছিল সেটা ছিল ঘাসে ভরা উইকেট।’
প্রথম তিন টেস্ট ড্র হওয়ায় পাকিস্তান খুব করে চাইছিল যেন শিয়ালকোটে ম্যাচের ফল হোক। এ জন্যই ঘাসের উইকেট বানায় পাকিস্তান। কিন্তু ওই উইকেটেও টেন্ডুলকার যেভাবে খেলেছিল তাতে মুগ্ধতা ছড়িয়ে যায় ওয়াকারের, ‘আমাদের ফল দরকার ছিল। এজন্য ঘাসে ভরা উইকেট বানানো হয়। ও ইনিংসের শুরুর দিকে খেলতে এলো। মাত্র ১৬ বছরের ছেলে গভীর মনোযোগে ব্যাট করছিল। আমার মনে আছে অন্য প্রান্তে ছিল সিধু (নভজোৎ সিং)। পাঁচ সাত মিনিট খেলার পর খোলস ছেড়ে বাইরে এলো ছেলেটা। কি অসাধারণ ব্যাটিং! ওই ফিফটিতেই ও জাত চিনিয়েছিল। আমরা তখনই বুঝে গিয়েছিলাম ও বিশেষ কেউ হতে যাচ্ছে।’