সৌরভকে অপছন্দ করতেন যে ইংল্যান্ড অধিনায়ক

সৌরভ-নাসের, এক সময়ের শত্রু এখন বন্ধু।-ফাইল ছবি।
সৌরভ-নাসের, এক সময়ের শত্রু এখন বন্ধু।-ফাইল ছবি।
>খেলোয়াড়ি জীবনে ভারতের সাবেক অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলিকে পছন্দ করতেন না সাবেক ইংলিশ অধিনায়ক নাসের হুসেইন।

লর্ডসের মাঠে ২০০২ সালের ন্যাটওয়েস্ট ফাইনালের কথা কার না মনে আছে। ইংল্যান্ড-ভারতের সেই ম্যাচকে ভারতীয় ক্রিকেটের বাঁক বদলের ম্যাচ ধরা হয়। টান টান উত্তেজনার ম্যাচে ভারতের জয়ের পর লর্ডসের ব্যালকনিতে জার্সি খুলে উল্লাস করেছিলেন অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলি। ইংলিশ অধিনায়ক নাসের হুসেইনের দৃশ্যটি পছন্দ হওয়ার কথা না।

শুধু এক ঘটনার কারণে নয়। সম্প্রতি ভারতীয় টিভি চ্যানেলে হুসেইন বলেছেন, সৌরভের আগ্রাসী আচরণ নাকি তিনি কখনই পছন্দ করতেন না। হুসেইনের দুই চোখের বিষ ছিলেন গাঙ্গুলি। এর আগেও বেশ কয়েকবার ‘খেলোয়াড়’ সৌরভ সম্পর্কে খোলামেলা মন্তব্য করেছেন হুসেইন। এবার স্টার স্পোর্টসের এক অনুষ্ঠানে বললেন একই কথা, ‘সৌরভ ঠিক এমনই। খেলোয়াড়ি জীবনে তাকে অপছন্দ করতাম না। টসের সময় তার জন্য আমাকে অপেক্ষা করতে হতো। ১০.৩০ মিনিটে টস, আমরা সবাই প্রস্তুত। কিন্তু সৌরভ আসত দেরি করে।’

খেলোয়াড়ি জীবনে সৌরভকে অপছন্দ করলেও খেলা ছাড়ার পর হুসেইন বন্ধু বনে গেছেন বর্তমান ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড প্রধানের। বন্ধুত্ব হওয়ার পর নাকি আসল সৌরভকে চিনেছেন হুসেইন, ‘তার সঙ্গে গত ১০ বছর ধরে ধারাভাষ্যকার হিসেবে কাজ করছি। সে খুবই শান্ত ও ভদ্রলোক। ধারাভাষ্যকার হিসেবেও সে দেরিতে আসে। তবে সে দারুণ মানুষ। আর ক্রিকেটারদের এমনই হওয়া উচিত। যখন খেলা চলবে, তখন আপনি তাকে পছন্দ করবেন না। কিন্তু পরে যখন দেখা হবে, তখন বুঝতে পারবেন যে সে মানুষ ভালো।’

ভারতীর ক্রিকেটের যুগ বদলের পেছনে বড় কৃতিত্ব সৌরভকেই দেন ইংল্যান্ডের হয়ে ৯৬ টেস্ট খেলা হুসেইন। গাঙ্গুলি যুগের আগে ভারতীয় ক্রিকেটারা মাঠের বাইরে ও ভেতরে ছিল নরম-সরম। আগ্রাসী মানসিকতা ছিল না বললেই চলে। সৌরভ ২০০১ সালে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে আসে পরিবর্তন। আগ্রাসী মানসিকতার ক্রিকেটারদের সুযোগ দিয়ে দিয়ে দলে চেহারা পাল্টে দেন তিনি।

হুসেইন বলছিলেন, ‘সৌরভ ভারতকে শক্ত প্রতিপক্ষ হতে শিখিয়েছে। এর আগে দলটা ছিল খুবই প্রতিভাবান। সবাই ছিল মাটির মানুষ। আগে ভারতীয় দলের ক্রিকেটাররা মাঠে এসে ‘‘শুভ সকাল মিস্টার নাসের’’ সুলভ আচরণ করত। কিন্তু সৌরভের দলের বিপক্ষে খেলা ছিল ভিন্ন অভিজ্ঞতা। আপনি জানতেন যে আপনাকে লড়াই করতে হবে। সে নিজেও ছিল আগ্রাসী মেজাজের। দলে যাদের এনেছে তারাও ঠিক তাই। সেটা হরভজন, যুবরাজ বা যেই হোক।’