আইপিএল আয়োজনের লোভে পড়েছে নিউজিল্যান্ডও

কোহলি-রোহিতরা আইপিএল খেলবেন নিউজিল্যান্ডে?
কোহলি-রোহিতরা আইপিএল খেলবেন নিউজিল্যান্ডে?

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ পেছানোর ঘোষণা আগামী সপ্তাহেই আসবে—এমনটাই জানাচ্ছে অস্ট্রেলিয়ার সংবাদমাধ্যম। অস্ট্রেলিয়ায় অক্টোবর-নভেম্বরে অনুষ্ঠিতব্য বিশ্বকাপের ললাটে যে এই লিখনই আছে, তা করোনাভাইরাস বিশ্বকে থামিয়ে দেওয়ার পর থেকেই অনেকটা নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল। আর বিশ্বকাপ না হলে সে সময়ে আইপিএল হবে—ভারতের এই পরিকল্পনার কথাও বাতাসে ভাসছে অনেক দিন হলো।

এখনো আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত আসেনি। বিশ্বকাপ পেছানোর ঘোষণার আগে আসবেও না। কিন্তু আইপিএল শেষ পর্যন্ত হলে সেটি কোথায় হবে? ভারতেই, নাকি অন্য কোনো দেশে? ভারতে করোনা যেভাবে হানা দিয়েছে তাতে সম্ভাব্য আয়োজক হিসেবে শ্রীলঙ্কা ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের নাম এত দিন শোনা যাচ্ছিল। ভারতের ‘অর্থকরী’ টি-টোয়েন্টি ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগটির লাভের গুড় খেতে কে না চায়? শ্রীলঙ্কা ও সংযুক্ত আরব আমিরাত এর আগে আইপিএল আয়োজনের আগ্রহ জানিয়েছে। আজ ভারতের ক্রিকেট নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিসিসিআইয়ের এক কর্মকর্তা জানালেন, আইপিএলের লোভে পড়েছে নিউজিল্যান্ডও। তারাও আয়োজনের আগ্রহ জানিয়েছে।

ভারতে করোনার থাবা দিন দিন আরও জোরাল হচ্ছে। এই মুহূর্তে আক্রান্তের সংখ্যায় যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রাজিলের পরই বিশ্বে তৃতীয় অবস্থানে ভারত। শিগগিরই পরিস্থিতির উন্নতি হবে, সে সম্ভাবনা সামান্যই। এমন অবস্থায় আইপিএল ভারতে হওয়ার সম্ভাবনা কতটুকু? দর্শকশূন্য স্টেডিয়ামে হলেও ভারতে খেলা হওয়া মানে ক্রিকেটারদের জন্য ঝুঁকি থেকেই যায়। বিসিসিআই অবশ্য এখনো ভারতেই টুর্নামেন্টটা আয়োজনের পথ খুঁজছে। একান্তই তা না পারলে তখন বাইরে আয়োজনের কথা ভাববে।

করোনা পরিস্থিতির দিক থেকে নিউজিল্যান্ড বেশ ভালো অবস্থানেই আছে। এই মুহূর্তে দেশটির আক্রান্ত রোগী আছেন মাত্র একজন। বিশ্বে যে কয়েকটি দেশ করোনা সংক্রমণ রোধে দারুণ সাফল্য দেখিয়েছে, তার মধ্যে ভিয়েতনাম ও নিউজিল্যান্ডই সবার ওপরে। লকডাউনের নিয়মকানুনও শিথিল হয়ে আসছে দেশটিতে।

আইপিএল আয়োজনেও আগ্রহ দেখাচ্ছে দেশটি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিসিসিআইয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে তা-ই জানাচ্ছে ভারতের সংবাদ সংস্থা পিটিআই, ‘ভারতে টুর্নামেন্ট আয়োজন করতে সবচেয়ে বেশি চাই আমরা, কিন্তু তা নিরাপদ না হলে আমরা বিদেশে বিকল্প কথা ভাবব। সংযুক্ত আরব আমিরাত ও শ্রীলঙ্কার পর নিউজিল্যান্ডও আইপিএল আয়োজনের প্রস্তাব দিয়েছে।’

শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত যা-ই আসুক, খেলোয়াড়দের নিরাপত্তাই প্রধান বিবেচ্য থাকবে বলে জানিয়েছেন ওই কর্মকর্তা, ‘আমরা সব পক্ষের (সম্প্রচার সংস্থা, ফ্র্যাঞ্চাইজি) সঙ্গে আলোচনায় বসেই সিদ্ধান্ত নেব। খেলোয়াড়দের নিরাপত্তা এখানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এ ব্যাপারে কোনো হেলাফেলা হবে না।’

ভারতে নির্বাচনের কারণে এর আগেও দুই দফা বিদেশে আইপিএল আয়োজিত হয়েছে। ২০০৯ সালে পুরো টুর্নামেন্টই আয়োজিত হয় দক্ষিণ আফ্রিকায়, ২০১৪ সালে টুর্নামেন্টের কিছু অংশ আয়োজিত হয় সংযুক্ত আরব আমিরাতে। এবারও বিদেশে আয়োজনের সিদ্ধান্ত হলে সে ক্ষেত্রে দৌড়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতই এগিয়ে আছে বলে জানাচ্ছে ভারতের সংবাদমাধ্যম।

নিউজিল্যান্ডে আয়োজনের ক্ষেত্রে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াবে সময়ের পার্থক্য। ভারতের চেয়ে সাড়ে ৬ ঘণ্টা এগিয়ে নিউজিল্যান্ড। অর্থাৎ নিউজিল্যান্ড সময় দুপুর সাড়ে ১২টায় কোনো ম্যাচ শুরু হলেও তা ভারতীয় সময় সকাল ৬টায় শুরু হবে। স্বাভাবিকভাবেই টিভি দর্শকদের জন্য তা মোটেই সুবিধাজনক নয়। এক ভেন্যু হতে আরেক ভেন্যুর দূরত্বও একটা বাধা হয়ে দাঁড়াবে। হ্যামিল্টন থেকে অকল্যান্ডে বাসেই যাতায়াত করা গেলেও ওয়েলিংটন, ক্রাইস্টচার্চ, নেপিয়ার বা ডানেডিনে যেতে বিমানভ্রমণের প্রয়োজন পড়বে।