এশিয়া কাপ হলেই তামিমরা অনুশীলনে

পরিস্থিতি ভালো হলে ঈদের পর তামিমদের অনুশীলন শুরু হতে পারে । ছবি: টুইটার
পরিস্থিতি ভালো হলে ঈদের পর তামিমদের অনুশীলন শুরু হতে পারে । ছবি: টুইটার

‘ঈদের পর তাহলে শুরু হচ্ছে আমাদের অনুশীলন?’ মুঠোফোনে কাল বেশ কৌতূহল নিয়ে প্রশ্নটা করলেন বাংলাদেশ দলের এক পেসার। বিসিবি অবশ্য এখনই এ প্রশ্নের সুনির্দিষ্ট উত্তর দিতে পারছে না। অনুশীলন শুরুর আগে তারা যে কটি ‘যদি’, ‘কিন্তু’র দিকে তাকিয়ে, তার মধ্যে এশিয়া কাপ থাকছে সবার আগে। 

করোনাধাক্কায় এ বছর স্থগিত হয়ে গেছে বাংলাদেশের চারটি দ্বিপক্ষীয় সিরিজ। এই চার সিরিজে ছিল আটটি টেস্ট খেলার সুযোগ। বাংলাদেশের সামনে এখন অবশিষ্ট আছে এশিয়া কাপ ও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। অক্টোবর-নভেম্বরে অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠেয় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ভাগ্য যেমন অনিশ্চয়তার সুতোয় ঝুলছে, একইভাবে অনিশ্চিত সেপ্টেম্বরের এশিয়া কাপও। দুটি টুর্নামেন্টের ভবিষ্যৎই হয়তো জানা যাবে এ মাসে। আইসিসি ও এসিসির এ দুই টুর্নামেন্টের গতিবিধি বুঝেই বিসিবি ঠিক করতে চায় তামিম ইকবালদের মাঠে নামানোর সময়।

সেপ্টেম্বরে এশিয়া কাপ না হলে ক্রিকেটারদের মাঠে ফেরাতে বিসিবি তাড়াহুড়া করতে চায় না। বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজাম উদ্দিন চৌধুরী কাল প্রথম আলোকে সেই ইঙ্গিতই দিলেন, ‘আমরা তাকিয়ে আছি আইসিসি ও এসিসির টুর্নামেন্ট দুটির দিকে। এ দুটি টুর্নামেন্টের আগে-পরে আমাদের আর কোনো আন্তর্জাতিক সিরিজ নেই। এ মুহূর্তে পরবর্তী টুর্নামেন্টটির (এশিয়া কাপ) দিকে তাকিয়ে আছি। এটা হলে এক রকম, না হলে আরও কিছুদিন অপেক্ষা করব।’ বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান আকরাম খানও বললেন একই কথা, ‘সামনের এসিসি সভায় কী হয়, আমরা এখন সেটির দিকেই তাকিয়ে।’

গত মাসে এসিসির নির্বাহী সভায় এশিয়া কাপ নিয়ে আশাবাদী হওয়ার মতো আলোচনা হলেও ধীরে ধীরে কমে আসছে এ টুর্নামেন্টের সম্ভাবনা। ভারতের করোনা পরিস্থিতি জটিল হচ্ছে ক্রমেই। টুর্নামেন্ট আরব আমিরাত কিংবা শ্রীলঙ্কা যেখানেই হোক, এ পরিস্থিতিতে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) কোথাও দল পাঠাতে আগ্রহী নয়। ভারত অংশ না নিলে ২০২০ এশিয়া কাপের ভবিষ্যৎ কী, সেটি না বললেও চলে।

এশিয়া কাপ না হলে হয়তো রয়েসয়ে এগোবে বিসিবি। তবে একেবারে হাত-পা গুটিয়েও বসে থাকবে না। বিসিবির চুক্তিবদ্ধ ক্রিকেটারদের নিয়ে ক্যাম্প শুরুর পরিকল্পনা অনেক দিন ধরেই। আকরাম খান বলেছেন, ‘পরিস্থিতি বুঝতে আমরা আরও দশ-পনেরো দিন অপেক্ষা করতে চাইছি। পরিস্থিতি ভালো হলে ঈদের পর অনুশীলন শুরু হতে পারে।’

বিসিবির প্রধান নির্বাহীও বলছেন, করোনা পরিস্থিতির অবনতি না হলে ঈদের পর খেলোয়াড়দের মাঠে ফেরানোর চেষ্টা তাঁরা করবেন। কিন্তু তার আগে ক্রিকেটারদের কাছ থেকে ইতিবাচক সাড়া চান নিজাম উদ্দিন চৌধুরী, ‘আমরা কিন্তু প্রস্তুতি নিয়েই রেখেছি। (সিনিয়র) খেলোয়াড়দের সঙ্গে সভা করছি। এ মুহূর্তে তারা খুব একটা ইতিবাচক নয়। আমাদের সবকিছু খেলোয়াড়কেন্দ্রিক। তাদের মানসিকভাবে প্রস্তুত করতে হবে।’

বিসিবি অবশ্য করোনার মধ্যেই নানা রকম কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। ক্রিকেটারদের আর্থিক সাহায্য দেওয়া থেকে শুরু করে অনলাইনে ফিটনেস ট্রেনিং, কোচিং স্টাফদের সঙ্গে ক্রিকেটারদের নিয়মিত ভার্চ্যুয়াল সভা করা এবং করোনা অ্যাপের মাধ্যমে খেলোয়াড়দের স্বাস্থ্যের খোঁজখবরও রাখা হচ্ছে। সর্বশেষ, চাহিদা অনুযায়ী ক্রিকেটারদের বাসাবাড়িতে জিমনেশিয়ামের ফিটনেস সরঞ্জাম সরবরাহ করারও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কাল মুশফিকুর রহিম মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে এসেছিলেন জিমের কিছু জিনিস নিতেই। বহুদিন পর মিরপুরের সবুজ গালিচায় পা রেখে ভীষণ আপ্লুত মুশফিক। ফেসবুকে লিখেছেন, ‘অসাধারণ এই মাঠকে খুব মিস করছি। একমাত্র সৃষ্টিকর্তাই জানেন কখন আবার অনুশীলন শুরু করতে পারব।’

এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই আজ রাত ৯টায় ১৫ জন খেলোয়াড় নিয়ে ভার্চ্যুয়াল সভায় বসছে ক্রিকেটারদের সংগঠন কোয়াব। অবশ্য খেলা শুরু নিয়ে এর আগেও কয়েকটি সভা করে প্রতিবারই তারা পিছু হটে আসে।