সোফায় শুয়ে কাঁদতেন অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক

নিজের দুঃসময়ের কথা জানালেন পেইন। ফাইল ছবি
নিজের দুঃসময়ের কথা জানালেন পেইন। ফাইল ছবি

অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় দুঃসময়ে হাল ধরেছিলেন টিম পেইন। বল বিকৃতির ঘটনায় টালমাটাল এক অস্ট্রেলিয়া দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। টেস্টে আবারও অস্ট্রেলিয়াকে প্রতাপশালী রূপ এনে দিয়েছেন। এমন একজন ক্রিকেটারই নাকি কিছুদিন আগেও মানসিক চাপে অসহায় হয়ে পড়েছিলেন। একাকী ঘরে বসে কাঁদতেন চাপ সামলাতে না পেরে!

অ্যাডাম গিলক্রিস্টের পর টিম পেইনের হাতেই উইকেট রক্ষকের গ্লাভস তুলে দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল অস্ট্রেলিয়ার। কিন্তু ২০১০ সালে ক্যারিয়ার ধংস করে দেওয়ার মতো চোটে পড়েন পেইন। আঙুলের সে চোটে দুই মৌসুম বসে থাকতে হয়েছিল পেইনকে। এর পরই মানসিক সমস্যা দেখা দেয় তাঁর। এক পডকাস্টে এসে পেইন আজ জানিয়েছেন, 'এমন অবস্থা হয়েছিল, আমি আঘাত পাওয়ার ভয় পেতাম সব সময়। কী করব বুঝতাম না। বল না দেখে আঘাত পাব কি না সে চিন্তা করতাম কিংবা আঘাত পেলে কী হবে তা ভাবতাম। যখন এটা করবেন, তখন খেলা কঠিন হয়ে যায়।'

চোটের সে সমস্যায় শুধু উইকেটরক্ষণ নয় ব্যাটিংয়েও প্রভাব ফেলেছিল, ' আমি লম্বা সময় ধরে রান করতে পারছিলাম না। খেতে পারতাম না, ঘুমাতে পারতাম না। ম্যাচের আগে এত অস্বস্তিতে ভুগতাম, আমার বাস করাই কঠিন হয়ে পড়েছিল।'

এমনকি ক্রিকেট খেলাটাকে ঘৃণা করতে শুরু করেছিলেন অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট অধিনায়ক, 'আমার খেলার সময় এলেই ঘৃণা করতাম। ভাবতাম এর চেয়ে দুনিয়ার অন্য যে কোনো কিছু করা ভালো কারণ, আমি তো ব্যর্থ হবই। কেউ জানত না কীসের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি, বন্ধুরা নয়, এমনকি আমার সঙ্গীও জানত না।'

কতটা ভয়ংকর সময়ের মধ্য দিয়ে গিয়েছেন সেটা জানাতে অকপটে অসহায়ত্বের দিনগুলোর কথা জানিয়েছেন পেইন, 'মনে আছে, যখন আমার বান্ধবী কাজে যেত, আমি ঘরে বসে থাকতাম। সোফায় বসে কাঁদতাম। খুবই অদ্ভুত ও কষ্টকর একটা সময় ছিল, ব্যাখ্যা করা কঠিন। শুধু মনে হতো, মানুষকে হতাশ করছি আমি।'

মনোবিদের সঙ্গে কথা বলে নিজেকে ফিরে পেয়েছেন পেইন। ধীরে ধীরে আবারও খেলায় ফিরেছেন। এবং সবাকে চমকে দিয়ে অস্ট্রেলিয়া দলেও জায়গা করে নিয়েছেন। ২০১৭/১৮ অ্যাশেজে দলে ফিরেই অবশ্য আবার মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছিলেন। কীভাবে সেটা কাটিয়ে উঠেছেন সেটাও জানিয়েছেন পেইন, ' অসাধারণ এক অনুভূতিটা(দলে ফেরার) আবার বদলাতে শুরু করল… মনে হলো এটা ভালো খবর না। আমাকে মানুষের সামনে ব্যাট করতে হবে। লাখ লাখ মানুষ দেখবে। তিন-চারদিন মনে হলো আমি এটা করব না (আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরা)। কিন্তু আবার কিছু মানুষের সঙ্গে কথা বলতাম। বুকের ভার সরে গেল এবং মনে হলো নিজের সর্বোচ্চটা দিই… তাহলেই উপভোগ করতে পারব।'