লিপস্টিক মেখেছিলেন গাভাস্কার

ভারতের সাবেক ব্যাটসম্যান সুনীল গাভাস্কার। ফাইল ছবি
ভারতের সাবেক ব্যাটসম্যান সুনীল গাভাস্কার। ফাইল ছবি
সানডে ক্লাবে সতীর্থদের সঙ্গে আড্ডায় মেতে উঠতেন সুনীল গাভাস্কার। যেখানে ঘটত মজার সব ঘটনা।


সানডে ক্লাবের আড্ডাবাজির কথা মনে পড়লে এখনো রোমাঞ্চিত হয়ে ওঠেন সুনীল গাভাস্কার। মনের অজান্তেই হয়ত বলে ওঠেন, 'আহা! কি মজারই না ছিল দিনগুলো।'
সাবেক ইংলিশ ক্রিকেটার নরম্যান জিফোর্ডের মাথা থেকে বের হওয়া এমন আড্ডার পরিকল্পনা বেশ ভালোভাবেই নিয়েছিলেন ওই সময়ের ক্রিকেটাররা। গাভাস্কার যখন ১৯৭৮ সালে ভারতের অধিনায়কত্ব পেলেন, তখন সতীর্থদের সঙ্গে নিয়ে সানডে ক্লাবের আড্ডার আয়োজন করেন। সেই আড্ডায় একবার লিপস্টিক মাখতে হয়েছিল ক্রিকেটারদের।
সানডে ক্লাবে একবার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন গাভাস্কারের সতীর্থ সন্দ্বীপ পাতিল। তিনি চেয়ারম্যান হওয়ার পর আড্ডায় আসার জন্য নানা রকমের শর্ত জুড়ে দিতেন ক্রিকেটারদের। ড্রেস কোড থাকত ওই সানডে ক্লাবের আড্ডায়।
সম্প্রতি একটি অনুষ্ঠানে এসে সুনীল গাভাস্কার সেই স্মৃতি রোমন্থন করে বলেছেন, ' সন্দ্বীপ পাতিল এই ক্লাবের আদর্শ চেয়ারম্যান ছিল। ও খুব মজার লোক ছিল। ও পরিপাটি পোশাক পরে আসত আর চুল থাকত মাঝখানে সিথি কাটা।'
গাভাস্কার পাতিলকে উদ্দেশ করে বলেন, 'আমার যদ্দূর মনে পড়ে তোমার বাঁ হাতে ছিল একটা সাদা মোজা এবং ডান হাতে ছিল কালো আরেকটা। ওগুলো পায়ে ছিল না। তুমি শার্টটা সামনে বেঁধে এনেছিলে অথবা শার্ট ছাড়াই টাই পরেছিলে।'
ক্লাবের নিয়ম না মানলে বিভিন্নভাবে জরিমানা আদায় করা হতো তখন। গাভাস্কার জানান, তার কাছ থেকেও জরিমানা আদায়ের চেষ্টা করেন সন্দ্বীপ পাতিল। অবশ্য ক্লাবের নিয়ম অনুসারে চেয়ারমানের সঙ্গে একমত না হলে তাঁরা পাতিলের সিদ্ধান্তকে উড়িয়ে দিতে পারতেন। গাভাস্কার জানান, কীভাবে একবার তিনি একটা ফাঁক খুজে বের করেন এবং জরিমানার হাত থেকে নিস্তারের চেষ্টা করেন, ' নির্দিষ্ট দিনের সানডে ক্লাবের আড্ডায় আসার আগে প্রত্যেককে ড্রেস কোডের বিষয়টা জানিয়ে দেওয়া হতো। যদি সেটা কেউ না পরতো তাহলে চেয়ারম্যান জরিমানা করতে পারত। অবশ্য যদি ক্লাবের বাকি সদস্যরা রাজি হলেই জরিমানা আদায় করা হতো। কিন্তু যদি সবাই বিরোধিতা করত তাহলে জরিমানা আদায় হতো না। আমার মনে আছে আমাদের টাই পরে আসতে বলেছিল সে। কিন্তু আমরা খালি বুকে এসেছিলাম। সিঁথি কেটে চুল আচড়ে এবং লিপস্টিক লাগিয়ে এসেছিলাম। অথবা এমন কিছু একটা হবে হয়ত। সে তখন আমাকে দেখে বলল আমার টাই কোথায়? আমি বললাম টাই আছে। তোমার সমস্যা কোথায়?'
এরপর গাভাস্কারকে জরিমানা করার সিদ্ধান্ত নেন সানডে ক্লাবের চেয়ারম্যান সন্দ্বীপ পাতিল। সেই ঘটনাটা বেশ মজা করে বলেছেন গাভাস্কার, 'সে আমাকে জরিমানা করল। বলল, সুনীল গাভাস্কার ভালো পোশাক পরে আসেনি। সে তার টাই পরেনি। এজন্য তাকে জরিমানা করা হয়েছে। আমি বললাম, কেন আমাকে জরিমানা করা হলো। আমি তো টাই পরেছি, তবে এটা আমার শর্টসের নিচে আছে। আমি ওকে বললাম, টাইটা নির্দিষ্ট করে গলায় পরতে তো বলা হয়নি!'
এরপর উল্টো চেয়ারম্যানের জরিমানা করে বসেন গাভাস্কার, 'এরপর আমি বলি যেহেতু নির্দিষ্ট করে কোথাও টাই বাঁধার কথা বলা হয়নি তাই আমাকে জরিমানা করা উচিত হয়নি। ওদের বলি চেয়াম্যানকেই এখন জরিমানা করা উচিত কি না। সবাই একবাক্যে রাজি হলো। এরপর চেয়ারম্যানকে জরিমানা করলাম।'
ওই জরিমানার টাকা সানডে ক্লাবের পরের আড্ডার খাওয়ার জন্য খরচ করা হয়েছিল।