জৈব-সুরক্ষিত ক্রিকেটে সাংবাদিকেরাও 'নিয়ন্ত্রিত'

সাউদাম্পটন টেস্ট কাভার করছেন ডেইলি মেইলের সাংবাদিক পল নিউম্যান। সংগৃহীত ছবি
সাউদাম্পটন টেস্ট কাভার করছেন ডেইলি মেইলের সাংবাদিক পল নিউম্যান। সংগৃহীত ছবি

মাস তিনেক আগেও যা কল্পনা করা যায়নি, সেটিই হয়ে গেল সাউদাম্পটনে। করোনাকালে ইতিহাসের প্রথম 'জৈব-সুরক্ষিত' টেস্ট ম্যাচ খেলে ফেলল ইংল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দর্শকশূন্য স্টেডিয়ামে ক্রিকেট খেলতে গিয়ে চিরাচরিত অনেক কিছুই বিসর্জন দিতে হয়েছে খেলোয়াড়দের, মানতে হয়েছে কত বিধিনিষেধ।

বিধিনিষেধের বেড়াজালে আটকে ছিলেন ম্যাচের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আম্পায়ার, মাঠকর্মী, সম্প্রচার প্রতিষ্ঠানের কর্মী, সাংবাদিকেরাও। স্বাভাবিক সময়ের মতো কিছুই করা যায়নি। সামাজিক দূরত্বের স্বার্থে খেলোয়াড়দের ধারেকাছেও যেতে পারেননি সংবাদকর্মীরা। কথাবার্তা যা কিছু তার সবটাই সারতে হয়েছে দূর থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে।

প্রেসবক্সে সংবাদকর্মীদের অভিজ্ঞতা কেমন ছিল সেটিই নিজের কলামে লিখেছেন যুক্তরাজ্যের দৈনিক ডেইলি মেইলের ক্রীড়া সাংবাদিক পল নিউম্যান। নামটা চেনা চেনা লাগতেই পারে, এই নামের এক তারকা যে একটা সময় মাতিয়ে গেছেন হলিউড।

উপচে পড়া প্রেসবক্সে বসে যার লেখার অভ্যাস সেই নিউম্যানের অন্যরকম অভিজ্ঞতাই হলো। কেমন সেই অভিজ্ঞতা শোনা যাক তাঁর কলমেই, 'আমি এর আগে যে সব টেস্ট কাভার করেছি সেগুলোর সঙ্গে কোনোভাবেই মেলে না এই টেস্ট। এর আগে কখনোই আমাকে স্বাস্থ্যসম্পর্কিত প্রশ্নের ফরম পূরণ করতে হয়নি, প্রতিদিন দুবার তাপমাত্রা মেপেও মাঠে ঢুকতে হয়নি। রোজ বোলের শেন ওয়ার্ন স্ট্যান্ডে আমার সঙ্গী বলতে ছিল ১১ জন লেখক-সাংবাদিক। এর বাইরে খেলোয়াড়সহ বাকি সবার কাছ থেকে দূরেই ছিলাম।'

নিউম্যান জানালেন সাংবাদিকদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণের জন্য বিশেষ ট্র্যাকার বসিয়েছিল ইসিবি, 'আমাদের বিকন ট্র্যাকার দেওয়া হয়। আমরা যেন আমাদের জন্য নির্ধারিত জায়গার বাইরে না যাই সেটি নিশ্চিত করতেই এই ব্যবস্থা। এ ছাড়া টেস্ট চলার সময় কে কার সংস্পর্শে এসেছে সেটিও বের করতে চেয়েছে ইসিবি।'

স্বাভাবিক সময়ের মতোই নিউম্যানদের খাবার সরবরাহ করেছে ইসিবি। তবে এক টেবিলে দুজনের বেশি বসতে পারেননি তাঁরা। নিউম্যান লিখেছেন সাংবাদিকদের কোনো পাব বা রেস্তোরাঁয় যেতে নিষেধাজ্ঞা ছিল, এ ছাড়া গণপরিবহন এড়িয়ে চলতে অনুরোধ করা হয় তাঁদের।

ম্যাচ চলাকালীন সময়ে নিউম্যানদের 'প্রেসবক্সে' মাত্র একজন অতিথি এসেছিলেন। সেই অতিথির নাম রড ব্র্যান্সগ্রভ। ভদ্রলোক রোজ বোলের মালিক হ্যাম্পশায়ার কাউন্টি ক্লাবের চেয়ারম্যান। নিউম্যান জানালেন ব্র্যান্সগ্রভ নিজের নামাঙ্কিত প্যাভিলিয়নেই যেতে পারেননি, কারণ সেখানে প্রবেশাধিকার ছিল না তাঁর।