'আমি কোথাও নেই, আমাকে পাবেন কী করে?

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে দূরে থাকতেই পছন্দ করেন জাতীয় দলের ক্রিকেটার মোহাম্মদ মিঠুন । ফাইল ছবি
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে দূরে থাকতেই পছন্দ করেন জাতীয় দলের ক্রিকেটার মোহাম্মদ মিঠুন । ফাইল ছবি

ভাবতে পারেন, এই সময়ের একজন তরুণ ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম কিংবা টুইটার—কোথাও নেই! বর্তমান তরুণ প্রজন্মের অধিকাংশই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানাভাবে সক্রিয় থাকলেও ব্যতিক্রমও নিশ্চয়ই আছে। তবে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলে খেলা কোনো খেলোয়াড় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে বিচ্ছিন্ন, এমন কাউকে পাওয়া আসলেই কঠিন। মোহাম্মদ মিঠুন সেই আশ্চর্য ব্যতিক্রম!

জাতীয় দল থেকে শুরু করে এমনকি অনূর্ধ্ব-১৫ দলের খেলোয়াড়দেরও ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রামে পাওয়া যায়। কিন্তু খুঁজে দেখুন, মিঠুনকে কোথায় পাওয়া যাবে না! 'আমি তো কোথাও নেই, আমাকে পাবেন কী করে? এসব আমি ব্যবহারই করি না। কেন যেন একেবারেই আগ্রহ পাই না'— মুঠোফোনে হেসে হেসে বলছিলেন মিঠুন। 

৯টি টেস্ট, ২৭ ওয়ানডে ও ১৫ টি-টোয়েন্টি খেলে ফেলেছেন, খেলেছেন দুটি আইসিসির টুর্নামেন্টও। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ছয় বছর কাটিয়ে দেওয়া মিঠুনের একটা পরিচিতি নিশ্চয়ই তৈরি হয়েছে। জাতীয় দলে খেলা বেশরিভাগ ক্রিকেটারের মতো তাঁরও ভক্তকূল তৈরি হয়ে যাওয়ার কথা এতদিনে। আর কে না জানে, সারা বিশ্বেই এখন খেলোয়াড়দের ভক্ত-সমর্থক সংখ্যা, প্রভাব-প্রতিপত্তি পরিমাপের অন্যতম মানদন্ড হয়ে দাঁড়িয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। শুধু নিজের মতামত প্রকাশ, ব্যক্তিগত বিষয় কিংবা আত্মপ্রচারের জন্যই নয়; এর বাণিজ্যিক দিকটি বিবেচনা করেও খেলোয়াড়েরা এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভীষণ সক্রিয়।

এই জায়গাতে মিঠুনের ভাবনা একেবারেই আলাদা, 'এসব মাধ্যমে সক্রিয় থাকতে উৎসাহ দেওয়ার চেষ্টা করে অনেকেই। তাদের বলেছি, আমি যেমন আছি, তেমনই থাকব। অনেক সময় বাণিজ্যিক উদ্দেশে বা অন্য কারণে ভিডিও পোস্ট করতে বলে আমাকে। তাদের বলি, হোয়াটসআপে পাঠিয়ে দিচ্ছি, আপনারা নিজেদের প্ল্যাটফর্মে ব্যবহার করেন। কারও চাহিদা পূরণ করতে আমি অ্যাকাউন্ট খুলতে আগ্রহী নই। এটা একেবারেই আমার ব্যক্তিগত ব্যাপার। আমাকে যদি এটা না টানে, কেন আরেকজনের কথায় ব্যবহার করব?'

মিঠুন নিজে সক্রিয় না থাকলেও তাঁর নামে কিন্তু ফেসবুকে একটি ভেরিফায়েড পেজের খোঁজ মেলে। যেখানে ৩৪ হাজার অনুসারীও আছে। মিঠুন জানালেন, এটি তিনি ব্যবহার করেন না। অবশ্য তাঁকে জানিয়েই তাঁর এক ভক্ত খুলেছে। মিঠুন এই পেজ নিয়ে একেবারেই আগ্রহী নন। এমনকি এটির পাসওয়ার্ডও তাঁর জানা নেই। জানার আগ্রও বোধ করেন না। ওই ভক্তকে অনুরোধ করা আছে, যেন আপত্তিকর কিছু পোস্ট না করা হয়। পেজটা যেন চালানো হয় সাবধানে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সক্রিয় না থাকলেও মিঠুন সবার থেকে বিচ্ছিন্ন নন। মুঠোফোন তো আছেই। যোগাযোগ ঠিক রাখতে হোয়াটসআপ, ই-মেইলই তাঁর মূল ভরসা। ভবিষ্যতেও ফেসবুক বা ইনস্টাগ্রামে যে তাঁর সক্রিয় হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই, সেটি দৃঢ় কণ্ঠেই বলছেন মিঠুন, 'আমার স্ত্রীও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিষ্ক্রিয়। সবাই কোনো না কোনো বিষয়ে অনড় থাকে। আমি না হয় এটাতেই থাকি। তবে কোনো কষ্ট, যন্ত্রণা পেয়ে এটা থেকে বাইরে আছি, তা নয়। ফেসবুকে আমার নামে যদি কিছু পেয়েও থাকেন, মনে করবেন ওটা আমার নয়।'