ওল্ড ট্রাফোর্ডে জিতে সিরিজে ইংল্যান্ড

ওয়েস্ট ইন্ডিজের শেষ উইকেটের পতনের পর উচ্ছ্বসিত ইংল্যান্ড ক্রিকেটাররা। ছবি: এএফপি
ওয়েস্ট ইন্ডিজের শেষ উইকেটের পতনের পর উচ্ছ্বসিত ইংল্যান্ড ক্রিকেটাররা। ছবি: এএফপি

দিনের তখনও ১৫ ওভার খেলা বাকি। উইকেটে ছিলেন কেমার রোচ ও শ্যানন গ্যাব্রিয়েল। আর একটা উইকেট পড়লেই জিতে যাবে ইংল্যান্ড। সাউদাম্পটনে প্রথম টেস্ট হেরে পিছিয়ে পড়া স্বাগতিকেরা ফিরবে সমতায়। টিভি স্ক্রিনে বারবার ভেসে উঠা ক্যারিবীয় কোচ ফিল সিমন্সের হতাশাছন্ন মুখটা দেখেই বোঝা যাচ্ছিল—হার এড়ানোর সুযোগ নেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের। এই পরিস্থিতিতে হারের ব্যবধান কতটা কমিয়ে আনতে পারে ওয়েস্ট ইন্ডিজ, এটাই ছিল দেখার। দ্বিতীয় ইনিংসে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১৯৮ রানে অলআউট হয়ে শেষ পর্যন্ত হেরেছে ১১৩ রানে। সিরিজে ১–১ সমতা।

তবে কাল ওল্ড ট্রাফোর্ডে যেন একটা সময় যেন ফিরে এসেছিল সাউদাম্পটনের শেষ দিনটাই। করোনা মহামারি যুগে প্রথম টেস্টে রান তাড়ায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২৭ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর উইকেটে এসেছিলেন জারমেইন ব্ল্যাকউড। ৯৫ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলে দলের জয় নিশ্চিত করে দিয়ে তবেই বিদায় নিয়েছিলেন ব্ল্যাকউড। ২০০ রানের লক্ষ্য ছুঁয়ে ৪ উইকেটে জিতে সিরিজে এগিয়ে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সেই ব্ল্যাকউড কাল দ্বিতীয় টেস্টের শেষ দিনে যখন উইকেটে এলেন, ৩৭ রানে ৪ উইকেট নেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের। সেখান থেকেই পঞ্চম উইকেটে শামার ব্রুকসকে নিয়ে দারুণ এক জুটি গড়লেন।

৩১২ রানের লক্ষ্যে ছোটা ওয়েস্ট ইন্ডিয়ানরা এবার না জিতলেও ম্যাচ বাঁচিয়ে ফেলতে পারে, এমনটাই যখন সবাই ভাবছিলেন, তখনই ছন্দপতন। বেন স্টোকসের শর্ট বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ তুলে দিলেন ব্ল্যাকউড। বাঁ দিকে কিছুটা দৌড়ে ক্যাচ নিতে কোনো সমস্যাই হলো না জস বাটলারের। তাতে ভাঙল ব্ল্যাকউড-ব্রুকসের ঠিক ১০০ রানের জুটি। ১৩৭ রানে পড়ল পঞ্চম উইকেট। চা-বিরতিটাও এল তৎক্ষণাৎ।'চা খেয়ে' এসেই আবার উইকেট হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শেন ডাউরিচকে 'চশমা' উপহার দিয়ে টেস্ট ক্যারিয়ারের শততম উইকেটটি তুলে নেন ক্রিস ওকস। প্রথম ইনিংসে ৫ বল খেলা ডাউরিচ এবার খেলেছেন মাত্র ২ বল। অধিনায়ক জেসন হোল্ডার ৬২ বলে ৩৫ রান করলেও তা দলে কোনো কাজে আসেনি।উইজডেন ট্রফি পুনরুদ্ধারে মরিয়া ইংল্যান্ড পরশু ওপেনিংয়ে নামিয়ে দেয় বেন স্টোকস ও জস বাটলারকে। বাটলার ০ রানে ফিরলেও স্টোকস ৫৭ বলে ৭৮ রান করে অপরাজিত ছিলেন। ইনিংসে ৩টি ছক্কা মারার পথে বর্তমান সময়ের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে টেস্টে সবচেয়ে বেশি ছক্কার মালিকও হয়ে যান স্টোকস।২ উইকেটে ৩৭ রান নিয়ে দিন শুরু করা ইংল্যান্ড আর একটিমাত্র উইকেট হারিয়েই ১২৯ রানে ইনিংস ঘোষণা করে। যার অর্থ, ম্যাচ জিততে ৩১২ রান করতে হতো কিংবা ড্র করতে ৮৫ ওভার টিকে থাকতে হতো ক্যারিবীয়দের। যার কোনোটিই করতে পারেনি ক্যারিবীয়রা। ৭০.১ ওভার খেলে দ্বিতীয় ইনিংসে তারা অলআউট হয়েছে ১৯৮ রান করে।