রোনালদো-জাদুতে শিরোপার সুবাস পাচ্ছে জুভেন্টাস

আসল সময়ে আবারও জ্বলে উঠেছিলেন রোনালদো। ছবি : এএফপি
আসল সময়ে আবারও জ্বলে উঠেছিলেন রোনালদো। ছবি : এএফপি
>

লাৎসিওকে গত রাতে ২-১ গোলে হারিয়ে টানা নবমবারের মতো ইতালিয়ান লিগ জয়ের ক্ষেত্রে বেশ ভালোভাবেই এগিয়ে গিয়েছে জুভেন্টাস। জোড়া গোল করেছেন পর্তুগিজ তারকা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো

গোটা মৌসুমে লাৎসিও যেভাবে খেলছিল, মনে হচ্ছিল, সিরি’আতে জুভেন্টাসের একাধিপত্য হয়তো এবারই থেমে যাবে, জয়ের মালা পরবে রোমের নীল দলটা। কিন্তু মৌসুম যতই শেষের দিকে এগোচ্ছে, ততই জুভেন্টাস বুঝিয়ে দিচ্ছে লিগ কোনো ছেলেখেলা নয়। এখানে নয় মাসজুড়ে যারা ফর্মে থাকে, যারা লম্বা রেসের ঘোড়া, তারাই যেতে শিরোপা। সেটাই আরেকবার প্রমাণ করছে জুভেন্টাস।

মৌসুমের শেষ দিকে এসে আবারও লিগের অন্যান্য দলের সঙ্গে নিজেদের পার্থক্যটা চোখে আঙুল দিয়ে বুঝিয়ে দিচ্ছে তারা। আর গোটা ক্যারিয়ারের মতো এই বয়সে এসেও ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো বুঝিয়ে দিচ্ছেন, বড় ম্যাচগুলোয় তিনি কতটা ভালো খেলেন। গত রাতে এই পর্তুগিজ তারকার জোড়া গোলেই জয়ের দেখা পেয়েছে তুরিনের বুড়িরা। ২-১ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে মরিসিও সারির দল। লাৎসিওর হয়ে সান্ত্বনাসূচক গোলটা করেছেন স্ট্রাইকার চিরো ইম্মোবিলে।

এই জয় নিয়ে লিগের চার ম্যাচ বাকি থাকতেই দ্বিতীয় স্থানে থাকা ইন্টার মিলানের চেয়ে আট পয়েন্টে এগিয়ে গেল জুভেন্টাস। অর্থাৎ বলেই দেওয়া যায়, অতি আশ্চর্য কোনো ঘটনা না ঘটলে টানা নবমবারের মতো শিরোপা জিততে চলেছে জুভেন্টাসই। আগের দিন রোমার সঙ্গে ২-২ গোলে ড্র করে পয়েন্ট হারিয়েছিল ইন্টার। এ ম্যাচে জিতে আরও এগিয়ে যাওয়ার সুযোগটা নিতে ভুল করেননি রোনালদোরা।

প্রথমার্ধ গোলশূন্য ছিল। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধেই ম্যাচের ব্যাটনটা আস্তে আস্তে নিজেদের হাতে তুলে নেয় জুভেন্টাস। চার মিনিটের এক ছোটখাটো ঝড়ে তছনছ হয়ে যায় লাৎসিও শিবির। ৫১ মিনিটে ডি-বক্সের মধ্যে লাৎসিওর ডিফেন্ডার বাস্তোস অন্যায়ভাবে হ্যান্ডবল করলে পেনাল্টি পায় জুভেন্টাস। সেখান থেকেই গোল করে দলকে এগিয়ে দেন রোনালদো। এই নিয়ে ইতালিয়ান লিগেও পঞ্চাশ গোল হয়ে গেল রোনালদোর। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ, স্প্যানিশ লা লিগা ও ইতালিয়ান সিরি’আতে ন্যূনতম পঞ্চাশ গোল করা একমাত্র তারকা হয়ে গেলেন তিনি। শুধু তা–ই নয়, কিংবদন্তি এসি মিলান স্ট্রাইকার আন্দ্রিই শেভচেঙ্কোকে সরিয়ে দ্রুততম ৫০ গোল করার রেকর্ডেও নাম লিখিয়েছেন রোনালদো। ৫০ গোল করতে শেভচেঙ্কোর লেগেছিল ৬৮ ম্যাচ, রোনালদোর লাগল আরও ৭ ম্যাচ কম। জন হানসেন আর ফেলিসে বোরেলের পর তৃতীয় জুভেন্টাস খেলোয়াড় হিসেবে লিগ মৌসুমে ন্যূনতম ৩০ গোল হয়ে গেল রোনালদোর।

এর ঠিক তিন মিনিট পরেই মাঝমাঠ থেকে লাৎসিও ডিফেন্ডার লুইজ ফেলিপের কাছ থেকে বল নিয়ে দুর্ধর্ষ প্রতি আক্রমণে উঠে যান রোনালদো ও পাওলো দিবালা। দিবালার কাছ থেকে বল নিয়ে দলের ব্যবধান দ্বিগুণ করেন রোনালদো। হয়তো হ্যাটট্রিকও হয়ে যেত তাঁর, যদি একটা হেড ক্রসবারে না লাগত। ৮৩ মিনিটে ডি-বক্সের মধ্যে জুভেন্টাস ডিফেন্ডার লিওনার্দো বোনুচ্চি লাৎসিও স্ট্রাইকার চিরো ইম্মোবিলেকে খুব বাজেভাবে ফাউল করলে পেনাল্টি পায় রোমের নীল দলটা। সেখান থেকে গোল করে মৌসুমেরোনালদোর সমান ৩০ গোল করেন ইম্মোবিলে। সিরি’আর সর্বোচ্চ গোলদাতার তালিকায় তাঁরা দুজনই আছেন শীর্ষে।

তবে শেষমেশ রোনালদোর গোলগুলোই শিরোপা এনে দিচ্ছে, ইম্মোবিলেরগুলো নয়!