রোনালদোকে টপকে গেলেন স্টার্লিং

গোল করার পর সতীর্থদের সঙ্গে স্টার্লিংয়ের উদযাপন। ছবি : এএফপি
গোল করার পর সতীর্থদের সঙ্গে স্টার্লিংয়ের উদযাপন। ছবি : এএফপি
>

গত রাতে ওয়াটফোর্ডকে ৪-০ গোলে উড়িয়ে দেয় ম্যানচেস্টার সিটি। জোড়া গোল করেন উইঙ্গার রহিম স্টার্লিং, একটি করে গোল আয়মেরিক লাপোর্তে ও ফিল ফোডেনের

লিগ কে জয় করবে, সে হিসেব কার্যত শেষ। সিটির দুই বছরের আধিপত্য কাটিয়ে তিরিশ বছর পর এবার লিগ যাচ্ছে লিভারপুলের ঘরে। মৌসুমে সিটি যে দ্বিতীয় হচ্ছে, সেটাও মোটামুটি নিশ্চিত। আগামী মাসে রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়নস লিগে দ্বিতীয় রাউন্ডের মহাগুরুত্বপূর্ণ ফিরতি লেগে নামবে ক্লাবটি, লিগের বাকি ম্যাচগুলোকে তাই সে ম্যাচের প্রস্তুতিই বলা চলে।

আর সে প্রস্তুতিটা বেশ ভালোভাবেই নিয়ে রাখছে সিটি। গত রাতে ওয়াটফোর্ডকে ৪-০ গোলে বিধ্বস্ত করেছে তাঁরা। সদ্য ম্যানেজার নাইজেল পিয়ারসনকে ছাঁটাই করা ওয়াটফোর্ড এই পরাজয়ে আরও খাদের কিনারায় চলে গেছে। ৩৪ পয়েন্ট নিয়ে এখনো অবনমন অঞ্চলেই ঘোরাফেরা করছে তাঁরা।

ম্যাচের ৩১ মিনিটে গোলের খাতা খোলে সিটি। রাইটব্যাক কাইল ওয়াকারের ক্রস নিয়ন্ত্রণে এনে ডান পায়ের বুলেটগতির এক শটে গোল করেন স্টার্লিং। ইংলিশ এই উইঙ্গারকে আটকাতে গোটা ম্যাচেই হিমশিম খেয়েছে ওয়াটফোর্ড। নয় মিনিট পর তাঁকে আটকাতেই পেনাল্টি দিয়ে বসে ওয়াটফোর্ড। স্টার্লিংয়ের পেনাল্টিটা আটকালেও দ্বিতীয়বারের চেষ্টা আর রুখতে পারেননি ওয়াটফোর্ড গোলরক্ষক বেন ফস্টার। দ্বিতীয়ার্ধে একটুর জন্য হ্যাটট্রিক পাননি স্টার্লিং। তাঁর একটি শট ফস্টার আটকে দিলে ৬৩ মিনিটে ফিরতি বল নিয়ে গোল করেন ইংলিশ মিডফিল্ডার ফিল ফোডেন। তিন মিনিট পরেই কেভিন ডি ব্রুইনিয়ার এক দুর্দান্ত ফ্রি-কিকে মাথা ঠেকিয়ে ব্যবধান ৪-০ করে ফেলেন ফরাসি ডিফেন্ডার আয়মেরিক লাপোর্তে।
পুরো ম্যাচ থেকে ওয়াটফোর্ডের একটাই সান্ত্বনা, হয়তো ব্যবধানটা আরও বড় হতে পারত। হয়নি, সেটা ফস্টারের কল্যাণে। রদ্রি, স্টার্লিং, গ্যাব্রিয়েল জেসুস, ডে ব্রুইনিয়ার বেশ কিছু শট আটকেছেন এই তারকা। দুর্ভাগ্য, হার আটকাতে পারেননি।

জোড়া গোল করে দারুণ এক অর্জনে নাম লিখিয়েছেন স্টার্লিং। এই নিয়ে লিগে তাঁর সর্বমোট গোল হয়ে গেল ৮৫। ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোও ইংলিশ লিগে এত গোল করেননি। লিগে ৮৪ গোল করেই পাড়ি জমিয়েছিলেন রিয়াল মাদ্রিদে। স্ট্রাইকার নন, এমন খেলোয়াড়দের মধ্যে লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতার তালিকায় স্টার্লিং এখন চেলসির সাবেক উইঙ্গার এডেন হ্যাজার্ডের পাশে। যে হ্যাজার্ড গত বছরে যোগ দিয়েছেন ওই রিয়াল মাদ্রিদেই। স্টার্লিং-হ্যাজার্ডের সামনে রয়েছেন সাউদাম্পটনের ম্যাট লে টিসিয়ের, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের পল স্কোলস ও রায়ান গিগস, লিভারপুলের স্টিভেন জেরার্ড ও চেলসির ফ্রাঙ্ক ল্যাম্পার্ড।

স্টার্লিংয়ের ফর্মে খুশি হলেও পেপ গার্দিওলাকে পোড়াচ্ছে শিরোপা হারানোর আক্ষেপ, 'গোল করা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু এসব গোলগুলো এখন যথেষ্ট নয়। যখন আমার খেলোয়াড়েরা ব্যক্তিগত লক্ষ্য অর্জন করে আমি তখন অনেক খুশি হই, কিন্তু এটা ভোলার উপায় নেই যে আমরা লিভারপুলের চেয়ে অনেক অনেক পিছিয়ে আছি। এই নিয়ে এবার টানা চার ম্যাচ জিতলাম, এই মৌসুমে প্রথমবারের মতো। গত বার টানা ১৪ ম্যাচ জিতেছিলাম।'

গতবারের মতো টানা ১৪ ম্যাচ জিতলে হয়তো এবারও লিগ শিরোপা যেত গার্দিওলাদের ঘরে!