ধারাভাষ্যে ফিরতে মরিয়া সঞ্জয় মাঞ্জরেকার ক্ষমা চাওয়ার কথাও ভাবছেন

ভারতের সাবেক ক্রিকেটার ও ধারাভাষ্যকার সঞ্জয় মাঞ্জরেকার। ফাইল ছবি
ভারতের সাবেক ক্রিকেটার ও ধারাভাষ্যকার সঞ্জয় মাঞ্জরেকার। ফাইল ছবি

পাঁচ মাস হয়ে গেছে নিজেদের ধারাভাষ্য দল থেকে সঞ্জয় মাঞ্জরেকারকে বাদ দিয়েছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই)। কিন্তু ক্রিকেটে করোনাবিরতিটাও সে সময়েই শুরু হওয়ায় ভারতের সাবেক ব্যাটসম্যানের জীবনযাত্রায় তেমন প্রভাব পড়েনি সেই সিদ্ধান্তের। তবে আগামী মাসেই ফেরার কথা ভারতীয় ক্রিকেটের। সংযুক্ত আরব আমিরাতে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা টি-টোয়েন্টি ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল)। সেই টুর্নামেন্টকে সামনে রেখেই নড়েচড়ে বসেছেন মাঞ্জরেকার। বিসিসিআইকে পাঠানো দুটি ইমেইলে ধারাভাষ্য দলে ফেরানোর অনুরোধ করে লিখেছেন তাঁর ব্যবহারে কেউ ব্যথিত হলে ক্ষমা চাইতে আপত্তি নেই তাঁর।

পাঁচ মাস আগে মাঞ্জরেকার নিজেই বলেছিলেন তাঁকে বাদ দিয়েছে বিসিসিআই। কারণ হিসেবে কিছু ভারতীয় ক্রিকেটারের আপত্তির কথা জানিয়েছিল বিসিসিআই। মাঞ্জরেকার ইমেইলে লিখেছেন কীভাবে তাঁকে বাদ দেওয়ার খবর জানিয়েছিল বিসিসিআই, ‘২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে হঠাৎ করেই একদিন বিসিসিআই টিভির হেড অব প্রডাকশন দেব শ্রিয়ান জানালেন আমাকে ধারাভাষ্য দল থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। আমি সব সময়ই বলে এসেছি বিসিসিআই আমার চাকরিদাতা, আমাকে ধারাভাষ্য প্যানেলে রাখা না রাখা একান্তই তাঁদের ব্যাপার। আমি কখনোই ধারাভাষ্য দেওয়াটাকে অধিকার ভাবিনি।’

এরপরই নিজের ক্ষোভ উগরে দিলেন মাঞ্জরেকার, ‘আমি ভীষণভাবে মর্মাহত! বিশেষ করে যেহেতু এটা আমার জন্য বিশাল এক আঘাত হিসেবে এসেছে। আমি কত দিন বিসিসিআইয়ের অন্যতম প্রধান ধারাভাষ্যকার হিসেবে কাজ করে এসেছি। ধারাভাষ্য, ম্যাচ পরবর্তী পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান, টস, খেলোয়াড়দের সাক্ষাৎকারসহ আরও কত কিছু করেছি। আইসিসির ইভেন্টেও ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেছি ধারাভাষ্য কক্ষে। যাই করেছি ১০০ ভাগ দায়বদ্ধতা থেকে করেছি। এরপর হঠাৎই নিজেকে ধারাভাষ্য দলের বাইরে দেখাটা বিশাল এক ধাক্কা হয়ে এসেছে।’

কথিত আছে ভারতীয় অলরাউন্ডার রবীন্দ্র জাদেজার সঙ্গে দ্বন্দ্বেই চাকরি গেছে মাঞ্জরেকারের। ২০১৯ বিশ্বকাপে জাদেজাকে কাজ চালানোর মতো ক্রিকেটার বলেছিলেন মাঞ্জরেকার। তাতে জাদেজা খেপে গিয়েছিলেন, তাঁর অনেক ভক্তও সমালোচনা করেন মাঞ্জরেকারের।

সরাসরি জাদেজার কথা উল্লেখ না করেই মাঞ্জরেকার লিখেছেন দরকার হলে তিনি ক্ষমা চাইতে প্রস্তুত, ‘যে কারণেই আমাকে বাদ দেওয়া হোক না কেন তাতে পেশাদার হিসেবে আমার আত্মবিশ্বাস টাল খেয়েছে। যদি না বুঝে কাউকে আহত করে থাকি আমি খুশি মনেই সংশ্লিষ্ট পক্ষের কাছে ক্ষমা চাইতে রাজি।’

খেলোয়াড়দের সমালোচনা করাটা কতটা বিপজ্জনক হয়ে উঠেছেন সেটিও লিখেছেন মাঞ্জরেকার, ‘আমরা যদি সব সময় খেলোয়াড়দের প্রশংসা না করি ওই সব খেলোয়াড়ের ভক্তরা ধরে নেন তাঁদের পূজনীয় খেলোয়াড়ের সঙ্গে আমাদের শত্রুতা আছে। ব্যাপারটাকে পেশাগত ঝুঁকি হিসেবেই নিয়েছি আমরা। যারা শুরু থেকেই আমার ধারাভাষ্য শুনে আসছেন তাঁরা জানেন কারও বিরুদ্ধে আমার কোনো খারাপ মতলব নেই। যা বলি অন্তরকে পরিষ্কার রেখেই বলি। আমরা ক্রিকেট নিয়ে বলি। আমার মতামত ভুল হতেই পারে তবে সেগুলো ব্যক্তিগত আক্রমণ কিংবা উদ্দেশ্যমূলকভাবে কিছু নয়। আমার পক্ষপাত শুধু দলীয় ও ব্যক্তিগত উৎকর্ষে।’

নিজের যুক্তির সপক্ষে ইমেইলের সঙ্গে একটি অডিও ক্লিপও সংযুক্ত করেছেন মাঞ্জরেকার। তাঁর মন্তব্য যে ‘ক্ষতিকারক কিছু নয়’, সেটিই পরিষ্কার করতে চেয়েছেন ৪টি টেস্ট সেঞ্চুরির মালিক।