বদলে যাওয়া শান মাসুদ একা টানলেন পাকিস্তানকে
>শান মাসুদের ক্যারিয়ার সেরা ১৫৬ রানের কল্যাণে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে তিন শ ছাড়ানো সংগ্রহ পেয়েছে পাকিস্তান।
কী ছিলেন আর কী হয়ে গেলেন শান মাসুদ! ২০১৬ সালে ইংল্যান্ডে এসে বলে ব্যাট লাগাতে কষ্ট হচ্ছিল এই বাঁহাতির। লাগলেও বল যাচ্ছিল উইকেটকিপার ও স্লিপ ফিল্ডারদের হাতে। ইংলিশ কন্ডিশন, ডিউক বলের সঙ্গে জিমি অ্যান্ডারসন, স্টুয়ার্ট ব্রড, ক্রিস ওকস; এত চ্যালেঞ্জের ভিড়ে যেন হারিয়ে যাচ্ছিলেন এই বাঁহাতি ওপেনার।
চার বছর পর ২০২০ সালের গল্পটা ভিন্ন। কঠোর পরিশ্রমে বদলে ফেলেছেন নিজেকে। টেস্টে বড় রান করার নিজস্ব প্রক্রিয়া খুঁজে বের করেছেন এবং সফলও হয়েছেন। গত চার বছরে সবচেয়ে উন্নতি করা ক্রিকেটারদের তালিকার শীর্ষে এখন ৩০ বছর বয়সী ওপেনারের নাম।
ওল্ড ট্রাফোর্ড টেস্টের প্রথম দুই দিনেই যেমন দেখা গেল বদলে যাওয়া মাসুদকে। ২০১৬ সালের ইংল্যান্ড সফর মাত্র ৩ শতাংশ বল ছেড়ে খেলেছিলেন। ২০২০ সালে এসে বল ছাড়লেন ২০ শতাংশ। বোলিং আক্রমণের কথা চিন্তা করুন? ২০১৬ সালে অ্যান্ডারসন, ব্রড, ওকস ছিলেন। এবার এই তিনজনের সঙ্গে যোগ হয়েছেন আর্চার। মাসুদ প্রত্যেককেই ক্লান্ত বানিয়েছেন। বাধ্য করেছেন ভুল লাইনে বল করতে। শরীর বরাবর বল করলে ফ্লিক, লেগ গ্লান্স ও পুল শটে রান করছিলেন। আর বাঁহাতিদের সহজাত কাট শট তো আছেই। স্পিন বোলিং এলে খেলছেন পা ব্যবহার করে।
আজ মাসুদ দ্বিতীয় দিনের চা বিরতির পর আউট হয়েছেন ক্যারিয়ার সেরা ১৫৬ (৩১৯ বল) রান করে। পাকিস্তানের প্রথম ইনিংস থামে ৩২৬ রানে। বড় কৃতিত্বটা মাসুদকেই দিতে হয়। পাকিস্তানি ওপেনাররা যে সচরাচর ইংল্যান্ডে সেঞ্চুরিই করেন না। সর্বশেষ ইংল্যান্ডে সেঞ্চুরি করেছিলেন সাঈদ আনোয়ার, ১৯৯৬ সালের ইংলিশ গ্রীষ্মে। গত পাঁচ বছরেও খুব বেশি ওপেনার ইংল্যান্ডে টেস্ট সেঞ্চুরি পাননি। পাঁচ বছরে মাসুদের সেঞ্চুরিসহ মোট পাঁচটি সেঞ্চুরি এসেছে ওপেনারদের ব্যাট থেকে।
আজকের অবশ্য গল্পটা ভিন্ন হতে পারত। গতকাল অফ স্পিনার ডম বেসের বলে দুবার জীবন পান মাসুদ। দুবারই উইকেটকিপার জস বাটলারের ভুলে বাঁচেন। এরপর নিখুঁত ব্যাটিং করেছেন মাসুদ। এমন একটি ইনিংসের জন্য ইংলিশ কোচ গ্যারি পালমারকেও হয়তো ধন্যবাদ দেবেন তিনি। পালমারের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে কাজ করে নিজেকে বদলে ফেলেছেন মাসুদ। এই পালমার আবার সাবেক ইংলিশ ওপেনার অ্যালিস্টার কুক ও বর্তমান ইংলিশ ওপেনার ডম সিবলির ব্যক্তিগত কোচ। এই তিনজনই লম্বা ইনিংস খেলায় পটু।