সরফরাজের পানি টানায় খেপেছেন সাবেকরা

পানি আর জুতো হাতে মাঠে ঢুকেছেন ওল্ড ট্রাফোর্ড টেস্টের দ্বাদশ খেলোয়াড় সরফরাজ আহমেদ (ডানে)। অথচ এই সরফরাজই ২০১৭ সালে পাকিস্তানের চ্যাম্পিয়নস ট্রফিজয়ী দলের অধিনায়ক ছিলেন। ছবি: সংগ্হীত
পানি আর জুতো হাতে মাঠে ঢুকেছেন ওল্ড ট্রাফোর্ড টেস্টের দ্বাদশ খেলোয়াড় সরফরাজ আহমেদ (ডানে)। অথচ এই সরফরাজই ২০১৭ সালে পাকিস্তানের চ্যাম্পিয়নস ট্রফিজয়ী দলের অধিনায়ক ছিলেন। ছবি: সংগ্হীত
>সতীর্থ শান মাসুদের জন্য পানি ও জুতো নিয়ে মাঠে ঢোকেন সরফরাজ আহমেদ। পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ককে দ্বাদশ খেলোয়াড় রাখায় টিম ম্যানেজমেন্ট পড়েছে সমালোচনার মুখে।

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম টেস্টে একাদশে জায়গা হয়নি সরফরাজ আহমেদের। পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ককে ড্রেসিংরুমে বসেই সময় কাটাতে হচ্ছে। টেস্টের দ্বিতীয় দিনে অবশ্য মাঠে ঢুকেছিলেন সরফরাজ। দলের দ্বাদশ খেলোয়াড় সরফরাজ পানি আর জুতা হাতে মাঠে ঢোকেন পাকিস্তানের ইনিংসের ৭১তম ওভারে। ওপেনার শান মাসুদের জন্যই পানি টেনে এনেছিলেন তিন সংস্করণেই এক সময়ে পাকিস্তানকে নেতৃত্ব দেওয়া সরফরাজ। দৃশ্যটা ভালো লাগেনি পাকিস্তানের দুই সাবেক তারাকা শোয়েব আখতার ও রশিদ লতিফের। এই ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও উঠেছে সমালোচনার ঝড়।

পাকিস্তানের সাবেক গতিতারকা শোয়েব আখতারের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া, ‘দৃশ্যটা দেখতে মোটেও ভালো লাগেনি। করাচির একটা ছেলেকে দিয়ে এমন একটি কাজ করানো ভুল। যে ছেলেটা পাকিস্তানকে চার বছর নেতৃত্ব দিয়েছে এবং দেশের জন্য চ্যাম্পিয়নস ট্রফি জিতেছে, তাকে দিয়ে আপনি এমন কাজ করাতে পারেন না। আপনি তাকে দিয়ে জুতো টানিয়েছেন। ও যদি নিজের জন্যও সেটা করত তাহলেও ওকে থামানো উচিত। ওয়াসিম আকরাম কখনো আমার জন্য মাঠে জুতা বয়ে আনেনি।’

শোয়েব খেপেছেন সরফরাজের ওপরও। তাঁর কথার মর্মার্থ এমন কাজ সরফরাজ করতে গেলেন কেন! শোয়েব তো পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়কের ব্যক্তিত্ব নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন, ‘ওর এমন কাজে এটাই প্রমাণ হয় যে সরফরাজ একজন নিরীহ ও দুর্বল মানুষ। ও যেভাবে জুতা টেনেছে, ঠিক সেভাবেই পাকিস্তানের অধিনায়কত্ব করেছে। এই কারণেই মিকি আর্থার (সাবেক কোচ) সব সময় ওর ওপর ছড়ি ঘোরাত। জুতা টানাকে আমি সমস্যা হিসেবে দেখছি না। কিন্তু একজন সাবেক অধিনায়ক কখনো তা করতে পারেন না।’

পাকিস্তানের আরেক সাবেক ক্রিকেটার রশিদ লতিফ চটেছেন টিম ম্যানেজমেন্টের ওপর, ‘আমির, ওয়াহাবের মতো সিনিয়র খেলোয়াড়েরা একাদশের বাইরে থাকলে খেলার পোশাকও পরত না। ওরা ট্র্যাকস্যুট পরত। এটা কোনো টিম স্পিরিট হতে পারে না। কিন্তু এটা সরফরাজের উদারতা। কারণ ও খেলাটাকে খুব ভালোবাসে। এটা হওয়া উচিত নয়।’

যদিও বিষয়টাকে মোটেও অন্যভাবে দেখছেন না পাকিস্তানের আরেক সাবেক অধিনায়ক ও বর্তমান কোচ মিসবাহ উল হক, ‘এসব নিয়ে শুধু পাকিস্তানেই আলোচনা হয়। আমিও দ্বাদশ খেলোয়াড় ছিলাম। অধিনায়ক থাকা অবস্থায় অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে একটা ম্যাচে মাঠের বাইরে ছিলাম। এসব কাজে লজ্জার কিছু নেই।’

এমন কাজের জন্য সরফরাজের প্রশংসাই ঝরছে মিসবাহর কন্ঠে, ‘সরফরাজ অসাধারণ একজন মানুষ ও খেলোয়াড়। ও জানে এটা একটা দলীয় খেলা। অন্য খেলোয়াড়েরা ওই সময় বাইরে অনুশীলন করছিল। তাই যে ওই সময় বসে ছিল সেই সাহায্য করেছে। এটা কাউকে অসম্মান করার বিষয় নয়। আসলে সরফরাজ এতে কিছু মনেই করেনি। তাছাড়া এটা দলীয় সংহতিরও একটা উদহারণ।’