রোনালদো ভ্যালেন্সিয়ায় খেলতে রাজি হয়েছিলেন

জুভেন্টাসের পর্তুগিজ ফরোয়ার্ড ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। ফাইল ছবি
জুভেন্টাসের পর্তুগিজ ফরোয়ার্ড ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। ফাইল ছবি

গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর রহস্য ফাইল উন্মোচনের সঙ্গে ফুটবলের এসব ঘটনার বেশ মিল আছে। দেখা যায় কোনো ঘটনার বহু বছর পর তা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র পকাশ করে গোয়েন্দাসংস্থাগুলো। তেমনি ফুটবলেও মাঝে-মধ্যে শোনা যায়, আর্সেনালে যোগ দিতে পারতেন জ্লাতান ইব্রাহিমোভিচ কিংবা রিয়াল মাদ্রিদে দেখা যেতে পারত লিওনেল মেসিকে!

শেষ পর্যন্ত দুইয়ে দুইয়ে চার না মেলাতেই এসব দলবদল আলোর মুখ দেখেনি। ঠিক এমনই এক খবর বেরিয়েছে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকে নিয়েও। ভ্যালেন্সিয়ার সাবেক ক্রীড়া পরিচালক আমেদেও কারবোনির দাবি, ২০০৬ সালে স্প্যানিশ ক্লাবটিতে যোগ দিতে রাজি হয়েছিলেন জুভেন্টাস তারকা।

রোনালদো তখন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের তারকা। ওয়েন রুনির তাঁর ক্লাব সতীর্থ। কিন্তু ২০০৬ বিশ্বকাপ কোয়ার্টার ফাইনালে ইংল্যান্ড-পর্তুগাল ম্যাচের পর থেকেই ইউনাইটেডে শেষ দেখতে পাচ্ছিলেন রোনালদো। সেই বিশ্বকাপে রুনির লাল কার্ড দেখায় বড় ভূমিকা ছিল পর্তুগিজ তারকার। তারপর থেকেই ইউনাইটেড সমর্থক থেকে ক্লাবের অনেকেই ফুঁসে উঠেছিলেন রোনালদোর বিরুদ্ধে।

তখন রোনালদোকে ইংল্যান্ড থেকে উড়িয়ে আনতে প্রয়োজনীয় আর্থিক ব্যবস্থা করে ফেলেছিল ভ্যালেন্সিয়া। কারবোনি রোনালদোকে মেস্তায়ায় নিয়ে আসার চেস্টা করেছিলেন সে সময়। সম্প্রতি কারবোনি তখনকার কথাই বলেছেন, ‘ঠিক সময়েই ভ্যালেন্সিয়ায় এসেছিলাম। তখনকার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, সামাজিক উন্নতির বড় অংশ পাচ্ছিল ভ্যালেন্সিয়া। তাকে (রোনালদো) আনতে আর্থিকভাবে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল। এমনকি স্পনসর কোকাকোলা ও নাইকির সঙ্গে আলাপও সেরে রাখা হয়েছিল।’

কারবোনি যোগ করেন, ‘রোনালদো তখন বছরে নিট ১০ মিলিয়ন ইউরো আয় করছি। ভ্যালেন্সিয়ার মতো ক্লাবের জন্য যা অনেক। এরপর আমরা এমন এক পর্যায়ে পৌঁছালাম যখন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সঙ্গে বনিবনা হচ্ছিল না রোনালদোর। ২০০৬-০৭ মৌসুমে ভ্যালেন্সিয়া এ বোমা ফাটানোর প্রহর গুণছিল আর সই করাতে তার সম্মতিও পেয়েছিলাম।’

রোনালদোর এজেন্ট হোর্হে মেন্দেজের সই করা চুক্তিপত্র নিয়ে কাজ করছিলেন কারবোনি। কিন্তু শেষে এসে তীরে আর তরী ভেড়ানো যায়নি। কারবোনির ভাষায়, ‘শেষ পর্যন্ত চুক্তিটি বাস্তবতার মুখ দেখেনি।’এর ৩ বছর পর স্পেনেরই ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদে নাম লেখান রোনালদো। কিংবদন্তি হয়ে সেখান থেকে এখন জুভেন্টাসে খেলছেন পাঁচবারের ফিফা বর্ষসেরা ফুটবলার।

রুনির সঙ্গে সেই ঘটনাটি নিয়ে সব সময়ই আত্মপক্ষ সমর্থন করেছেন রোনালদো। তাঁর কথা—ওই আচরণে কোনো দোষ ছিল না। ইংল্যান্ডে ফেরার পর তাঁকে ঘৃণা না করে সমর্থন দেওয়া উচিত ছিল। কিন্তু বিরূপ প্রতিক্রিয়া পাওয়ার পর ২০০৬ জুলাইয়ে তিনি বলেছিলেন, ‘সম্ভবত আমার ম্যানচেস্টার ছাড়ার সময় হয়েছে। পরিস্থিতি ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে খেলার পক্ষে নেই। কোথায় যাব তা ঠিক করব দুই–তিন দিনের মধ্যেই। সব সময় বলে এসেছি স্পেনে খেলতে চাই। ম্যানচেস্টারে কেউ আমার পক্ষে দাঁড়ায়নি। যদিও আমি কারও কোনো ক্ষতি করিনি।'

রোনালদো এমন কথা বলার পরও ইউনাইটেড তাঁকে ধরে রাখতে পেরেছিল। ২০০৯ সালে দলবদলে সেই সময়ের রেকর্ড ট্রান্সফার ফিতে রিয়ালে যোগ দেন তিনি।