গার্দিওলা, কী কথা জিদানের সাথে

খেলা শেষ হয়েছে একটু আগে। খেলোয়াড়েরা মাঠ ছাড়লেও থেকে যান পেপ গার্দিওলা ও জিনেদিন জিদান। বেশ কিছুক্ষণ আলাপ চলে দুজনের। ছবি: টুইটার
খেলা শেষ হয়েছে একটু আগে। খেলোয়াড়েরা মাঠ ছাড়লেও থেকে যান পেপ গার্দিওলা ও জিনেদিন জিদান। বেশ কিছুক্ষণ আলাপ চলে দুজনের। ছবি: টুইটার

ছবিটা আসলে কল্পনা মানস সমর্থকদের জন্য। দুজন দুই দলের দ্রোণাচার্য। মাঠের লড়াইয়ে একজনকে হারতেই হতো। তা ফয়সালা হওয়ার পর যে ছবিটা দেখা গেল সেটাই সম্ভবত ফুটবলের ভেতরকার চিত্র। মাঠের খেলা মাঠেই রেখে টাচলাইনের বাইরে একান্তে আলাপ। বন্ধু, কী খবর বলো!

না, পেপ গার্দিওলা যে জিনেদিন জিদানের বন্ধু তা শোনা যায়নি। ফুটবলীয় প্রজ্ঞা ও সাফল্যের জন্য একে-অপরের প্রতি শ্রদ্ধা ও আন্তরিকতার অদৃশ্য ‘চুম্বক’ কাল চ্যাম্পিয়নস লিগ শেষ ষোলো ম্যাচ শেষে কাছে টেনেছিল দুজনকে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জিদান-গার্দিওলার এই আলাপের ছবি এখন ভাইরাল। কেউ বলছেন ছবিটা ফ্রেমে বাঁধিয়ে রাখার মতো। কারও আবার প্রতিদ্বন্দ্বিতার বরফ গলেনি। জীবনানন্দের ভাষায়, কী কথা তাহার সাথে!

হাজার হোক কাল রাতে তো দুই কিংবদন্তি ছিলেন একে-অপরের প্রতিদ্বন্দ্বী। শেষ আটে ওঠার লড়াইয়ে রিয়াল মাদ্রিদ কোচ জিদানকে বিদায়ের টিকিট ধরিয়ে দেন ম্যানচেস্টার সিটি কোচ গার্দিওলা। এমন সব ম্যাচের পর সাধারণত নিয়মরক্ষার খাতিরে হাত মিলিয়ে থাকেন দুই দলের কোচ। নিচু স্বরে কিছু একটা বলা সর্বোচ্চ সৌজন্য।

কিন্তু জিদান-গার্দিওলা এক কাঠি সরেস। ম্যাচ শেষে পরিচিতি সৌজন্যবোধটুকু দুজনের মধ্যে ছিল। এরপর খেলোয়াড়েরা মাঠে ছেড়ে চলে গেলেন ড্রেসিং রুমে। ইতিহাদে ফাঁকা গ্যালারি, শূন্য মাঠের এক প্রান্তে ট্রলির ওপর বসে থাকা গার্দিওলার বেশ কিছুক্ষণ একান্তে কথা বলেন জিদান।

প্রায় ১৫ মিনিটের মতো স্থায়ী হয় দুজনে কথার লেনা-দেনা। স্বাভাবিকভাবেই আগ্রহ তৈরি হয়। কী কথা হচ্ছিল দুজনের? খেলার কৌশল নিয়ে? রাফায়েল ভারান-এর অবিশ্বাস্য ভুল নিয়ে? নাকি কার কোথায় পরবর্তী গন্তব্য? এমন অনেক কিছুই হয়তো মাথায় এসেছে ফুটবলপ্রেমীদের।

অন্য প্রান্ত থেকে ক্যামেরায় দেখা যায় কথা প্রসঙ্গে সম্ভবত জিদানকে কিছু একটা বোঝাচ্ছিলেন গার্দিওলা। ছবি: টুইটার
অন্য প্রান্ত থেকে ক্যামেরায় দেখা যায় কথা প্রসঙ্গে সম্ভবত জিদানকে কিছু একটা বোঝাচ্ছিলেন গার্দিওলা। ছবি: টুইটার

ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনেও জীবনানন্দের লাইনটি উঠল। গার্দিওলার কাছে জানতে চাওয়া হয়, জিদানের সঙ্গে কী কথা হচ্ছিল? সিটি কোচের জবাব, ‘লিগ জয়ের জন্য তাকে অভিনন্দন জানাই। পরিবারের খোঁজ খবর নিলাম, এ ছাড়া তেমন কিছু না। আশা করি একদিন আমরা খাবার টেবিলে আলাপ করতে পারব।’

সে তো বটেই। দুজনেই ফুটবলে অন্যতম সেরা কোচ। এক ফ্রেমে ধরা পড়লে তা নিয়ে আলোচনা হবেই। সেটি তাঁরা নিজেরাও জানেন। আর তাই কথা বলার ফাঁকে ফাঁকে ক্যামেরাও খেয়াল করেছেন দুজন। কাল রাতে দুই কোচের এই আলাপের ছবিটা কিন্তু আরও অনেক কিছুই মনে করিয়ে দেয়। দিন শেষে ফুটবল কিন্তু স্রেফ খেলাই। আর এই খেলার ছক নির্মাতারাও ‘অতিমানব’ হয়েও রক্ত-মাংসের মানুষ। মাঠে যতই শত্রু-শত্রু খেলা চলুক ডাগ আউটের বাইরে সম্পর্কটা সৌহার্দ্যের।