তথ্য-উপাত্ত-পরিসংখ্যানের মালিকানাও চান ইংলিশ ফুটবলাররা

ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ফুটবলাররা রয়েছেন ‘প্রজেক্ট রেড কার্ড’এর সঙ্গে। ছবি: টুইটার
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ফুটবলাররা রয়েছেন ‘প্রজেক্ট রেড কার্ড’এর সঙ্গে। ছবি: টুইটার

মাঠে লড়েন ফুটবলাররা। তাঁদের পারফরম্যান্স যাচাই-বাছাই হয় মাঠের বাইরে। গোলসংখ্যা থেকে কে কত জোরে দৌড়ালেন, পাস থেকে ট্যাকলসংখ্যা—সবকিছুই এখন বের করা হয়। খেলোয়াড়দের এসব তথ্য-উপাত্তের যথেচ্ছ ব্যবহার করছে বাজি ধরার প্রতিষ্ঠানগুলো। জুয়াড়িরা যেন খেলোয়াড়দের খোলনলচে জেনে বাজি ধরতে পারেন সেই ব্যবস্থা।

আবার অনলাইনে ফ্যান্টাসি গেমেও ঠিক একই চিত্র। খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্সের তথ্য-উপাত্ত সরবরাহ করা হয় গেমারদের জন্য। সেসব দেখেই নিজেদের দল সাজান তাঁরা। এসব নিয়ে এত দিন অন্তত দৃশ্যমান কোনো সমস্যা ছিল না। কিন্তু ইংল্যান্ডে এবার বোধ হয় হতে যাচ্ছে। ফুটবলাররা মনে করছেন, মাঠের পারফরম্যান্সে যেসব তথ্য-উপাত্ত বেরিয়ে আসছে সেসবের স্বত্ব তাঁদের। এসব পরিসংখ্যান ব্যবহার করতে চাইলে খেলোয়াড়দের অনুমতি লাগবে।

ক্রিকেটে এমন কিছু নেই। বিরাট কোহলি কিংবা মুশফিকুর রহিমের ব্যাটিংয়ের ওয়াগন হুইল, প্রতিপক্ষ বোলারদের সঙ্গে তাঁর হেড টু হেড—এসবের স্বত্ব খেলোয়াড়দের নয়। কিন্তু ইংলিশ ফুটবলে এ চেষ্টা চলছে। বর্তমান ও সাবেক ফুটবলার মিলিয়ে সংখ্যাটা প্রায় ৪০০। মাঠে পারফরম্যান্সের তথ্য-পরিসংখ্যানের স্বত্ব নিজেদের দখলে রাখতে আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন তারা। অনেকেই এদের মধ্যে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ফুটবলার। বেশির ভাগের আপত্তি বাজি ধরার ও গেমিং প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর। তারা খেলোয়াড়দের অনুমতি নেওয়ার ধার ধারে না বলেই এই প্রচেষ্টা। ‘প্রজেক্ট রেড কার্ড’ নামে একটি সংঘ খুলে তার ছায়াতলে একত্র হয়েছেন এসব ফুটবলার।

কার্ডিফ সিটির সাবেক ম্যানেজার রাসেল স্লেডের প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল স্পোর্টস ডাটা অ্যান্ট টেকনোলজি গ্রুপ (জিএসডিটি) এই প্রজেক্টের দায়িত্বে আছে। তাদের সাহায্য করছে আইনি প্রতিষ্ঠান এলিয়াস। ইংল্যান্ডভিত্তিক এ প্রতিষ্ঠানের পরিচালক রিচার্ড ডাটন সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘পারফরম্যান্সের তথ্য-উপাত্ত নিয়ে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে। অনেক তথ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান বাজি ধরার ও গেমিং প্রতিষ্ঠানের কাছে এসব হস্তান্তর করছে বাজি ধরা ও খেলা তৈরির জন্য। এটা ছবির স্বত্ব থেকে আলাদা।’

বিষয়টি বোঝাতে ক্রিকেটের উদাহরণ টানলেন ডাটন, ‘জফরা আর্চারের কথাই ধরুন। সে একই রান আপ নিয়ে ঘণ্টায় ৯৫ মাইল থেকে ৭৫ মাইল গতিবেগেও বল করে। তার ওভারের পঞ্চম বলটা একটু ধীর গতির হয়। অনেক প্রতিষ্ঠান এসব তথ্য বিশ্লেষণ করে বের করার চেষ্টা করছে কতগুলো বাউন্ডারি হবে কিংবা কতগুলো উইকেট পড়বে। ব্যক্তি হিসেবে খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্সের নানা তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করায় সমস্যা নেই। সমস্যা হলো এখান থেকে যখন টাকা আয় করছেন। বিষয়টি অনেকটা এ রকম, আপনি বাজারে যাওয়ার কথা বলে কারও কাছ থেকে গাড়ি ধার করলেন। এরপর ট্যাক্সি সার্ভিসে কাজে লাগিয়ে টাকা উপার্জন করলেন। দুটোর মৌলিক নীতি একই।’