বার্সার ঘরের 'শত্রু বিভীষণ' হবেন কুতিনহো?

বার্সার ঘরের শত্রুক বিভীষণ হয়ে উঠবেন কুতিনহো? ছবি: এএফপি
বার্সার ঘরের শত্রুক বিভীষণ হয়ে উঠবেন কুতিনহো? ছবি: এএফপি

ফিলিপ্পে কুতিনহোর গোটা ক্যারিয়ারটাই যেন উত্থান-পতনে ভরা।

ব্রাজিলের দল ভাস্কো দা গামার যুব বিভাগে আলো ছড়ানোর পর নজর কেড়েছিলেন ইতালিয়ান ক্লাব ইন্টার মিলানের। এতটাই ভালো খেলতেন যে, তৎকালীন ইন্টার কোচ রাফায়েল বেনিতেজ বলেই দিয়েছিলেন, ‘ইন্টারের ভবিষ্যৎ হলো কুতিনহো।’ সে আশা পূরণ হয়নি। খুব দ্রুতই কুতিনহো দেখে ফেলেছিলেন মুদ্রার উল্টোপিঠ। ইন্টারে আলো ছড়াতে না পেরে স্প্যানিশ ক্লাব এসপানিওলে যোগ দিয়েছিলেন, ধারে। মরিসিও পচেত্তিনোর অধীনে নিজেকে আবারও নতুন করে খুঁজে পান এই ব্রাজিল তারকা। ফলাফল, লিভারপুলের মতো দল ছোঁ মেরে নিয়ে যায় তাকে।

কুতিনহোর লিভারপুল-গল্পটা শুধুই উত্থানের, পেছনে ফিরে না তাকানোর। প্রথমে ব্রেন্ডন রজার্স, ও পরে ইয়ুর্গেন ক্লপের অধীনে নিজেকে পুরোপুরিভাবে মেলে ধরতে পারেন এই তারকা। ইংলিশ লিগের দর্শকেরা মুগ্ধ হয় কুতিনহোর সাম্বা-জাদুতে।

এরপরেই দৃশ্যপটে বার্সেলোনার আগমন। বিশ্বের অন্যতম দামি খেলোয়াড় বানিয়ে নিজেদের দলে কুতিনহোকে নিয়ে আসে বার্সা। এমনিতেই লাতিন আমেরিকার ফুটবলাররা বার্সা-রিয়ালের মতো আকর্ষণ অগ্রাহ্য করতে পারেন না, কুতিনহোও পারেননি। পাড়ি জমিয়েছিলেন স্বপ্নের ক্লাবে।

কিন্তু সে স্বপ্নভঙ্গ হতে সময় লাগেনি। নিজেকে বারবার হারিয়ে খুঁজেছেন কুতিনহো। বার্সা তাঁর কাছ থেকে যেমন পারফরম্যান্স আশা করেছিল, তেমন খেলতে পারেননি। ফলে এক রকম ব্রাত্য হয়ে বায়ার্ন মিউনিখে ধারে যোগ দিয়েছেন এই তারকা। সেখানেও যে ভাগ্যের উন্নয়ন ঘটেছে, বলা যায় না। মূল একাদশের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে এখনো গড়ে তুলতে পারেননি কুতিনহো। শোনা যাচ্ছে, আগামী দলবদলে হয়তো বায়ার্ন বা বার্সা নয়, আর্সেনাল হতে পারে কুতিনহোর ঠিকানা।

ভবিষ্যৎ নিয়েই যেখানে এমন অনিশ্চয়তা, সেখানে আরেকটা দোলাচলে পড়তে যাচ্ছেন এই ব্রাজিল তারকা। নিজের মূল ক্লাব বার্সেলোনার বিপক্ষে আজ হয়তো মাঠে নামতে হতে পারে তাঁকে। বায়ার্ন-বার্সা চ্যাম্পিয়নস লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে মুখোমুখি হচ্ছে যে!

মূল একাদশের অংশ না হলেও, কুতিনহোর ওপর বড় আশা বায়ার্নের। আশা, হয়তো নিজের মূল ক্লাব বার্সাকে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় করে দিয়ে বর্তমান ক্লাব বায়ার্নের চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়ের স্বপ্ন আরেকটু উজ্জ্বল করবেন কুতিনহো। একই সঙ্গে নিজের ক্যারিয়ারের আরেকটি উত্থানপর্ব শুরু করবেন। এমনটা আর কেউ নয়, আশা করছেন খোদ বায়ার্ন মিউনিখের জার্মান মিডফিল্ডার টমাস মুলার, ‘ফিলিপ আমাদের জন্য একটা চাবিকাঠি। ও আমাদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ হবে আজকের ম্যাচে। ও আমাদের দলের একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ। আমরা সবাই জানি, খেলোয়াড় হিসেবে ওর মান সম্পর্কে। মূল একাদশ অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ, তবে ম্যাচের মধ্যে বিকল্প খেলোয়াড় হিসেবে যারা বেঞ্চ থেকে আসবেন, তারাও কম গুরুত্বপূর্ণ নন। তারাও ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দিতে পারেন। গত রাতে পিএসজির ম্যাচটা দেখুন, সেটাই কিন্তু হয়েছে।’

 আগের সেমিফাইনালে আটালান্টার বিপক্ষে নেইমার একা গোল করতে না পারলেও, পরে বেঞ্চ থেকে এসে কিলিয়ান এমবাপ্পে ও এরিক-মাক্সিম চুপো মোতিং দলের চেহারা পালটে দেন। জয়সূচক গোলটাও আসে এই দুজনের 'পা' ধরেই।

মুলার কী এমন কিছু একটা কুতিনহোর কাছ থেকে প্রত্যাশা করছেন? হয়তো!