২৯২ করেই ভারত মনে করেছিল জিতে গেছে

বিসিসিআই প্লাটিনাম জয়ন্তী ম্যাচে দুই দলের অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলী ও ইনজামাম উল হক। ছবি: টুইটার
বিসিসিআই প্লাটিনাম জয়ন্তী ম্যাচে দুই দলের অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলী ও ইনজামাম উল হক। ছবি: টুইটার

ক্রিকেটে পাকিস্তানকে নিয়ে নিশ্চিত করে কিছুই বলা যায় না। এই ম্যাচে দুর্দান্ত খেলছে তো পরের ম্যাচে অসহায় আত্মসমর্পণ। দেড় শ রান টপকে যেতে ঘাম ছুটছে আবার তিন শ রান তাড়া করে জয় তুলে নিচ্ছে অনায়াসে। সহজ কথায় পাকিস্তান ‘অননুমেয়’। এর সুবাদে অনেক দলেরই কপাল পুড়েছে। তেমনই এক ঘটনার কথা জানালেন পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক ইনজামাম-উল-হক।

২০০৪ সালে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের ৭৫ বছর পূর্তি (প্লাটিনাম জুবিলি) উপলক্ষে কলকাতার ইডেন গার্ডেনসে পাকিস্তানকে নিয়ে মহাসমারোহে একটি ওয়ানডে আয়োজন করে বিসিসিআই। পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটারদের অতিথি করে আনা হয়েছিল এ ম্যাচে। ইমরান খান থেকে ছিলেন ভারতের সাবেক অধিনায়কেরাও। প্রথম ইনিংসের পর মাঠ প্রদক্ষিণ করানো হয় তাঁদের। সে যাই হোক এ ম্যাচ নিয়েই সেই স্মৃতিচারণ করেছেন ইনজামাম। তাঁর ভাষায়, আয়োজকদের আত্মবিশ্বাস এতটাই ছিল যে প্রথম ইনিংস শেষে ট্রফিতে তারা ভারতের নামও লিখে ফেলেছিলেন।

সেই ম্যাচ নিয়ে আগে বলা যাক। ভারত আগে ব্যাট করে ৬ উইকেটে ২৯২ রান তোলে। ৫৩ রান করেন বীরেন্দর শেবাগ। ছয়ে নামা যুবরাজ সিংয়ের ব্যাট থেকে আসে ৬২ বলে ৭৮। সে ম্যাচে নেতৃত্ব দেওয়া ইনজামাম জানান, ইডেনে তার আগে কখনো এত রান তাড়া করে কেউ জেতেনি। সম্ভবত এ আত্মবিশ্বাস থেকেই ভারতে জয়ী ধরে ট্রফিতে দলটির নাম লিখে রেখেছিলেন আয়োজকেরা।

ইনজামাম নিজের ইউটিউব চ্যানেলে বলেন, ‘বিসিসিআইয়ের প্লাটিনাম জয়ন্তী উপলক্ষে পাকিস্তানকে নিমন্ত্রণ করেছিল ভারত। দারুণ আয়োজন ছিল। পাকিস্তানের সাবেকেরা, রাজনীতিবিদ, ইমরান খানও ছিলেন। ভারতের সব অধিনায়ককে নিয়ে এসেছিল বিসিসিআই। প্রথম ইনিংস শেষে তাদের মাঠ প্রদক্ষিণ করানো হয়।’ ম্যাচ নিয়ে পাকিস্তানের কিংবদন্তি এ ব্যাটসম্যানের স্মৃতিচারণ, ‘ম্যাচে খুব চাপ ছিল। ওখানে ২৯৩ রান তার আগে তাড়া করে কেউ জিততে পারেনি। মনে আছে, সে ম্যাচের বিরতির সময়ই প্লাটিনাম জয়ন্তী ট্রফিতে তারা আগেই ভারতের নাম লিখে রেখেছিল। খুব ভালো দলের জন্যই তারা এত আত্মবিশ্বাস দেখিয়েছিল। এর আগে যেহেতু এত রান তাড়া করতে কেউ জিততে পারেনি তাই উদ্‌যাপনটা মধ্যাহ্নভোজেই শুরু হয়।’

কিন্তু অন্য কিছু ভেবে রেখেছিলেন সালমান বাট ও ইনজামাম। ওপেনার সালমান বাটের কাছ থেকে আসে ১০৮ রানের ইনিংস। মাঝে ৭৫ রানের ইনিংস খেলেন ইনজামাম। ফিফটি আসে শোয়েব মালিকের ব্যাট থেকেও। পাকিস্তানের ইনিংসের স্মৃতিচারণ করেন ইনজামাম, ‘মাত্র এক ম্যাচ হওয়ায় চাপ ছিল। দ্বিতীয় বড় চাপ ছিলেন ইমরান। ড্রেসিং রুম থেকে ম্যাচ দেখছিলেন তিনি। সালমান ব্যাট করছিল আমার সঙ্গে। মাংসপেশিতে টান লেগেছিল তার। এক সতীর্থ মাঠে এসে জানাল আমার জন্য বার্তা আছে। ভাবলাম, অধিনায়ক তো আমি, বার্তা পাঠাবে কে! সে জানাল, ইমরান ভাই বলেছেন সালমান হ্যামস্ট্রিং নিয়ে সমস্যায় পড়েছে। মাঠের বাইরে এসে চিকিৎসা নিয়ে আবার ফিরে যাক। আমি সালমানকে ফেরত পাঠাই। এরপর সে এসে সেঞ্চুরি তুলে নেয়।’

পাকিস্তান ম্যাচটা ১ ওভার হাতে রেখে জিতেছিল ৬ উইকেটে। ইডেন গার্ডেনসের দর্শক নিয়ে ইনজামাম বলেন, ‘কলকাতায় লাখখানেক মানুষ ম্যাচটা দেখেছিল। ঘরের দলের সমর্থনে তারা প্রচুর চিৎকার চেঁচামেচি করেছে। ম্যাচের আগে আমাদের অনুশীলন দেখতে আসত ১৫ থেকে ২০ হাজার মানুষ।’