'কালো' হওয়ায় তাঁকে বাদ দিয়েছিলেন গ্রায়েম স্মিথ?

গ্রায়েম স্মিথের বিরুদ্ধে বর্ণবাদের অভিযোগ তুলেছেন থামি সোলেকিলে। ছবি: এএফপি
গ্রায়েম স্মিথের বিরুদ্ধে বর্ণবাদের অভিযোগ তুলেছেন থামি সোলেকিলে। ছবি: এএফপি

বর্ণবাদ নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটে চলছে অস্থিরতা। একের পর এক কৃষ্ণাঙ্গ ক্রিকেটার অভিযোগ তুলছেন বর্ণবৈষম্যের। মাখায়া এনটিনির মতো ১০১ টেস্ট খেলা ক্রিকেটার পর্যন্ত দুঃখ করে বলেছেন এক সময় নাকি কেবল ‘কালো’ হওয়ার কারণে দলের মধ্যে তিনি একাকিত্বে ভুগতেন। ক্যারিয়ারের শেষ দিকে নাকি তাঁকে অন্যায়ভাবে দল থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিল। অভিযোগের সর্বশেষ তিরটা ছুড়েছেন থামি সোলেকিলে। তাঁর অভিযোগ সাবেক অধিনায়ক ও বর্তমানে দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক গ্রায়েম স্মিথের বিরুদ্ধে। ২০১২ সালে মার্ক বাউচার যখন চোখে আঘাত পেয়ে ক্যারিয়ারের শেষ দেখলেন তখন স্মিথই নাকি বর্ণবৈষম্যের কারণে দলে থাকা সত্ত্বেও সোলেকিলেকে মাঠে নামাননি!

এই সোলেকিলে দক্ষিণ আফ্রিকান ঘরোয়া ক্রিকেটে ম্যাচ পাতানোর অভিযোগে ১২ বছরের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছেন পরবর্তী সময়ে। কিন্তু ২০১২ সালের ঘটনাকে তিনি দেখছেন ‘অবিচার’ হিসেবেই। তাঁর কথা, দলে বিশেষজ্ঞ উইকেটরক্ষক হিসেবে তিনি থাকলেও বাউচার আহত হওয়ার পর ইংল্যান্ড সফরে স্মিথ কেন এবি ডি ভিলিয়ার্সকে উইকেটরক্ষকের দায়িত্ব দেবেন।

স্বাভাবিকভাবেই স্মিথ বিব্রত সোলেকিলের এই অভিযোগের তিরে। দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক হিসেবে নয় একজন সাবেক ক্রিকেটার ও অধিনায়ক হিসেবে তিনি সোলেকিলের অভিযোগের জবাব দিয়েছেন। প্রোটিয়াদের ২০০৩ সাল থেকে ২০১৪ পর্যন্ত টানা ১০৮টি টেস্ট ও ১৪৯টি ওয়ানডেতে নেতৃত্ব দিয়েছেন স্মিথ। টানা অধিনায়কত্বের বিশ্ব রেকর্ডধারী স্মিথ তাঁর বিপক্ষে বর্ণবৈষম্যের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলেছেন, অধিনায়ক হিসেবে সবাইকে খুশি রাখা সম্ভব না।

এক বিবৃতিতে স্মিথ বলেছেন, ‘আমি আমার জীবনে অনেক খেলোয়াড়কে দেখেছি যারা নিজেদের অধিনায়কদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন অবিচারের। এই অভিযোগের মুখে পড়েছেন স্টিভ ওয়াহর মতো অধিনায়কও।’ কেবল সোলেকিলে নয়, শন পোলক কিংবা ল্যান্স ক্লুজনারের মতো ক্রিকেটারকে বাদ দেওয়ার মতো অপ্রিয় কাজও অধিনায়ক হিসেবে করতে হয়েছে স্মিথকে, ‘পোলক কিংবা ক্লুজনারকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত আমাকে নিতে হয়েছে। দুটিই ছিল খুব আবেগময় সিদ্ধান্ত। কঠিন সিদ্ধান্ত। দুজনই দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটের কিংবদন্তি হিসেবে বিবেচিত।’

স্মিথ নিজেও কিছুটা অবিচারের শিকার হয়েছেন বলে মনে করেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি মেনে নিয়েছেন ব্যাপারগুলো দলের স্বার্থেই। সোলেকিলের প্রতি পূর্ণ সহমর্মিতা রয়েছে তাঁর। তিনি স্পষ্ট করেই বলেছেন, সোলেকিলেকে বাদ দেওয়ার ব্যাপারে কোনো প্রকার বর্ণবৈষম্য বা এ জাতীয় কিছু ছিল না। পুরো বিষয়টি নির্বাচকদের সঙ্গে আলোচনা করেই করা হয়েছে। তাই সোলেকিলের বাদ পড়ার বিষয়টি তাঁর ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়ার ব্যাপারটি ঠিক নয়।