একটা শঙ্কা নিয়েই খেলা দেখতে বসব

সেমিফাইনাল। সামনে হল্যান্ড। হারলেই স্বপ্নের সমাধি। কী হবে সাও পাওলোতে? আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপস্বপ্ন টিকে থাকবে, নাকি হল্যান্ডেই শেষ বিশ্বকাপযাত্রা!
না, আর ভাবতে পারছি না। বিশ্বকাপ ফাইনালের এত কাছে এসেও আর্জেন্টিনা ফিরে যাবে, সেটা কল্পনা করতেও আমার কষ্ট হয়। তার পরও একটা শঙ্কা নিয়েই খেলা দেখতে বসব দ্বিতীয় সেমিফাইনালে।
শঙ্কার কারণ আর কিছুই না, প্রতিপক্ষ হল্যান্ড। রোবেন বিশ্বকাপের শুরু থেকেই ভালো খেলছেন। কী তাঁর গতি, কী তাঁর ক্ষিপ্রতা! এখন স্নাইডারও ফর্মে। শেষ দুই ম্যাচে দুর্দান্ত খেলেছেন। আর ফন পার্সি তো অসম্ভবকে সম্ভব করা এক স্ট্রাইকার। এই ত্রয়ী তাঁদের পুরো ফর্মে থাকলে আর্জেন্টিনার জন্য দুঃস্বপ্নের এক ম্যাচ হয়ে উঠতে পারে বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সেমিফাইনাল।
তবে আর্জেন্টিনা কিছুটা স্বস্তিতে থাকতে পারে এই ভেবে যে রোবেন-ফন পার্সিরা ফিনিশিংয়ে গিয়ে গোলমাল করে ফেলছেন। তাঁদের একটা খারাপ দিনই পারে আর্জেন্টিনার মুখে হাসি ফোটাতে। আর যদি তাঁরা থাকেন ফর্মে, আর্জেন্টিনার জন্য দারুণ এক চ্যালেঞ্জ হবে এই ম্যাচ।
চ্যালেঞ্জে বেশি পড়তে হবে আর্জেন্টিনার রক্ষণভাগকে। তবে আশার কথা দ্বিতীয় রাউন্ড ও কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচে তারা ভালো খেলেছে। সেমিফাইনালেও আর্জেন্টিনার রক্ষণ সেই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারলে ফাইনালের আশা করাই যায়। তবে একই সঙ্গে আক্রমণও চালাতে হবে ক্ষুরধার। মেসির একার দল হয়ে থাকলে হবে না আর্জেন্টিনাকে। অবশ্য চোট কাটিয়ে এই ম্যাচে আগুয়েরো ফিরবেন বলে শুনছি। ডি মারিয়ার অনুপস্থিতিতে এটা ভালো খবর। আগের ম্যাচে তো দেখলাম ডি মারিয়া উঠে যাওয়ার পর আর্জেন্টিনার খেলা কেমন এলোমেলো হয়ে গেল। মাঝমাঠে ডি মারিয়ার জায়গা কে নেবে সেটাই চিন্তার।
আমি চাই আর্জেন্টিনা দল হয়ে খেলুক। তবে একই সঙ্গে আমি তাকিয়ে থাকব আমার প্রিয় খেলোয়াড় মেসির দিকেও। হল্যান্ড যত ভালো দলই হোক মেসির ছোট্ট একটা পাস বা একটা ফ্রি-কিকই পারে ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দিতে। এই বিশ্বকাপে শুরু থেকে এখন পর্যন্ত মেসি তাঁর স্বরূপে আছেন। আমার আশা, সেমিফাইনালেও আমরা সেই মেসিকেই দেখব যেই মেসিকে আর্জেন্টিনা চায়। আক্রমণভাগ যদি গোলের ভালো সুযোগ তৈরি করে এবং সেগুলো কাজে লাগায়, একই সঙ্গে রক্ষণভাগ যদি পারে রোবেন-ফন পার্সিদের আক্রমণগুলো ঠেকিয়ে দিতে, ফাইনালে তাহলে ইনশাআল্লাহ আর্জেন্টিনাকেই দেখব আমরা।
তবে আবারও বলি, এই হল্যান্ড দুর্দান্ত। রোবেন-স্নাইডার-ফন পার্সিরা হয়ে উঠতে পারেন আতঙ্কের নাম। আর্জেন্টিনার ভবিষ্যৎ তখন কী হবে আমি জানি না। তবে সাও পাওলোতে একটা ভালো ম্যাচ হবে, এটা নিশ্চিত।