মোহামেডানের টানা চার

ছয় আসরে পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন। মহিলা ক্রিকেট লিগের শিরোপা জেতাটা যেন অভ্যাস বানিয়ে ফেলেছে মোহামেডান। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আবাহনীকে হারানোর পর কাল মিরপুর শেরেবাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ট্রফি হাতে উচ্ছ্বাসে ভাসল মোহামেডান মহিলা ক্রিকেট দল l প্রথম আলো
ছয় আসরে পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন। মহিলা ক্রিকেট লিগের শিরোপা জেতাটা যেন অভ্যাস বানিয়ে ফেলেছে মোহামেডান। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আবাহনীকে হারানোর পর কাল মিরপুর শেরেবাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ট্রফি হাতে উচ্ছ্বাসে ভাসল মোহামেডান মহিলা ক্রিকেট দল l প্রথম আলো

আবাহনী আসলে হেরেছে মোহামেডানের ব্যাটার রুমানা আহমেদের কাছেই। ক্যারিয়ারের তৃতীয় সেঞ্চুরি (১০০) করে টসে হারা মোহামেডানের রানটাকে তিনিই নিয়ে গেছেন দুই শর ওপর। ৪০ ওভারের ম্যাচটা বলতে গেলে সেখানেই শেষ। 

মহিলা ক্রিকেট লিগে ছয়বারের ফাইনালে এই প্রথম আবাহনীকে পেয়েছিল মোহামেডান। জমজমাট এক ফাইনালেরই আশা করেছিলেন ক্রিকেটাররা, কিন্তু কোথায় কী? আবাহনীকে হেসেখেলেই হারিয়েছেন সালমা খাতুনেরা। গ্যালারিতে বসে জাতীয় মহিলা দলের কোচ জানাক চাম্পিকা গামাগে দেখলেন দুই দলের এশিয়াডগামী খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্স। 

রুমানা আহমেদ
রুমানা আহমেদ

মোহামেডান প্রথমে ব্যাট করে ৭ উইকেটে তোলে ২০৪ রান। ইনিংসের শুরুতে মোহামেডান ২৬ রানের মধ্যে হারিয়ে ফেলে আয়শা, সাথিরা ও ইতির উইকেট। এরপর থেকেই রুমানার ব্যাটে তাদের ঘুরে দাঁড়ানো । রুমানা তাহেরার সঙ্গে প্রথমে চতুর্থ উইকেটে গড়েন ৬১ রানের জুটি। তাহেরা ১৯ রানে রানআউট হলে উইকেটে আসেন অধিনায়ক সালমা। কিন্তু মাত্র ৩ রানে সালমাকে ফেরান জাহানারা। এরপর তাজিয়াকে সঙ্গী করে ষষ্ঠ উইকেটে দ্বিতীয় দফায় ৮১ রানের জুটি গড়েন রুমানা। ইনিংসের পাঁচ বল বাকি থাকতে জাহানারার বলে বোল্ড হওয়ার আগে খুলনার মেয়ে পেয়ে যান কাঙ্ক্ষিত সেঞ্চুরি। ৯১ বলে ১৫টি চারে সাজানো ১০০ রানের ইনিংসে ছিল না কোনো ঝুঁকিপূর্ণ শট।

২০৫ রানের লক্ষ্যে খেলতে নামা আবাহনীর উইকেট পড়েছে নিয়মিত বিরতিতে। একই সঙ্গে রানের গতিটাও বেঁধে রেখেছিল মোহামেডান। পুরো লিগে আলো ছড়ানো লতা মন্ডলের ব্যাটই যা একটু হেসেছে। ৭৮ বলে লতা করেন সর্বোচ্চ ৫৪ রান। শেষ পর্যন্ত ৪০ ওভারে ৭ উইকেটে ১২৭ রান তুলতে পারে আবাহনী।

৮ ম্যাচে সর্বোচ্চ ৩০০ রান করেছেন লতা, নিয়েছেন সর্বাধিক ১৮ উইকেট। স্বাভাবিকভাবেই সিরিজ সেরার পুরস্কার উঠেছে তাঁর হাতে। তবে ফাইনালে দল হারায় ব্যক্তিগত অর্জনটাকে তিনি উপভোগ করতে পারছিলেন না, ‘আমাদের লক্ষ্য ছিল চ্যাম্পিয়ন হওয়া। কিন্তু পারিনি বলে খুব খারাপ লাগছে।’ মোহামেডানের সাফল্যে  তাৎক্ষণিকভাবে খেলোয়াড়দের দুই লাখ টাকা বোনাস দেওয়ার ঘোষণা দেন ক্লাবের ডিরেক্টর ইন চার্জ লোকমান হোসেন ভূঁইয়া। 

মোহামেডান: ৪০ ওভারে ২০৪/৭  (রুমানা ১০০, তাজিয়া ২০, তাহেরা ১৯, সাথিরা ১৩; জাহানারা ৩/৩৪, লতা ১/৩৮, কুবরা ১/২৫)। আবাহনী: ৪০ ওভারে ১২৭/৭ (লতা ৫৪, শারমিন আক্তার ২২, মনতাহা ১৫, শারমিন সুলতানা ১০; সালমা ৩/১৮, ইতি ৩/৩২, সাথিরা ১/২২)। ফল: মোহামেডান ৭৭ রানে জয়ী। ম্যাচ সেরা: রুমানা আহমেদ। সিরিজ সেরা: লতা মন্ডল।