টেন্ডুলকারের ভিভ-আক্ষেপ

ভিভ রিচার্ডসের সঙ্গে শচীন টেন্ডুলকার ষ ফাইল ছবি
ভিভ রিচার্ডসের সঙ্গে শচীন টেন্ডুলকার ষ ফাইল ছবি

তাঁর পরবর্তী প্রজন্মের অসংখ্য ক্রিকেটারের আদর্শ তিনি। আদর্শ অনেক সমসাময়িকেরও। তাঁকে ভালোবেসে ক্রিকেট ভালোবেসেছেন কোটি কিশোর-তরুণ। আরও অনেক প্রজন্ম হয়তো বেড়ে উঠবে তাঁকে আদর্শ মেনেই। কিন্তু এই শচীন টেন্ডুলকারেরও তো একজন আদর্শ ছিল! টেন্ডুলকারের জীবনের খুব কম ব্যাপারই অজানা। তাঁর আদর্শের নামটাও তাই অনেকেরই জানা—ভিভ রিচার্ডস। ১৬ বছর বয়সে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা রাখলেও রিচার্ডসের সঙ্গে কখনো খেলা হয়নি। টেন্ডুলকারের ক্যারিয়ারে এটা এক বড় আক্ষেপ।
পুরোনো আক্ষেপটা নতুন করে জেগে উঠেছে আসলে বিশ্বকাপ প্রসঙ্গে। কদিন আগে মেলবোর্নে বিশ্বকাপের ড্র অনুষ্ঠানের পর বিশ্বকাপ স্মৃতি নিয়ে কথা বলছেন অনেক সাবেক তারকা। ২৩ বছর পর বিশ্বকাপ ফিরছে অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডে, ১৯৯২ বিশ্বকাপ নিয়েই তাই কথা হচ্ছে বেশি। স্মৃতির ডানায় টেন্ডুলকারও ফিরে গিয়েছিলেন তাঁর প্রথম বিশ্বকাপে। নয় দলের টুর্নামেন্টে সপ্তম হয়েছিল ভারত। কিন্তু ১৯ বছর বয়সী টেন্ডুলকার আলো ঠিকই ছড়িয়েছিলেন। ৭ ইনিংসে ৪৭.১৬ গড়ে করেছিলেন ২৮৩। ভারতের দুটি জয়েই ছিলেন ম্যাচসেরা।
বিশ্বমঞ্চে সেই প্রথম। বোথাম-আকরাম-হেইন্স-মিয়াঁদাদ-গুচ-মার্শাল-ইমরানদের সঙ্গে খেলার সেই অভিজ্ঞতাকে টেন্ডুলকার বলছেন ‘স্পেশাল।’ তবে প্রিয় ক্রিকেটারের সঙ্গে খেলতে না পারাটার আক্ষেপটাই ছুঁয়ে গেছে বেশি, ‘ভিভ রিচার্ডস ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্কোয়াডে ছিলেন না দেখে খুব হতাশ হয়েছিলাম। তিনিই ছিলেন আমার নায়ক, এখনো আছেন। তাঁর বিপক্ষে খেলতে না পারায় খুব খারাপ লেগেছিল।’
টেন্ডুলকারের অভিষেক ১৯৮৯ সালে, রিচার্ডস ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে শেষবার মাঠে নেমেছেন ১৯৯১ সালের মার্চে। এই সময়ে ভারত-ওয়েস্ট ইন্ডিজ মুখোমুখি হয়নি একবারও। ১৯৯২ বিশ্বকাপে একটা সুযোগ ছিল, কিন্তু রিচার্ডসের জায়গা হয়নি ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলে।
আক্ষেপটাকে এক পাশে রাখলে অবশ্য ওই বিশ্বকাপে স্মরণীয় অনেক কিছুই খুঁজে পাচ্ছেন টেন্ডুলকার, ‘অ্যালান ডোনাল্ড তখন ছিল অনেক বড় একটি নাম। সবাই আলোচনা করছিল ওকে নিয়ে। জন্টি রোডস ছিল, ইনজামামকে করা ওর রানআউট তো ছিল ওই বিশ্বকাপের হাইলাইট। দীপক প্যাটেলকে দিয়ে স্পিনে বোলিং ওপেন করানোর ধারা শুরু হলো। এদের সবার বিপক্ষে খেলার অভিজ্ঞতা ছিল দারুণ।’
বিশ্বকাপ ওই প্রথম খেললেও টেন্ডুলকারের প্রথম বিশ্বকাপ কিন্তু ১৯৯২ নয়। ১৯৮৭ বিশ্বকাপেও ছিলেন টেন্ডুলকার! দেশের মাটিতে বিশ্বকাপে বলবয় ছিলেন তখন ১৪ বছর বয়সী টেন্ডুলকার। পরের বিশ্বকাপেই গেলেন তিনি টুর্নামেন্টের অন্যতম বড় আকর্ষণ হয়ে! টেন্ডুলকারের নিজের কাছেও সেটা তখন ছিল বিস্ময়, ‘১৯৮৭ বিশ্বকাপে আমি ছিলাম বলবয়। পরের বিশ্বকাপেই খেলোয়াড় হিসেবে অংশ নেওয়া তাই ছিল আমার জন্য বড় একটা রূপান্তর। সিডনিতে সেই গ্রুপ ছবি তোলা আমার এখনো স্পষ্ট মনে পড়ে। এরপরে ডিনার হয়েছিল ডার্লিং হারবারে। একই রুমে বিশ্বের সেরা সব ক্রিকেটার, ওই অভিজ্ঞতা ছিল অসাধারণ।’
এখন সেই টেন্ডুলকারের সঙ্গে বা বিপক্ষে খেলে, তাঁকে পাশে পেয়ে ‘অসাধারণ’ অভিজ্ঞতা হয় কত ক্রিকেটারের! ওয়েবসাইট।