টুকরো টুকরো ছবি

অনন্য ৫৮৭!
ক্রিকেট ইতিহাসের ২১১৭ নম্বর টেস্ট এটি, চলছে ৭৬৮৩তম ইনিংস৷ অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি, ৫৮৭ রানের ইনিংস ক্রিকেট দেখল এই প্রথম!

কাকতাল
কাল শ্রীলঙ্কার ৫ উইকেটের চারটিই ছিল এলবিডব্লু, আগের দিনের ৫ উইকেটের দুটি৷ সব মিলিয়ে শ্রীলঙ্কার ৬ ব্যাটসম্যানকে এলবিডব্লু করেছে বাংলাদেশ৷ ইনিংসে ৬টি এলবিডব্লু করেছিল বাংলাদেশ এর আগে একবারই৷ ২০০৯ সালের সেই ম্যাচেও প্রতিপক্ষ ছিল শ্রীলঙ্কা, সেটিও এই জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামেই! কালকের মতো সেবারও ৬টি এলবিডব্লুর তিনটি করেছিলেন সাকিব৷ ইনিংসে সবচেয়ে বেশি এলবিডব্লুর রেকর্ড ৭টি৷ ২০০৩ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এর শিকার হয়েছিল জিম্বাবুয়ে, ২০০৫ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে নিউজিল্যান্ড৷

বাই ‘বাই’
নিয়মিত উইকেটকিপার না থাকলে দলকে ভুগতে হয়ই৷ তবে যতটা ভাবা হয়েছিল, মুশফিকের অনুপস্থিতি কাল ভোগাল তার চেয়েও বেশি৷ শ্রীলঙ্কা কাল ১৬ রান পেয়েছে বাই থেকে, আগের দিন পেয়েছিল ৫৷ বাই থেকে বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি রান গুনল এবারই, ২১৷ সান্ত্বনা হতে পারে বিশ্ব রেকর্ডটি, বাংলাদেশের রেকর্ড থেকে যেটি অনেক বেশি৷ ১৯৩৪ অ্যাশেজে ওভালে অস্ট্রেলিয়ার ৩২৭ রানে ইংল্যান্ড বাই থেকে উপহার দিয়েছিল ৩৭ রান৷ ইংল্যান্ডের উইকেটকিপার ছিলেন সেই টেস্টে লেসলি অ্যামিস৷ কিপার-ব্যাটসম্যান হিসেবে যাঁকে মনে করা হয় সর্বকালের সেরাদের একজন (৪৭ টেস্টে ৮ সেঞ্চুরি), তবে কিপিং নিয়ে বারবার প্রশ্ন উঠেছে ক্যারিয়ারজুড়েই৷

৫ উইকেট নেওয়া সাকিবকেও ‘নেগেটিভ’ বোলিং করতে হয়েছে!
৫ উইকেট নেওয়া সাকিবকেও ‘নেগেটিভ’ বোলিং করতে হয়েছে!

পেনাল্টি
কাল শ্রীলঙ্কার ব্যাটিংয়ের প্রতিটি মুহূর্তই বাংলাদেশের জন্য ছিল একরকম ‘পেনাল্টি৷’ আক্ষরিক অর্থে পেনাল্টিও গুনতে হলো একবার! সাকিব সাঙ্গাকারাকে একটি বল করলেন লেগ স্টাম্পের ফুট দুয়েক বাইরে৷ উইকেটে তখন শ্রীলঙ্কার শেষ জুটি, সাঙ্গাকারা রান নেওয়ার চেষ্টাও করলেন না৷ ফাইন লেগে ফিল্ডিং করে অলস ভঙ্গিতে আন্ডারআর্ম থ্রো করলেন তামিম৷ ক্লোজ ফিল্ডারের জন্য হেলমেট এনে রাখা ছিল উইকেটকিপারের পেছনে, কিপার শামসুর রহমান তাকিয়ে দেখলেন বল আস্তে আস্তে গড়িয়ে গিয়ে লাগছে সেই হেলমেটে! বাংলাদেশর যন্ত্রণার খাতায় যোগ হলো আরও ৫৷ আর টেস্ট ইতিহাসে সব দল মিলিয়ে সর্বমোট পেনাল্টি রান দাঁড়াল ২০৫৷

‘বিবিডব্লু’
ড্যারিল হার্পারের সৌজন্যে ‘এসবিব্লু’ আউট দেখেছে ক্রিকেট-বিশ্ব৷ ১৯৯৯ সালে অ্যাডিলেডে গ্লেন ম্যাকগ্রার শর্ট বল এড়াতে বসে পড়েছিলেন শচীন টেন্ডুলকার৷ কিন্তু বল নিচু হয়ে লাগে টেন্ডুলকারের গায়ে, এলবিডব্লুর আবেদনে আঙুল তুলে দেন হার্পার৷ পরে সেই আউটের নাম হয়ে যায় ‘শোল্ডার বিফোর উইকেট’৷ কাল ইমরুল কায়েস হতে পারতেন ‘বিবিডব্লু’ (ব্যাক বিফোর উইকেট)৷ নুয়ান প্রদীপের শর্ট বলে ‘ডাক’ করেছিলেন ইমরুল, বল নিচু হয়ে লাগে তাঁর পেট আর পিঠের মাঝামাঝি৷ বল লেগ স্টাম্পের বাইরে পিচ করছিল বলে অবশ্য আবেদনে সাড়া দেননি আম্পায়ার নাইজেল লং৷ তবে আউট হলে অনায়াসেই সেটির নাম হতে পারত বিবিডব্লু ৷

দুঃসাহসী সাঙ্গা
২৭০ রানে আউট হয়েছেন একবার, একবার ২৮৭ রানে৷ আরেকবার ট্রিপল সেঞ্চরির কাছে গিয়ে নার্ভাস হতেই পারতেন৷ কিন্তু কুমার সাঙ্গাকারা কাল ২৮৬ থেকে ৩০০ ছুঁলেন একটি চার ও দুটি ছয়ে! টেস্ট ইতিহাসে এটি ২৭তম ট্রিপল সেঞ্চুরি৷ তবে ছক্কায় ট্রিপল ছোঁয়ার দুঃসাহস দেখিয়েছিলেন শুধু আর একজনই৷ ২০০৪ সালে মুলতানে ২৯৫ রানে দাঁড়িয়ে সাকলায়েন মুশতাককে ছক্কা মেরেছিলেন বীরেন্দর শেবাগ৷

আম্পায়ার-ঘাতক
আম্পায়ার নাইজেল লংয়ের সঙ্গে কোনো পুরোনো বোঝাপড়া ছিল কি না কে জানে৷ ইংলিশ আম্পায়ারকে কাল আরেকটু হলেই হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছিলেন সাঙ্গাকারা! সোহাগ গাজীর বলে ডাউন দ্য উইকেট এসে সপাটে এক বুলেট চালালেন লংয়ের দিকে৷ লং শেষ মুহূর্তে সরে গেলেন কোনোমতে, তবে ভারসাম্য হারিয়ে প্রপাত ধরিণতল হতেও বসেছিলেন৷ এখানেও শেষ মুহূর্তে পড়িমরি করে হাত মাটিতে ফেলে বাঁচালেন নিজেকে৷

নীরব সঙ্গী
শেষ জুটিতে এক পাশে উইকেট আগলে রাখছিলেন প্রদীপ, আরেক পাশে বোলারদের কচুকাটা করছিলেন সাঙ্গাকারা৷ জুটির যখন পঞ্চাশ হলো, প্রদীপের রান তখন শূন্য! মনে করিয়ে দিল আরেকটি জুটির কথা৷ ১৯৯৬ সালে সিঙ্গাপুরে ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে শ্রীলঙ্কার ৭০ রানের উদ্বোধনী জুটিতে রুমেশ কালুভিতারানার অবদান ছিল শূন্য! আরেক পাশে ১৭ বলে ফিফটির বিশ্ব রেকর্ড গড়ে সনাৎ জয়াসুরিয়া করেছিলেন ২৮ বলে ৭৬৷