তামিমের সাফল্যের মূলে 'প্রিন্সেস'!

পরিবারে নতুন অতিথি এসেছে। টেস্টের আগে সেই অতিথি ‘প্রিন্সেস’-এর মুখও দর্শন করে এসেছেন তামিম ইকবাল। আদর করেছেন অতিথিকে। পরে ব্যাট করতে নেমেই ঘরের মাঠে দেখা পেলেন প্রথম সেঞ্চুরির। তাও টানা দ্বিতীয় টেস্টে। খুলনার পর চট্টগ্রামেও তামিমের ইনিংস থামল ১০৯ রানে।
এই বাঁহাতি ওপেনারের সাফল্যের মূলে কি তাহলে ওই প্রিন্সেস? তামিমের মা নুসরাত ইকবালের তো এমনই দাবি, ‘আমাদের ঘরে আসা প্রিন্সেস এখন সবকিছু বদলে দিচ্ছে। আমার তো মনে হয়, তামিমের সাফল্যেও ওর অবদান রয়েছে। অবশেষে ঘরের মাঠে সেঞ্চুরি পেল। এর আগে খুলনায়ও সেঞ্চুরি।’
এই প্রিন্সেসের নাম আনাইয়া নামিরা খান। নামিরা শব্দের অর্থ প্রিন্সেস বা রাজকন্যা। তামিমের বড় ভাই নাফিস ইকবালের কন্যা। জন্ম গত ২৪ অক্টোবর। জন্মের পর তামিম তাকে দেখেননি। চট্টগ্রামে এসে তাই ছুটলেন কাজীর দেউড়ির পৈতৃক বাড়িতে। সেখানে গিয়ে নতুন অতিথিকে দেখার পাশাপাশি বাবা ইকবাল খানের কবর জিয়ারত করলেন। টেস্টের আগে দুই দিনই গেছেন বাড়িতে।
তবে ঘরের মাঠে সেঞ্চুরি করলেও যথারীতি তাঁর মা নুসরাত ইকবাল তা দেখেননি। মাঠে তো যানইনি। টিভিতেও দেখেননি। তামিমের ব্যাটিং তিনি দেখেন না আগে থেকেই। কাল বিকেলে বললেন, ‘আমি তো আগে থেকেই তামিমের ব্যাটিং দেখি না। কেবল আল্লাহর কাছে শোকরিয়া করি। নামাজ পড়ে দোয়া করি। তবে ৫০ করার পর আমাকে অনেকেই ফোন করেছেন। এরপর সেঞ্চুরি হয়ে যাওয়ার পর আবার ফোন আসতে থাকে।’
এর আগে টেস্টে ৫টি সেঞ্চুরি ছিল তামিমের। তবে কোনোটিই চট্টগ্রামে নয়। একবার কাছাকাছি গিয়েও হয়নি। ২০১০ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওই টেস্টে আউট হয়ে গিয়েছিলেন ৮৬ রান করে। এবার সেঞ্চুরি পাওয়ায় খান পরিবারে তাই আনন্দের বন্যা। তামিমের মা বলেন, ‘আমরা সবাই খুব খুশি। তামিমের চাচাতো ভাইয়েরা সবাই মাঠে গেছে। নাফিস ঢাকায়। কথা হয়েছে তার সঙ্গে। সবাই খুশি। চট্টগ্রামের মানুষ তামিমকে খুব ভালোবাসে। আমার মনে হয় সবাই-ই খুব খুশি।’
তামিমদের পরিবারের আরও দুই টেস্ট ক্রিকেটার বড় ভাই নাফিস ইকবাল ও চাচা আকরাম খান ছিলেন ঢাকায়। দুজনই টিভিতে তামিমের ব্যাটিং দেখেছেন। তামিমের বাবা প্রয়াত ইকবাল খান স্বাধীনতার পর চট্টগ্রাম লিগে প্রথম সেঞ্চুরি করেছিলেন স্টার ক্লাবের হয়ে। তামিমের সেঞ্চুরিতে আকরামের মনে ফিরে এল ওই স্মৃতি, ‘আমি স্টেডিয়ামে বসেই ভাইয়ার সেঞ্চুরি দেখেছিলাম। চট্টগ্রামে তামিমের সেঞ্চুরিটা মাঠে বসে না দেখতে পারলেও টেলিভিশনে দেখেছি। ঘরের মাঠে ও সেঞ্চুরি পাওয়াতে আমি খুবই খুশি।’
তবে ঘরের মাঠে তামিমের শতক দেখা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন স্থানীয় অনেক দর্শক। চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম দিনে স্টেডিয়ামের ভেতরে যত দর্শক ছিল, তার চেয়ে বেশি ছিল বাইরে। টিকিটের জন্য তাঁরা হন্যে হয়ে ঘুরেছেন। জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে কোনো টিকিট কাউন্টার ছিল না। একটি কাউন্টার করা হয়েছে এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে। ভেন্যুতে এসে টিকিট না পেয়ে টিকেটের খোঁজে দর্শকদের তাই সেখানে যেতে হয়েছে। টিকিট নিয়ে ফিরতে ফিরতে তামিমের সেঞ্চুরি দেখা হয়নি অনেকের।