হঠাৎই ফিরে এলেন 'ব্যাটসম্যান' রুবেল

ফিফটি না পাওয়ায় নিশ্চয়ই আফসোস আছে রুবেল হোসেনের? তবে কাল দিন শেষের কথাবার্তা শুনে মনে হলো, আফসোসের পরিমাণটা খুব বেশি নয়। চারটা দুর্দান্ত ছক্কাসহ ও রকম ঝোড়ো ইনিংস খেলতে পেরেছেন এবং তাতে বাংলাদেশের রানটা পাঁচ শ পেরিয়েছে, তাতেই অনেক খুশি ব্যাট হাতে হঠাৎই নায়ক হয়ে ওঠা রুবেল।
‘ব্যাটিংয়ে মজা সব সময়ই লাগে। যদি ৪০-৪৫ রান করা যায়, সেটার মজাই অন্য রকম। আমার খুবই ভালো লাগছে’—দিন শেষে বলছিলেন ৪৪ বলে ৪৫ রান করা রুবেল। জাতীয় দলের হয়ে টেস্ট-ওয়ানডে দুটোতেই এর আগে তাঁর সর্বোচ্চ রান ছিল ১৭। তাই বলে এমন ব্যাটিং এবারই প্রথম নয়। তা ছাড়া ক্রিকেটার জীবনের শুরুর দিকে তো ছিলেন ওপেনারই, ‘বাগেরহাট লিগে আমি নিয়মিত ওপেন করতাম। খুলনা প্রিমিয়ার লিগে দু-তিনটি ম্যাচে ওপেন করেছি। এ ছাড়া ঢাকায় তৃতীয় বিভাগ ক্রিকেটেও ওপেনার ছিলাম।’
পেসার রুবেলকে এখনো ব্যাটসম্যান হিসেবে মানতে পারছেন না? তাহলে বাড়তি তথ্য হিসেবে জেনে নিতে পারেন, বাগেরহাটের স্কুল টুর্নামেন্টে তাঁর সেঞ্চুরিও আছে। ফিফটি আছে খুলনা প্রিমিয়ার লিগ আর ঢাকা তৃতীয় বিভাগ ক্রিকেটে লিগেও। হঠাৎই ব্যাটসম্যান সত্তা ফিরে পাওয়ার পেছনে রুবেল কৃতিত্ব দিচ্ছেন জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের উইকেটকে, ‘আমি কিছু শট খেলেছি। টাইমিং হয়েছে এই আর কি। আসলে উইকেটটা ব্যাটিংয়ের জন্য খুব ভালো ছিল। ব্যাট চালাচ্ছিলাম, লাগছিল।’
রুবেল সবচেয়ে বেশি চড়াও হয়েছেন জিম্বাবুয়ের খণ্ডকালীন অফ স্পিনার সিকান্দার রাজার ওপর। সিকান্দারের যে ১৬টি বল খেলেছেন, দুই ছক্কাসহ তাতে নিয়েছেন ২৫ রান। দিনের খেলা শেষ হওয়ার পরও সেটা যেন পোড়াচ্ছিল পাকিস্তান বংশোদ্ভূত এই জিম্বাবুইয়ানকে, ‘রুবেল তো আমাকেই সবচেয়ে বেশি মারছিল, সবচেয়ে বেশি যন্ত্রণায় আমিই ছিলাম।’
বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসে জিম্বাবুয়ের হয়ে সর্বোচ্চ ৪৭ ওভার বল করেছেন নাতসাই মুশাঙ্গুয়ে। এরপরই আছে রাজার ৩৬ ওভার। প্রথম দিন করেছিলেন ২১ ওভার, কাল আরও ১৫ ওভার। ৩ উইকেট পেলেও এত ওভার বল করে তিনি নিজেই অবাক। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তো বটেই, সিনিয়র কোনো ধরনের ক্রিকেটেই আগে এত ওভার বোলিং করেননি। কাল দিন শেষের সংবাদ সম্মেলনে প্রসঙ্গটি তুলতেই মজা করে বললেন, ‘এত ওভার বোলিং আরও করতে হলে আগে আগেই অবসরে চলে যাব।’
বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসটা কাল গেছে চা-বিরতি পর্যন্ত। সংবাদ সম্মেলনে রুবেল জানালেন, টেস্টের দ্বিতীয় দিনে বাংলাদেশ দলেরও লক্ষ্য ছিল এটাই। দিন শেষে জিম্বাবুয়ে মাত্র ১ উইকেট হারিয়ে ১১৩ রান করে ফেললেও রুবেলের দাবি, টেস্টে এখনো ভালো অবস্থানে আছে বাংলাদেশই, ‘আমরা খুব ভালো অবস্থায় আছি। ভালো একটা স্কোর হয়েছে। এই উইকেটে শুরুতে একটু রান হবেই। কাল (আজ) সকাল সকাল দ্রুত কিছু উইকেট নিতে হবে। মূল কথা হলো, আমাদের ধৈর্য ধরে বল করে যেতে হবে। এই উইকেটে উইকেট পাওয়া খুব কঠিন।’
সেটা হলে টেস্টটা শেষ পর্যন্ত ড্রয়ের দিকেও যেতে পারে। তবে সিকান্দার রাজা এখনো মনে করছেন, এই টেস্ট ফলাফল দেখবে, ‘আমার মনে হয় এই টেস্টে ফলাফল হবে এবং সেটাকে আমাদের দিকে নিতে হবে। আমরা যতটা সম্ভব জেতার জন্যই খেলছি।’